ঢাকা , মঙ্গলবার, ১৯ মার্চ ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম :
রমজানে মাধ্যমিক স্কুল খোলা থাকবে ১৫ দিন, প্রাথমিক স্কুল ১০ দিন খালেদা জিয়াকে হাসপাতালে নেওয়া হচ্ছে টেকনাফ সীমান্তের হোয়াইক্যং এলাকা দিয়ে আজ অস্ত্র নিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে মিয়ানমারের সেনা সাদ সাহেব রুজু করার পর দেওবন্দের মাসআলা খতম হয়ে গেছে : মাওলানা আরশাদ মাদানী চলছে বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্বের দ্বিতীয় দিনের বয়ান পুলিশ সদস্যসহ বিশ্ব ইজতেমায় ৭ জনের মৃত্যু বর্তমান সরকারের সঙ্গে সব দেশ কাজ করতে চায়: পররাষ্ট্রমন্ত্রী জয়পুরহাটে স্কুলছাত্র হত্যায় ১১ জনের মৃত্যুদণ্ড দ্বাদশ জাতীয় সংসদের প্রথম অধিবেশন শুরু ‘শরীফ থেকে শরীফা’ গল্প পর্যালোচনায় কমিটি গঠন করলো শিক্ষা মন্ত্রণালয়

বড় ময়দানের সেই প্রাণচাঞ্চল্য এবারও করোনায় ম্লান

  • নিউজ ডেস্ক
  • প্রকাশিত : ১০:৫৭ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৩১ জুলাই ২০২০
  • ১৩৩৪ পঠিত

মাঠে থাকা ময়লা পরিষ্কার করা থেকে শুরু করে ডেকোরেটরের সাজসজ্জা, ওয়াচ টাওয়ার বসানো, ঈদগাহ মিনারে রং করাসহ নানা কাজ। ঈদের সপ্তাহখানেক আগে থেকে চলত নানা রকম প্রস্তুতি। দেশের বৃহত্তম ঈদগাহ মাঠ হিসেবে পরিচিত দিনাজপুর গোড়-এ-শহীদ বড় ময়দানে এবার সেই কর্মচাঞ্চল্য নেই। করোনাভাইরাসের সংক্রমণ এড়াতে মাঠে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হবে না। মসজিদে ঈদুল আজহার নামাজ আদায় করবেন মুসল্লিরা।

জেলা শহরের প্রাণকেন্দ্রে ২২ একর জমি জুড়ে গোড়-এ-শহীদ ময়দান। ২০১৫ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত প্রায় ৩ কোটি ৮০ লাখ টাকা ব্যয়ে ৫২ গম্বুজবিশিষ্ট ঈদগাহ মিনার নির্মাণ করা হয়। তারপর ৬টি ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে এখানে। প্রতিবার ঈদে লাখো মুসল্লি নামাজ আদায় করেছেন। করোনা পরিস্থিতিতে সর্বশেষ চলতি বছরের ২৫ মে ঈদুল ফিতরের নামাজ আদায় না করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে স্থানীয় প্রশাসন।

৫২ গম্বুজবিশিষ্ট ঈদগাহ মিনারের দুই পাশে ৬০ ফুট উচ্চতায় রয়েছে দুটি মিনার। মাঝের দুটি মিনারের উচ্চতা ৫০ ফুট। আর প্রধান মিনারের উচ্চতা ৫৫ ফুট। এসব মিনার আর গম্বুজের প্রস্থ ৫১৬ ফুট। মিনারের দুপাশে রয়েছে মুসল্লিদের অজুর ব্যবস্থা। প্রতিটি গম্বুজ ও মিনারে রয়েছে বৈদ্যুতিক বাতি।

বৃহস্পতিবার বিকেলে গোড়-এ-শহীদ ময়দানে গিয়ে দেখা যায়, মাঠের ভেতরে পানি জমেছে। তার মধ্যে বল নিয়ে মেতেছে একদল শিশু-কিশোর। করোনাকালীন সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করতে শহরের বাহাদুর বাজার থেকে মাছ-মাংস-মুরগি, কাঁচাবাজারসহ আম-লিচুর আড়তের দোকানগুলোকে স্থানান্তর করা হয়েছে মাঠের দক্ষিণ-পশ্চিম প্রান্তে।

