ঢাকা , মঙ্গলবার, ২৬ মার্চ ২০২৪, ১১ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম :
রমজানে মাধ্যমিক স্কুল খোলা থাকবে ১৫ দিন, প্রাথমিক স্কুল ১০ দিন খালেদা জিয়াকে হাসপাতালে নেওয়া হচ্ছে টেকনাফ সীমান্তের হোয়াইক্যং এলাকা দিয়ে আজ অস্ত্র নিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে মিয়ানমারের সেনা সাদ সাহেব রুজু করার পর দেওবন্দের মাসআলা খতম হয়ে গেছে : মাওলানা আরশাদ মাদানী চলছে বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্বের দ্বিতীয় দিনের বয়ান পুলিশ সদস্যসহ বিশ্ব ইজতেমায় ৭ জনের মৃত্যু বর্তমান সরকারের সঙ্গে সব দেশ কাজ করতে চায়: পররাষ্ট্রমন্ত্রী জয়পুরহাটে স্কুলছাত্র হত্যায় ১১ জনের মৃত্যুদণ্ড দ্বাদশ জাতীয় সংসদের প্রথম অধিবেশন শুরু ‘শরীফ থেকে শরীফা’ গল্প পর্যালোচনায় কমিটি গঠন করলো শিক্ষা মন্ত্রণালয়

উঁচু পাহাড়ে ‘ইন্টারনেট হাউস’

  • নিউজ ডেস্ক
  • প্রকাশিত : ১০:০৮ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৮ জুন ২০২০
  • ১২৮৮ পঠিত

দুর্গম এলাকায় মুঠোফোনের নেটওয়ার্ক পাওয়া যায় না। নেই যানবাহন চলাচলেরও কোনো রাস্তা। জনপদটি যেন বহির্বিশ্ব থেকে একরকম বিচ্ছিন্ন। তবে সেখানকার দুটি গ্রামের পাশে অবস্থিত ৪০০ ফুট উঁচু দুটো পাহাড়ের চূড়ায় উঠলে পাওয়া যায় মুঠোফোনের নেটওয়ার্ক। ওই দুটি গ্রামের শতাধিক মানুষ ওই দুই পাহাড়ে উঠে মুঠোফোনে স্বজনদের সঙ্গে কথা বলেন। ব্যবহার করেন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমও। পাহাড়চূড়ায় এ জন্য তৈরি হয়েছে বাঁশ ও শণের মাচাং ঘর। এলাকার বাসিন্দাদের কাছে ‘ইন্টারনেট হাউস’ নামে পরিচিত এমন ঘরগুলো।

দুর্গম নাড়াইছড়ির ৪০০ ফুট উঁচু দুটি পাহাড়ের চূড়ায় বানানো ইন্টারনেট হাউসে গিয়ে মুঠোফোনে কথা বলেন গ্রামবাসী।

খাগড়াছড়ির দীঘিনালার বাবুছড়া ইউনিয়নের ভারত সীমান্তবর্তী দুর্গম নাড়াইছড়িতে এই ইন্টারনেট হাউসের দেখা মিলবে। উপজেলা সদর থেকে ৬০ কিলোমিটার দূরে এ এলাকায় বর্ষা মৌসুমে মাইনী নদী দিয়ে ইঞ্জিনচালিত নৌকায় যাতায়াত করতে হয়। আর শুকনো মৌসুমে ছড়া ও গিরিপথই একমাত্র যোগাযোগের ভরসা।

নাড়াইছড়ি এলাকার কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ওই এলাকায় ২০টি গ্রামে পাঁচ শতাধিক পরিবারের বসবাস। বেশির ভাগ গ্রামের মানুষই মুঠোফোনসেবাবঞ্চিত। তবে ওই এলাকার অনিল জীবন কার্বারিপাড়ার পাশে ৪০০ ফুট ও কুকিছড়া ঘেঁষে ৪৫০ ফুট উঁচু পাহাড়ে নেটওয়ার্ক পাওয়া যায়। সেখানে গ্রামবাসী নিজেরা বাঁশ ও শণ দিয়ে ইন্টারনেট হাউস তৈরি করেছেন।

দুই গ্রামের দুই শ মানুষ নিজেদের প্রয়োজনে পাহাড়ে উঠে ইন্টারনেট হাউস থেকে মুঠোফোনে কথা বলেন। আত্মীয়স্বজনের সঙ্গে যোগাযোগ রাখেন। তবে কষ্টটা কিন্তু কম নয়। অনিল জীবন কার্বারিপাড়া থেকে ইন্টারনেট হাউসে যেতে হাঁটতে হয় চার কিলোমিটার। আর কুকিছড়ার ইন্টারনেট হাউসে যেতে পাড়ি দিতে হয় ১০ কিলোমিটার গিরিপথ।

শুক্রবার দুপুরে কুকিছড়ার ইন্টারনেট হাউস থেকে প্রথম আলোর সঙ্গে কথা বলেন অনিল জীবন কার্বারিপাড়ার বাসিন্দা ও রাঙামাটির সরকারি কলেজের বিএসসি চতুর্থ বর্ষের ছাত্র অনন্ত চাকমা। তিনি বলেন, কুকিছড়া ও অনিল জীবন কার্বারিপাড়ার পাহাড়ে ২০১৯ সালে তৈরি হয় ইন্টারনেট হাউস। এ দুই পাহাড়ের ইন্টারনেট হাউস এখন দুই পাড়ার দুই শতাধিক মানুষের মুঠোফোনে কথা বলার ভরসাস্থল।

