বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত থেকে শেষ হচ্ছে বঙ্গোপসাগরে মাছ ধরার ওপর ৬৫ দিনের সরকারি নিষেধাজ্ঞা। শুক্রবার সকাল থেকে আবার জেলেরা ট্রলার নিয়ে ছুটবেন গভীর সাগরে। জেলে-পাইকার-আড়তদারের পদচারণে মুখর হয়ে উঠবে বরগুনা উপকূলের মৎস্যবন্দরগুলো। এরই মধ্যে সাগরযাত্রার প্রস্তুতি নিয়েছেন জেলেরা। ট্রলারগুলোতে বাজার-সওদা আর কন্দরে বরফ ভর্তি করে অপেক্ষা করছেন। মধ্যরাতেই অনেকে ছুটবেন সাগরের উদ্দেশে।
জেলেরা জানান, ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞার ফলে তাঁরা খুব ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। দুই মাস তাঁরা আর্থিক অভাব-অনটনের মধ্য দিয়ে পার করেছেন। কমবেশি সব জেলেই ঋণগ্রস্তও হয়ে পড়েছেন। নিষেধাজ্ঞা উঠে যাওয়ায় বরগুনা সদর, আমতলী, পাথরঘাটা, তালতলী উপজেলার জেলেপাড়াগুলোতে আবারও প্রাণচাঞ্চল্য ফিরে এসেছে। দীর্ঘদিন বঙ্গোপসাগরে মাছ আহরণ বন্ধ থাকায় এবার জেলেরা বেশি মাছ পাবেন বলে আশাবাদী।
পাথরঘাটা উপজেলার মডেল খাল এলাকার জেলে জাফর হাওলাদার বলেন, ‘আমরা সরকারের আইনের প্রতি সম্মান রেখে শত কষ্টেও সাগরে ইলিশ শিকারে যাইনি। এই দীর্ঘ বিরতিতে আমরা অনেক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছি। ধারদেনা করে কোনো রকমে সংসার চলছে। এখন দেখি আল্লাহ যদি মুখ তুলে তাকায় তাহলে এই ক্ষতি কিছুটা পোষাতে পারব।’
তালতলী উপজেলার সোনাকাটা গ্রামের জেলে শামীম বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার কারণে নিঃস্ব হয়ে গেছি। একবার সরকারি সহায়তা বলতে ৫৫ কেজি চাল পেয়েছি। এর পর ছেলেমেয়ে নিয়ে কোনো রকমে দিন কেটে গেছে।’
বরগুনা জেলা মৎস্যজীবী ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি গোলাম মোস্তফা চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, ‘৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা চলতে থাকলে উপকূলের জেলেরা নিঃস্ব হয়ে পড়বেন। আর তাই আমরা এ আইনের বিরোধিতা করছি। সরকারের বিষয়টি পুনরায় বিবেচনা করা দরকার। তিনি আরও বলেন, পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশে অবরোধের সময়সীমা একসঙ্গে নির্ধারণ করে যাতে অবরোধ সময়সূচি করা হয়, সরকারের প্রতি আমরা এই দাবি জানাই।’