ঈদগাহের মিনারের পাদদেশে জনাকয়েক তরুণ আড্ডায় মশগুল। তাঁদের মধ্যে থেকে এক তরুণ বললেন, ‘মিনারটা হওয়ার পর থেকে কয়েক বছর ধরে ঈদে অনেক মুসল্লি এখানে নামাজ আদায় করছে। রোজার ঈদেও আসতে পারিনি। এবারও পারব না। খুবই ভালো লাগে একসঙ্গে এত লোকের নামাজ আদায় করা দেখে।’

দিনাজপুর পৌরসভার মেয়র সৈয়দ জাহাঙ্গীর আলম বলেন, স্বাস্থ্যবিধি ও সামাজিক দূরত্বের বিষয় বিবেচনায় নিয়ে ঈদুল আজহার নামাজ মাঠে আদায় করা হবে না। তবে নিজ নিজ এলাকার মসজিদে কয়েকটি জামাতের মাধ্যমে স্বাস্থ্যবিধি মেনে নামাজ আদায়ের জন্য পরামর্শ দিয়ে প্রচার-প্রচারণা চালানো হয়েছে। পশুর কোরবানির সঙ্গে যুক্ত সবাইকে মাস্ক ব্যবহার ও কোরবানির বর্জ্য দ্রুততার সঙ্গে নির্দিষ্ট স্থানে ফেলার আহ্বান জানান তিনি।

দীর্ঘ ২০ বছর ধরে গোড়-এ-শহীদ ময়দানে ঈদের নামাজে ইমামের দায়িত্ব পালন করে আসছেন মাওলানা শামসুল হক কাসেমী। কয়েক দিন আগে তাঁর করোনা শনাক্ত হয়েছে। মুঠোফোনে তিনি প্রথম আলোকে বলেন, বায়তুল হারামে নামাজ আদায় করার চাইতেও উত্তম খোলা মাঠে ঈদের নামাজ আদায় করা। করোনার কারণে গোড়-এ-শহীদ ময়দানে পরপর দুটি ঈদের নামাজ আদায় করা হচ্ছে না। স্বাভাবিকভাবেই খারাপ লাগছে। করোনাভাইরাস মানবজাতির জন্য আল্লাহ তালার বিশেষ পরীক্ষা বলে মন্তব্য করেন তিনি।

Tag :
জনপ্রিয়

রমজানে মাধ্যমিক স্কুল খোলা থাকবে ১৫ দিন, প্রাথমিক স্কুল ১০ দিন

বড় ময়দানের সেই প্রাণচাঞ্চল্য এবারও করোনায় ম্লান

প্রকাশিত : ১০:৫৭ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৩১ জুলাই ২০২০

মাঠে থাকা ময়লা পরিষ্কার করা থেকে শুরু করে ডেকোরেটরের সাজসজ্জা, ওয়াচ টাওয়ার বসানো, ঈদগাহ মিনারে রং করাসহ নানা কাজ। ঈদের সপ্তাহখানেক আগে থেকে চলত নানা রকম প্রস্তুতি। দেশের বৃহত্তম ঈদগাহ মাঠ হিসেবে পরিচিত দিনাজপুর গোড়-এ-শহীদ বড় ময়দানে এবার সেই কর্মচাঞ্চল্য নেই। করোনাভাইরাসের সংক্রমণ এড়াতে মাঠে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হবে না। মসজিদে ঈদুল আজহার নামাজ আদায় করবেন মুসল্লিরা।

