ঢাকা , রবিবার, ০৪ মে ২০২৫, ২১ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম :
৩ এপ্রিল ছুটি ঘোষণা করে প্রজ্ঞাপন জারি বাংলাদেশ সাবমেরিন কেব্‌ল কোম্পানির সব ধরনের ইন্টারনেটের দাম কমছে ১০ শতাংশ। রমজানে মাধ্যমিক স্কুল খোলা থাকবে ১৫ দিন, প্রাথমিক স্কুল ১০ দিন খালেদা জিয়াকে হাসপাতালে নেওয়া হচ্ছে টেকনাফ সীমান্তের হোয়াইক্যং এলাকা দিয়ে আজ অস্ত্র নিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে মিয়ানমারের সেনা সাদ সাহেব রুজু করার পর দেওবন্দের মাসআলা খতম হয়ে গেছে : মাওলানা আরশাদ মাদানী চলছে বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্বের দ্বিতীয় দিনের বয়ান পুলিশ সদস্যসহ বিশ্ব ইজতেমায় ৭ জনের মৃত্যু বর্তমান সরকারের সঙ্গে সব দেশ কাজ করতে চায়: পররাষ্ট্রমন্ত্রী জয়পুরহাটে স্কুলছাত্র হত্যায় ১১ জনের মৃত্যুদণ্ড

করোনার মতো রোগ বাড়বে যে কারণে

  • নিউজ ডেস্ক
  • প্রকাশিত : ০৫:২২ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৭ জুলাই ২০২০
  • ৬৯১ পঠিত

প্রাণী থেকে মানুষের শরীরে যায়—এমন জুনোটিক রোগ বাড়ছে। জাতিসংঘের বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করেছেন, বন্য প্রাণীদের সুরক্ষায় পদক্ষেপ না নিলে ও পরিবেশ রক্ষা না করলে এমন রোগ বাড়তেই থাকবে। কোভিড–১৯-এর মতো রোগগুলোর প্রাদুর্ভাবের জন্য তাঁরা প্রাণিজ আমিষের অতি চাহিদা, ভঙ্গুর কৃষিচর্চা ও জলবায়ু পরিবর্তনকে দায়ী করেছেন।

বিবিসি অনলাইনের খবরে জানানো হয়, জাতিসংঘ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জুনোটিক রোগ অবহেলা করলে বছরে ২০ লাখ মানুষ মারা যেতে পারে।

শুধু কোভিড–১৯ নয় ইবোলা, ওয়েস্ট নাইল ও সার্সও প্রাণী থেকে মানুষের শরীরে আসা জুনোটিক রোগ। এগুলো প্রথমে প্রাণীর শরীরে সংক্রমিত হয়। পরে সেখান থেকে মানুষের শরীরে ছড়িয়ে পড়ে।

জাতিসংঘের এনভায়রনমেন্ট প্রোগ্রাম অ্যান্ড দ্য ইন্টারন্যাশনাল লাইভস্টক রিসার্চ ইনস্টিটিউটের প্রতিবেদন বলছে, প্রাণী থেকে মানুষের শরীরে এসব রোগ এমনি এমনি আসেনি। প্রাকৃতিক পরিবেশের অপব্যবহার—যেমন ভূমির অবক্ষয়, বন্য প্রাণীর ক্ষতি করা, প্রাকৃতিক সম্পদ আহরণ ও জলবায়ু পরিবর্তন এসবের জন্য দায়ী।

জাতিসংঘের আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল ও পরিবেশ কর্মসূচির নির্বাহী পরিচালক ইনগার অ্যান্ডারসন বলেন, ‘গত শতাব্দীতে আমরা কমপক্ষে ছয়টি বড় রোগের প্রাদুর্ভাব দেখেছি।’ তিনি আরও বলেন, বিগত ২০ বছরে ও কোভিড–১৯ সংক্রমণের আগে প্রাণীবাহিত জুনোটিক রোগের কারণে ১০ হাজার কোটি ডলারের অর্থনৈতিক ক্ষতি হয়েছে।

ইনগার অ্যান্ডারসন বলেন, অঞ্চলভিত্তিক জুনোটিক রোগ (যেমন অ্যানথ্রাক্স, বোভিন টিবি ও র‌্যাবিস) অবহেলা করায় প্রতিবছর নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশগুলোয় ২০ লাখ মানুষ মারা যায়।

অ্যান্ডারসন আরও বলেন, আমিষ খাবারের জন্য প্রাণীদের ওপর বেশি নির্ভরতার কারণে জুনোটিক রোগের প্রাদুর্ভাব ঘটে। এ কারণে গত ৫০ বছরে মাংসের উৎপাদন ২৬০ ভাগ বেড়েছে।

ইনগার অ্যান্ডারসন বলেন, ‘আমরা আমাদের বনভূমি কৃষিকাজের জন্য ব্যবহার করেছি, বিভিন্ন অবকাঠামো স্থাপন করেছি। বাঁধ, সেচের কাজ, কারখানা, খামারের কাজে নিয়োজিত মানুষদের ২৫ ভাগ সংক্রামক রোগে আক্রান্ত। ভ্রমণ, পরিবহন ও খাদ্য সরবরাহ ব্যবস্থা সীমান্তের দূরত্ব দূর করে দিয়েছে। জলবায়ু পরিবর্তনও রোগ সংক্রমণের জন্য দায়ী।’

জাতিসংঘের ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, ভবিষ্যতে রোগের প্রাদুর্ভাব রোধে সরকারি কৌশলের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। এসব প্রস্তাবে টেকসই ভূমি ব্যবস্থাপনা, জীববৈচিত্র্য উন্নয়ন ও বৈজ্ঞানিক গবেষণায় বিনিয়োগের কথা বলা হয়েছে।

