বিশ্বভারতীতে পৌষ মেলার মাঠ ঘিরে পাঁচিল তোলাকে কেন্দ্র করে রণক্ষেত্রর চেহারা নিল গোটা এলাকা। মেলার মাঠ ঘেরার প্রতিবাদ জানিয়ে এলাকার কয়েকশো মানুষ ভাঙচুর চালায় বিশ্ববিদ্যালয়ের অস্থায়ী অফিসে। ভাঙা হয় বিশ্বভারতীর একটি গেটও। বিক্ষুদ্ধ জনতা স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্বের সামনেই বন্ধ করে দেয় নির্মাণ কাজ। ঘটনার সম্পর্কে বিশ্বভারতীর পক্ষ থেকে এখনও কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। তবে রাজ্যপাল টুইট করে বিশ্বভারতীর আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তিনি এ বিষয়ে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেছেন বলেও জানিয়েছেন টুইটে।
পৌষ মেলার মাঠ ঘেরা নিয়ে রবিবার থেকেই উত্তপ্ত শান্তিনিকেতন। এ বছর পৌষ মেলা তাঁরা করতে পারবেন না আগেই জানিয়েছিল বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। তার পর শনিবার থেকে শুরু হয় মেলার মাঠে পাঁচিল দেওয়ার কাজ। মেলার মাঠ ঘেরার প্রতিবাদ করেন স্থানীয় বাসিন্দাদের একটি বড় অংশ। ‘মেলার মাঠ বাঁচাও, শান্তিনিকেতন বাঁচাও’ নামে সোশ্যাল মিডিয়ায় পেজ তৈরি করে গত কয়েক দিন ধরেই শুরু হয়েছিল প্রতিবাদ।
শনিবার মেলার মাঠ ঘেরার কাজ শুরু হলে রবিবার স্থানীয় ব্যবসায়ী সমিতি বাধা দেয়। বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ অভিযোগ করেন, ব্যবসায়ী সমিতি নির্মাণ কাজের ঠিকাদার এবং কর্মীদের মারধর করেছে। রবিবার মেলার মাঠ ঘেরার প্রতিবাদ করে মিছিলও বের করেন স্থানীয়রা।

সেমবার সকাল থেকে নির্মাণের কাজ শুরু হলে প্রতিবাদ করতে জমায়েত হন এলাকার বাসিন্দারা। সূত্রের খবর, উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর নির্দেশে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার আশা মুখোপাধ্যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক এবং বেসরকারি নিরাপত্তা কর্মীদের জমায়েত হওয়ার নির্দেশ দেন সোমবার সকালে। উপাচার্য মিছিল করে মেলার মাঠে পৌঁছন সকাল ৯ টা নাগাদ এবং তাঁর উপস্থিতিতে পে লোডার দিয়ে শুরু হয় মেলার মাঠ ঘেরার জন্য নির্মাণের কাজ। সেই খবর পেয়েই শান্তিনিকেতন-বোলপুর থেকে প্রচুর মানুষ জমা হন প্রতিবাদ করতে। এলাকায় মিছিল করেন দুবরাজপুরের তৃণমূল বিধায়ক নরেশ বাউরি।

সেই জমায়েত থেকেই শুরু হয় তাণ্ডব। উত্তেজিত জনতার একটি বড় অংশ নির্মাণ সামগ্রী লন্ডভন্ড করে দেন। তারপর এলোপাথাড়ি ভাঙচুর চলে বিশ্ববিদ্যালয়ের অস্থায়ী অফিস ঘরে। তার মধ্যেই নির্মা্ণের জন্য আনা পে লোডার দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি গেটের স্তম্ভ ভেঙে দেয় জনতার একাংশ। তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি গেটের তালা ভেঙে ভিতরে ঢুকে পড়ে ভিতরে। অভিযোগ, সেখানেও ব্যাপক ভাঙচুর চলে।

গোটা ঘটনা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়। তিনি টুইট করে বিশ্বভারতীর আইন শৃঙ্খলা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন এবং মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলবেন বলে জানান। প্রথম টুইটের আধঘণ্টা পরে ফের তিনি টুইট করে জানান, বিশ্বভারতীর বিষয় নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কথা হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁকে আশ্বাস দিয়েছেন, প্রশাসন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেবে।