গত কয়েক দিন ধরে কলকাতায় দৈনিক সংক্রমণের সংখ্যাটা চারশো বা তার আশপাশে ঘোরাফেরা করছিল। মঙ্গলবার এই প্রথম তা এক ধাক্কায় পাঁচশো ছাড়িয়ে গেল। গত ২৪ ঘণ্টায় মহানগরীতে নতুন করে করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ৫২৪ জন। সবমিলিয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় রাজ্যে নতুন করে সংক্রমিত হয়েছেন ১ হাজার ৩৯০ জন। সবমিলিয়ে এ রাজ্যে মোট করোনা আক্রান্তের সংখ্যা এখন ৩২ হাজার ৮৩৮। গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ২৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। পরিস্থিতির গুরুত্ব আঁচ করেই রাজ্যের কন্টেনমেন্ট জোনগুলিতে লকডাউনের মেয়াদ ১৯ জুলাই পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। মঙ্গলবার এই মর্মে নির্দেশ জারি করেছে নবান্ন।
করোনা সংক্রমণে রাজ্যের মধ্যে কলকাতা ও তার লাগোয়া দুই ২৪ পরগনা, হাওড়া ও হুগলি— এই চার জেলা নিয়েই উদ্বেগ বেশি প্রশাসনের। স্বাস্থ্য দফতর প্রকাশিত মঙ্গলবার সন্ধ্যার বুলেটিন অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় মৃতদের ৭ জনই কলকাতার।
প্রতিদিন যে সংখ্যক মানুষের টেস্ট হচ্ছে, তার মধ্যে যত শতাংশের রিপোর্ট কোভিড পজিটিভ আসছে, সেটাকেই বলা হচ্ছে প্রতিদিনের ‘পজিটিভিটি রেট’ বা সংক্রমণের হার। রাজ্যে প্রথম করোনা রোগীর সন্ধান মিলেছিল ১৮ মার্চ। তার পর থেকে এই সংক্রমণের হারের দিকে নজর রাখলেও উদ্বেগ বেড়েই চলেছে। গত ২৫ জুনের আগে পর্যন্তও এই হার ৫ শতাংশের এর নীচে ঘোরাফেরা করছিল। গত কালও সংক্রমণের হার আরও বেড়ে হয়েছিল প্রায় ১৩.৯ শতাংশ। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের দেওয়া বুলেটিন অনুযায়ী, ১১ হাজার ১০২ জনের নমুনা পরীক্ষা হয়েছে। এ দিন করোনা ধরা পড়েছে ১ হাজার ৩৯০ জনের। অর্থাৎ গত ২৪ ঘণ্টায় ‘পজিটিভিটি রেট’ আগের দিনের তুলনায় কিছুটা কমে হয়েছে ১২.৫ শতাংশ।
(চলন্ত গড় বা মুভিং অ্যাভারেজ কী: একটি নির্দিষ্ট দিনে পাঁচ দিনের চলন্ত গড় হল— সেই দিনের সংখ্যা, তার আগের দু’দিনের সংখ্যা এবং তার পরের দু’দিনের সংখ্যার গড়। উদাহরণ হিসেবে— লেখচিত্র ২ অর্থাত্ পশ্চিমবঙ্গে দৈনিক নতুন করোনা সংক্রমণের লেখচিত্রে ১৮ মে-র তথ্য দেখা যেতে পারে। সে দিনের মুভিং অ্যাভারেজ ছিল ১২৮। কিন্তু সে দিন নতুন আক্রান্তের প্রকৃত সংখ্যা ছিল ১৪৮। তার আগের দু’দিন ছিল ১১৫ এবং ১০১। পরের দুদিনের সংখ্যা ছিল ১৩৬ এবং ১৪২। ১৬ থেকে ২০ মে, এই পাঁচ দিনের গড় হল ১২৮, যা ১৮ মে-র চলন্ত গড়। ঠিক একই ভাবে ১৯ মে-র চলন্ত গড় হল ১৭ থেকে ২১ মে-র দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যার গড়। পরিসংখ্যানবিদ্যায় দীর্ঘমেয়াদি গতিপথ সহজ ভাবে বোঝার জন্য এবং স্বল্পমেয়াদি বড় বিচ্যুতি এড়াতে এই পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়)