অ্যান্ডারসন বলেন, ‘যদি আমরা বন্য প্রাণীর ক্ষতি করি, বাস্তুতন্ত্র নষ্ট করি, তাহলে প্রাণী থেকে মানুষের শরীরে এ ধরনের রোগ আরও সংক্রমিত হবে। ভবিষ্যতে এ ধরনের রোগের প্রাদুর্ভাব রোধ করতে পরিবেশ রক্ষায় আমাদের আরও সচেষ্ট হতে হবে।’

Tag :
জনপ্রিয়

৩ এপ্রিল ছুটি ঘোষণা করে প্রজ্ঞাপন জারি

করোনার মতো রোগ বাড়বে যে কারণে

প্রকাশিত : ০৫:২২ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৭ জুলাই ২০২০

প্রাণী থেকে মানুষের শরীরে যায়—এমন জুনোটিক রোগ বাড়ছে। জাতিসংঘের বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করেছেন, বন্য প্রাণীদের সুরক্ষায় পদক্ষেপ না নিলে ও পরিবেশ রক্ষা না করলে এমন রোগ বাড়তেই থাকবে। কোভিড–১৯-এর মতো রোগগুলোর প্রাদুর্ভাবের জন্য তাঁরা প্রাণিজ আমিষের অতি চাহিদা, ভঙ্গুর কৃষিচর্চা ও জলবায়ু পরিবর্তনকে দায়ী করেছেন।

বিবিসি অনলাইনের খবরে জানানো হয়, জাতিসংঘ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জুনোটিক রোগ অবহেলা করলে বছরে ২০ লাখ মানুষ মারা যেতে পারে।

শুধু কোভিড–১৯ নয় ইবোলা, ওয়েস্ট নাইল ও সার্সও প্রাণী থেকে মানুষের শরীরে আসা জুনোটিক রোগ। এগুলো প্রথমে প্রাণীর শরীরে সংক্রমিত হয়। পরে সেখান থেকে মানুষের শরীরে ছড়িয়ে পড়ে।

জাতিসংঘের এনভায়রনমেন্ট প্রোগ্রাম অ্যান্ড দ্য ইন্টারন্যাশনাল লাইভস্টক রিসার্চ ইনস্টিটিউটের প্রতিবেদন বলছে, প্রাণী থেকে মানুষের শরীরে এসব রোগ এমনি এমনি আসেনি। প্রাকৃতিক পরিবেশের অপব্যবহার—যেমন ভূমির অবক্ষয়, বন্য প্রাণীর ক্ষতি করা, প্রাকৃতিক সম্পদ আহরণ ও জলবায়ু পরিবর্তন এসবের জন্য দায়ী।

জাতিসংঘের আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল ও পরিবেশ কর্মসূচির নির্বাহী পরিচালক ইনগার অ্যান্ডারসন বলেন, ‘গত শতাব্দীতে আমরা কমপক্ষে ছয়টি বড় রোগের প্রাদুর্ভাব দেখেছি।’ তিনি আরও বলেন, বিগত ২০ বছরে ও কোভিড–১৯ সংক্রমণের আগে প্রাণীবাহিত জুনোটিক রোগের কারণে ১০ হাজার কোটি ডলারের অর্থনৈতিক ক্ষতি হয়েছে।

ইনগার অ্যান্ডারসন বলেন, অঞ্চলভিত্তিক জুনোটিক রোগ (যেমন অ্যানথ্রাক্স, বোভিন টিবি ও র‌্যাবিস) অবহেলা করায় প্রতিবছর নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশগুলোয় ২০ লাখ মানুষ মারা যায়।

অ্যান্ডারসন আরও বলেন, আমিষ খাবারের জন্য প্রাণীদের ওপর বেশি নির্ভরতার কারণে জুনোটিক রোগের প্রাদুর্ভাব ঘটে। এ কারণে গত ৫০ বছরে মাংসের উৎপাদন ২৬০ ভাগ বেড়েছে।

ইনগার অ্যান্ডারসন বলেন, ‘আমরা আমাদের বনভূমি কৃষিকাজের জন্য ব্যবহার করেছি, বিভিন্ন অবকাঠামো স্থাপন করেছি। বাঁধ, সেচের কাজ, কারখানা, খামারের কাজে নিয়োজিত মানুষদের ২৫ ভাগ সংক্রামক রোগে আক্রান্ত। ভ্রমণ, পরিবহন ও খাদ্য সরবরাহ ব্যবস্থা সীমান্তের দূরত্ব দূর করে দিয়েছে। জলবায়ু পরিবর্তনও রোগ সংক্রমণের জন্য দায়ী।’

জাতিসংঘের ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, ভবিষ্যতে রোগের প্রাদুর্ভাব রোধে সরকারি কৌশলের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। এসব প্রস্তাবে টেকসই ভূমি ব্যবস্থাপনা, জীববৈচিত্র্য উন্নয়ন ও বৈজ্ঞানিক গবেষণায় বিনিয়োগের কথা বলা হয়েছে।

অ্যান্ডারসন বলেন, ‘যদি আমরা বন্য প্রাণীর ক্ষতি করি, বাস্তুতন্ত্র নষ্ট করি, তাহলে প্রাণী থেকে মানুষের শরীরে এ ধরনের রোগ আরও সংক্রমিত হবে। ভবিষ্যতে এ ধরনের রোগের প্রাদুর্ভাব রোধ করতে পরিবেশ রক্ষায় আমাদের আরও সচেষ্ট হতে হবে।’