জেলা শহরের প্রাণকেন্দ্রে ২২ একর জমি জুড়ে গোড়-এ-শহীদ ময়দান। ২০১৫ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত প্রায় ৩ কোটি ৮০ লাখ টাকা ব্যয়ে ৫২ গম্বুজবিশিষ্ট ঈদগাহ মিনার নির্মাণ করা হয়। তারপর ৬টি ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে এখানে। প্রতিবার ঈদে লাখো মুসল্লি নামাজ আদায় করেছেন। করোনা পরিস্থিতিতে সর্বশেষ চলতি বছরের ২৫ মে ঈদুল ফিতরের নামাজ আদায় না করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে স্থানীয় প্রশাসন।

৫২ গম্বুজবিশিষ্ট ঈদগাহ মিনারের দুই পাশে ৬০ ফুট উচ্চতায় রয়েছে দুটি মিনার। মাঝের দুটি মিনারের উচ্চতা ৫০ ফুট। আর প্রধান মিনারের উচ্চতা ৫৫ ফুট। এসব মিনার আর গম্বুজের প্রস্থ ৫১৬ ফুট। মিনারের দুপাশে রয়েছে মুসল্লিদের অজুর ব্যবস্থা। প্রতিটি গম্বুজ ও মিনারে রয়েছে বৈদ্যুতিক বাতি।

বৃহস্পতিবার বিকেলে গোড়-এ-শহীদ ময়দানে গিয়ে দেখা যায়, মাঠের ভেতরে পানি জমেছে। তার মধ্যে বল নিয়ে মেতেছে একদল শিশু-কিশোর। করোনাকালীন সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করতে শহরের বাহাদুর বাজার থেকে মাছ-মাংস-মুরগি, কাঁচাবাজারসহ আম-লিচুর আড়তের দোকানগুলোকে স্থানান্তর করা হয়েছে মাঠের দক্ষিণ-পশ্চিম প্রান্তে।

ঈদগাহের মিনারের পাদদেশে জনাকয়েক তরুণ আড্ডায় মশগুল। তাঁদের মধ্যে থেকে এক তরুণ বললেন, ‘মিনারটা হওয়ার পর থেকে কয়েক বছর ধরে ঈদে অনেক মুসল্লি এখানে নামাজ আদায় করছে। রোজার ঈদেও আসতে পারিনি। এবারও পারব না। খুবই ভালো লাগে একসঙ্গে এত লোকের নামাজ আদায় করা দেখে।’

দিনাজপুর পৌরসভার মেয়র সৈয়দ জাহাঙ্গীর আলম বলেন, স্বাস্থ্যবিধি ও সামাজিক দূরত্বের বিষয় বিবেচনায় নিয়ে ঈদুল আজহার নামাজ মাঠে আদায় করা হবে না। তবে নিজ নিজ এলাকার মসজিদে কয়েকটি জামাতের মাধ্যমে স্বাস্থ্যবিধি মেনে নামাজ আদায়ের জন্য পরামর্শ দিয়ে প্রচার-প্রচারণা চালানো হয়েছে। পশুর কোরবানির সঙ্গে যুক্ত সবাইকে মাস্ক ব্যবহার ও কোরবানির বর্জ্য দ্রুততার সঙ্গে নির্দিষ্ট স্থানে ফেলার আহ্বান জানান তিনি।

দীর্ঘ ২০ বছর ধরে গোড়-এ-শহীদ ময়দানে ঈদের নামাজে ইমামের দায়িত্ব পালন করে আসছেন মাওলানা শামসুল হক কাসেমী। কয়েক দিন আগে তাঁর করোনা শনাক্ত হয়েছে। মুঠোফোনে তিনি প্রথম আলোকে বলেন, বায়তুল হারামে নামাজ আদায় করার চাইতেও উত্তম খোলা মাঠে ঈদের নামাজ আদায় করা। করোনার কারণে গোড়-এ-শহীদ ময়দানে পরপর দুটি ঈদের নামাজ আদায় করা হচ্ছে না। স্বাভাবিকভাবেই খারাপ লাগছে। করোনাভাইরাস মানবজাতির জন্য আল্লাহ তালার বিশেষ পরীক্ষা বলে মন্তব্য করেন তিনি।