চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের সার্জারি ওয়ার্ড (পুরুষ) ও আলমডাঙ্গা উপজেলার হাড়োকান্দি গ্রামকে রেড জোন চিহ্নিত করে লকডাউন (অবরুদ্ধ) করা হয়েছে। সদর হাসপাতালের সার্জারি বিভাগের একজন কনসালট্যান্ট, আলমডাঙ্গা উপজেলায় একজন স্বাস্থ্যকর্মীসহ ছয়জন করোনা পজিটিভ হিসেবে শনাক্ত হওয়ায় গতকাল মঙ্গলবার রাতে এই ঘোষণা দেওয়া হয়। আজ বুধবার সকাল থেকে এই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন শুরু হয়েছে।
সিভিল সার্জনের কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, গতকাল রাতে কুষ্টিয়া পিসিআর ল্যাব থেকে মোট ২০ জনের নমুনা পরীক্ষার ফল চুয়াডাঙ্গায় আসে। এর মধ্যে সাতজনের প্রতিবেদন করোনা পজিটিভ এসেছে। এ নিয়ে জেলায় মোট করোনা পজিটিভ ব্যক্তির সংখ্যা দাঁড়াল ১৯৬। নতুন শনাক্ত সাতজনের মধ্যে রয়েছে সদর হাসপাতালের সার্জারি বিভাগের একজন পরামর্শক, আলমডাঙ্গা উপজেলার আইলহাস ইউনিয়নের হাড়োকান্দি গ্রামে কর্মরত একজন স্বাস্থ্যকর্মী এবং একই গ্রামের দুই শিশুসহ আরও পাঁচজন।
সদর হাসপাতাল ও স্থানীয় একাধিক সূত্রে জানা গেছে, গত শুক্রবার জীবননগর দৌলতগঞ্জ এলাকার বাসিন্দা একজন গাড়িচালক পেটে ব্যথা ও বমি নিয়ে সদর হাসপাতালের সার্জারি ওয়ার্ডে ভর্তি হন। শনিবার জ্বর ও কাশি শুরু হলে করোনা সন্দেহে তাঁকে করোনা ওয়ার্ডের ইয়েলো জোনে স্থানান্তর করা হয়। সেখান থেকে করোনা পরীক্ষার জন্য নমুনা সংগ্রহ করে পাঠানো হয়। গত সোমবার রাতে হাতে পাওয়া ফলাফলে দেখা যায়, ওই রোগী করোনায় সংক্রমিত। রাতেই তাকে করোনা ওয়ার্ডের রেড জোনে চিকিৎসার জন্য নেওয়া হয়। গতকাল রাতে হাতে পাওয়া প্রতিবেদনে দেখা যায়, সার্জারি ওয়ার্ডের একজন পরামর্শক করোনায় সংক্রমিত। এর আগে একই ওয়ার্ডের আরও একজন পরামর্শক করোনায় সংক্রমিত হয়েছিলেন। তিনি পরে করোনাজয় করে কাজে ফিরেছেন।
সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) শামীম কবির জানান, লকডাউনের কারণে সার্জারি ওয়ার্ডের জটিল রোগীদের নিরাপদ একটি কক্ষে স্থানান্তর করা হয়েছে। অপেক্ষাকৃত কম সমস্যা অসুস্থ বা পুরোপুরি সুস্থ ব্যক্তিদের ছুটি দেওয়া হয়েছে।
এদিকে একই সময়ে হাতে পাওয়া প্রতিবেদনে দেখা যায়, আলমডাঙ্গা উপজেলার আইলহাস ইউনিয়নের হাড়োকান্দি গ্রামে একজন স্বাস্থ্যকর্মী এবং দুই শিশুসহ মোট ছয়জন করোনা পজিটিভ। তাঁরা ওই গ্রামের চারটি পরিবারের সদস্য। এঁদের মধ্যে একজন ঢাকা থেকে আসা। ঢাকায় চিকিৎসা করতে গিয়ে এক শিশু করোনায় সংক্রমিত হয়। এরপর অন্যরা তার সংস্পর্শে এসে করোনায় সংক্রমিত হয়েছেন। ছয়জনকেই হোম আইসোলেশনে রাখা হয়েছে। এই ছয়জনসহ সংস্পর্শে আসা লোকজনকে চিহ্নিত করে নমুনা সংগ্রহের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।
আলমডাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) লিটন আলী বলেন, হাড়োকান্দি গ্রামে লকডাউন বাস্তবায়নে গ্রামের পাঁচটি প্রবেশমুখের সব কটিতে বাঁশের প্রতিবন্ধকতা বসানো হয়েছে। প্রতিটি পয়েন্টে পুলিশ, গ্রামপুলিশ ও স্বেচ্ছাসেবকদের নিয়ে গ্রামের মানুষদের বাইরে বের হওয়া ও বাইরের লোকজনকে গ্রামে প্রবেশে ঠেকানো এবং ভ্রাম্যমাণ ভ্যানে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য সরবরাহের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।