গ্রাম পুলিশের মহল্লাদারদের জাতীয় বেতন স্কেলের ২০তম গ্রেডে এবং দফাদারদের ১৯তম গ্রেডে বেতন–ভাতাদি প্রদান করতে হাইকোর্টের দেওয়া পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত হয়েছে। এখন রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি হাতে পেয়ে রাষ্ট্রপক্ষ নিয়মিত লিভ টু আপিল করবে।
বিচারপতি মো. আশরাফুল কামাল ও বিচারপতি রাজিক আল জলিলের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এক রিটের চূড়ান্ত শুনানি শেষে গত ১৫ ও ১৭ ডিসেম্বর ওই রায় দেন। চলতি সপ্তাহে ১৮ পৃষ্ঠার পূর্ণাঙ্গ রায়টি সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত হয়। রায়ে ২০১১ সালের ২ জুন থেকে রিট আবেদনকারীসহ গ্রাম পুলিশের সব মহল্লাদারকে জাতীয় বেতন স্কেল ২০০৯ (বর্তমান জাতীয় বেতন স্কেল ২০১৫)–এর ২০তম গ্রেডে এবং দফাদারদের জাতীয় বেতন স্কেল ২০০৯ (জাতীয় বেতন স্কেল ২০১৫)–এর ১৯তম গ্রেড অনুসারে বেতন–ভাতাদি দিতে বলা হয়েছে।
রিট আবেদনকারীপক্ষের তথ্য, ২০০৮ সালের ৯ জুলাই গ্রাম পুলিশের সদস্যদের জাতীয় বেতন স্কেলের চতুর্থ শ্রেণিতে অন্তর্ভুক্ত করার সিদ্ধান্ত হয়। তবে ওই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়িত না হওয়ার প্রেক্ষাপটে ২০১৭ সালে ঢাকার ধামরাইয়ের টুপিরবাড়ীর হাটকুশারা এলাকার বাসিন্দা লাল মিয়াসহ কয়েকজন গ্রাম পুলিশ সদস্য রিট করেন। এর প্রাথমিক শুনানি নিয়ে একই বছরের ৩ ডিসেম্বর হাইকোর্ট রুল দেন। রুলে ২০০৮ সালের সিদ্ধান্তের ভিত্তিতে গ্রাম পুলিশ সদস্যদের চতুর্থ শ্রেণিতে অন্তর্ভুক্তির নির্দেশ কেন দেওয়া হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়। চূড়ান্ত শুনানি শেষে গত ১৫ ও ১৭ ডিসেম্বর রায় দেন হাইকোর্ট।
হাইকোর্টে রিটের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন আইনজীবী হুমায়ূন কবির, মোজম্মেল হক, মোহাম্মদ কাওসার, মোহাম্মদ মাজেদুল কাদের ও নূর আলম সিদ্দিকী। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ওয়ায়েস আল হারুনী, সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল ইলিন ইমন সাহা, শায়রা ফিরোজ ও মাহফুজুর রহমান লিখন।
পূর্ণাঙ্গ রায় দেখেছেন জানিয়ে আজ বৃহস্পতিবার আইনজীবী হুমায়ূন কবির প্রথম আলোকে বলেন, ৩৫৫ জন রিট করলেও সারা দেশে ৪৭ হাজার গ্রাম পুলিশ সদস্য আছেন। রিট আবেদনকারীসহ সবাই ওই সুবিধা পাবেন। তবে হাইকোর্টের রায়ের পর রাষ্ট্রপক্ষ আপিল বিভাগে আবেদন করে। এর পরিপ্রেক্ষিতে গত ২৩ ডিসেম্বর হাইকোর্টের রায় স্থগিত হয়। তিনি আরও বলেন, এখন দফাদারেরা সাত হাজার ও মহল্লাদারেরা সাড়ে ছয় হাজার টাকা বেতন–ভাতা পান। প্রতিটি ইউনিয়ন পরিষদে একজন করে দফাদার ও ৯ জন করে মহল্লাদার নিযুক্ত থাকেন।