নাটোরের সিংড়া উপজেলা শহরে আজ শুক্রবার সকাল থেকে বন্যার পানি ঢুকতে শুরু করেছে। এরই মধ্যে ডুবে গেছে সিংড়া বাজারের রাস্তাঘাট। আগামী এক সপ্তাহে পানি আরও বাড়বে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে নাটোর পাউবো কার্যালয়। অন্যদিকে নলডাঙ্গার চারটি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভায় বন্যা দেখা দিয়েছে। দুই উপজেলায় পানিবন্দী হয়ে পড়েছে প্রায় এক লাখ মানুষ। ১২টি আশ্রয়কেন্দ্রে প্রায় ৬ হাজার মানুষ আশ্রয় নিয়েছে।
সিংড়া শহরের মধ্য দিয়ে বয়ে গেছে আত্রাই নদ। এই নদের পানি বিপৎসীমার ৮৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এ ছাড়া বারনই নদের পানি ৪ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
সিংড়া শহরে পানি ঢোকার খবর পেয়ে স্থানীয় সাংসদ ও তথ্য–প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ আজ সকালে ঢাকা থেকে ছুটে আসেন। তিনি শহরের বিভিন্ন আশ্রয়কেন্দ্র পরিদর্শন করে ত্রাণসামগ্রী বিতরণ করেন। তিনি পাটুল-ত্রিমোহনী বাঁধের বিলীন হওয়া অংশ মেরামতকাজের উদ্বোধন করেন। যাতায়াতের জন্য ১৩টি পরিবারকে ডিঙি নৌকা উপহার দেন। এ সময় জেলা প্রশাসক মো.শাহরিয়াজ, পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আবু রায়হান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে সকালে নলডাঙ্গা রেলসেতু পয়েন্টে বারনই নদের পানি বিপৎসীমার ৪ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আবু রায়হান জানান, এতে নলডাঙ্গা উপজেলার নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। নদীপাড়ের দুই শতাধিক বসতবাড়িতে পানি ঢুকে পড়েছে। বিশেষ করে উপজেলার ব্রহ্মপুর, মাধনগর, খাজুরা, পিপরুল ইউনিয়ন ও নলডাঙ্গা পৌরসভার একাংশে বন্যার পানি ভয়ংকর রূপ নিচ্ছে।
উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা সঞ্জয় কুমার জানান, এসব এলাকার ১৩০টি পুকুর ডুবে ৬০ মেট্রিক টন মাছ ও ২৮ লাখ পোনা মাছ ভেসে গেছে। এতে মোট ১ কোটি ৬০ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। বন্যার পানিতে ডুবে গেছে পাট, আমন ধানসহ সবজিখেত।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আমিরুল ইসলাম জানান, ৪৫ হেক্টর জমির আউশ ধান, সাড়ে ১৫ হেক্টর জমির রোপা আমন ধান ও সাড়ে ৯ হেক্টর জমির সবজি বন্যায় নষ্ট হয়েছে। এতে মোট ৮৩ লাখ ৬০ হাজার ২০০ টাকার ক্ষতি হয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবদুল্লাহ আল মামুন জানান, বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের খাদ্যসহায়তা ও আশ্রয়ের ব্যবস্থা করা হচ্ছে।