অনন্ত চাকমা আরও বলেন, এমনিতে নাড়াইছড়ি এলাকায় যাতায়াতের কোনো ব্যবস্থা নেই। আবার মুঠোফোনের নেটওয়ার্কও নেই। এখানকার সর্বশেষ টাওয়ার জারুলছড়িতে, যা নাড়াইছড়ি থেকে ৪০ কিলোমিটার দূরে। এই পাহাড় দুটিতে নেটওয়ার্ক না পেলে আত্মীয়স্বজনের সঙ্গে কথা বলা ও যোগাযোগ রাখা কখনো সম্ভব হতো না।

Tag :
জনপ্রিয়

রমজানে মাধ্যমিক স্কুল খোলা থাকবে ১৫ দিন, প্রাথমিক স্কুল ১০ দিন

উঁচু পাহাড়ে ‘ইন্টারনেট হাউস’

প্রকাশিত : ১০:০৮ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৮ জুন ২০২০

দুর্গম এলাকায় মুঠোফোনের নেটওয়ার্ক পাওয়া যায় না। নেই যানবাহন চলাচলেরও কোনো রাস্তা। জনপদটি যেন বহির্বিশ্ব থেকে একরকম বিচ্ছিন্ন। তবে সেখানকার দুটি গ্রামের পাশে অবস্থিত ৪০০ ফুট উঁচু দুটো পাহাড়ের চূড়ায় উঠলে পাওয়া যায় মুঠোফোনের নেটওয়ার্ক। ওই দুটি গ্রামের শতাধিক মানুষ ওই দুই পাহাড়ে উঠে মুঠোফোনে স্বজনদের সঙ্গে কথা বলেন। ব্যবহার করেন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমও। পাহাড়চূড়ায় এ জন্য তৈরি হয়েছে বাঁশ ও শণের মাচাং ঘর। এলাকার বাসিন্দাদের কাছে ‘ইন্টারনেট হাউস’ নামে পরিচিত এমন ঘরগুলো।

দুর্গম নাড়াইছড়ির ৪০০ ফুট উঁচু দুটি পাহাড়ের চূড়ায় বানানো ইন্টারনেট হাউসে গিয়ে মুঠোফোনে কথা বলেন গ্রামবাসী।

খাগড়াছড়ির দীঘিনালার বাবুছড়া ইউনিয়নের ভারত সীমান্তবর্তী দুর্গম নাড়াইছড়িতে এই ইন্টারনেট হাউসের দেখা মিলবে। উপজেলা সদর থেকে ৬০ কিলোমিটার দূরে এ এলাকায় বর্ষা মৌসুমে মাইনী নদী দিয়ে ইঞ্জিনচালিত নৌকায় যাতায়াত করতে হয়। আর শুকনো মৌসুমে ছড়া ও গিরিপথই একমাত্র যোগাযোগের ভরসা।

নাড়াইছড়ি এলাকার কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ওই এলাকায় ২০টি গ্রামে পাঁচ শতাধিক পরিবারের বসবাস। বেশির ভাগ গ্রামের মানুষই মুঠোফোনসেবাবঞ্চিত। তবে ওই এলাকার অনিল জীবন কার্বারিপাড়ার পাশে ৪০০ ফুট ও কুকিছড়া ঘেঁষে ৪৫০ ফুট উঁচু পাহাড়ে নেটওয়ার্ক পাওয়া যায়। সেখানে গ্রামবাসী নিজেরা বাঁশ ও শণ দিয়ে ইন্টারনেট হাউস তৈরি করেছেন।

দুই গ্রামের দুই শ মানুষ নিজেদের প্রয়োজনে পাহাড়ে উঠে ইন্টারনেট হাউস থেকে মুঠোফোনে কথা বলেন। আত্মীয়স্বজনের সঙ্গে যোগাযোগ রাখেন। তবে কষ্টটা কিন্তু কম নয়। অনিল জীবন কার্বারিপাড়া থেকে ইন্টারনেট হাউসে যেতে হাঁটতে হয় চার কিলোমিটার। আর কুকিছড়ার ইন্টারনেট হাউসে যেতে পাড়ি দিতে হয় ১০ কিলোমিটার গিরিপথ।

শুক্রবার দুপুরে কুকিছড়ার ইন্টারনেট হাউস থেকে প্রথম আলোর সঙ্গে কথা বলেন অনিল জীবন কার্বারিপাড়ার বাসিন্দা ও রাঙামাটির সরকারি কলেজের বিএসসি চতুর্থ বর্ষের ছাত্র অনন্ত চাকমা। তিনি বলেন, কুকিছড়া ও অনিল জীবন কার্বারিপাড়ার পাহাড়ে ২০১৯ সালে তৈরি হয় ইন্টারনেট হাউস। এ দুই পাহাড়ের ইন্টারনেট হাউস এখন দুই পাড়ার দুই শতাধিক মানুষের মুঠোফোনে কথা বলার ভরসাস্থল।

অনন্ত চাকমা আরও বলেন, এমনিতে নাড়াইছড়ি এলাকায় যাতায়াতের কোনো ব্যবস্থা নেই। আবার মুঠোফোনের নেটওয়ার্কও নেই। এখানকার সর্বশেষ টাওয়ার জারুলছড়িতে, যা নাড়াইছড়ি থেকে ৪০ কিলোমিটার দূরে। এই পাহাড় দুটিতে নেটওয়ার্ক না পেলে আত্মীয়স্বজনের সঙ্গে কথা বলা ও যোগাযোগ রাখা কখনো সম্ভব হতো না।