করোনা আক্রান্ত হয়ে রাজ্যে মৃতের সংখ্যা বে়ড়েই চলেছে। স্বাস্থ্য দফতরের বুধবারের বুলেটিন অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় মারা গিয়েছেন ৩৯ জন। এত বেশি সংখ্যক মানুষ এক দিনে এর আগে কখনও মারা যাননি। মঙ্গলবারের বুলেটিন জানিয়েছিল, তার আগের ২৪ ঘণ্টায় ৩৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। সেই সঙ্গে এ দিন গত ২৪ ঘণ্টায় রেকর্ড সংখ্যক মানুষ নতুন করে করোনা সংক্রমিত হয়েছেন। ওই সময়ে ২ হাজার ২৯১ জনের করোনা ধরা পড়েছে। রাজ্যে মোট করোনা আক্রান্তের সংখ্যা এখন ৪৯ হাজার ৩২১। মোট মৃত্যু হয়েছে ১ হাজার ২২১ জনের।
স্বাস্থ্য দফতরের ওই বুলেটিন অনুযায়ী, এ দিন কলকাতাতেও সংক্রমণ সর্বোচ্চ। মঙ্গলবার মহানগরীতে করোনা আক্রান্ত হয়েছিলেন ৬৫১ জন। এ দিন তা এক লাফে তা বেড়ে হয়েছে ৬৯২। মৃত ৩৯ জনের মধ্যে ১৫ জনই কলকাতার বাসিন্দা।
কলকাতা ছাড়াও কয়েকটি জেলায় করোনার ছবিটা আশঙ্কাজনক হয়ে উঠেছে। এ দিন উত্তর ২৪ পরগনায় ৬২৪, দক্ষিণ ২৪ পরগনায় ১৯১, হুগলিতে ১৩৯ এবং হাওড়ায় ২২৫ জন নতুন করে করোনা সংক্রমণের শিকার হয়েছেন। পূর্ব মেদিনীপুরে এ দিন আক্রান্ত হয়েছেন ৮৪ জন। মৃত ৩৯ জনের মধ্যে ১১ জন উত্তর ২৪ পরগনার বাসিন্দা। নদিয়ায় এ দিন নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন ৩৫ জন। উত্তরবঙ্গে গত কালকের থেকে আজ নতুন সংক্রমণের সংখ্যাটা কিছুটা কম। কোচবিহারে ৩৫, দার্জিলিঙে ৩৫, জলপাইগুড়ি ২৩, উত্তর দিনাজপুরে ৩৬, মালদহে ৩০ জনের নতুন করে করোনা ধরা পড়েছে।
প্রতিদিন কত জন রোগীর করোনা টেস্ট করা হচ্ছে এবং তার মধ্যে কত জনের রিপোর্ট পজিটিভ আসছে, সেটাকেই বলা হয় পজিটিভিটি রেট বা সংক্রমণের হার। স্বাস্থ্য দফতরের বুলেটিন অনুযায়ী, এখনও পর্যন্ত মোট ৭ লক্ষ ৪৩ হাজার ৪৬৯ জনের লালারসের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে এ রাজ্যে। মঙ্গলবারের থেকে বুধবার টেস্টও খানিকটা বেড়েছে। বেশি সংখ্যক মানুষের পরীক্ষা হওয়ায় সংক্রমণ বেড়েছে বলে মত বিশেষজ্ঞদের। এ দিন ১৪ হাজার ৪০ জনের নমুনা পরীক্ষা হয়েছে। তার মধ্যে করোনা ধরা পড়েছে ২ হাজার ২৯১ জনের যা ১৬.৩২ শতাংশ। মঙ্গলবার সংক্রমণের হার ছিল ১৭.৩১।
এখনও পর্যন্ত রাজ্যে ২৯ হাজার ৬৫০ জন সুস্থ হয়ে উঠেছেন। এর মধ্যে এ দিনই হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়েছেন ১ হাজার ৬১৫ জন। এ দিন সুস্থতার হার আগের থেকে কিছুটা বেড়ে হয়েছে ৬০.১১ শতাংশ।
(চলন্ত গড় বা মুভিং অ্যাভারেজ কী: একটি নির্দিষ্ট দিনে পাঁচ দিনের চলন্ত গড় হল— সেই দিনের সংখ্যা, তার আগের দু’দিনের সংখ্যা এবং তার পরের দু’দিনের সংখ্যার গড়। উদাহরণ হিসেবে—পশ্চিমবঙ্গে দৈনিক নতুন করোনা সংক্রমণের লেখচিত্রে ১৮ মে-র তথ্য দেখা যেতে পারে। সে দিনের মুভিং অ্যাভারেজ ছিল ১২৮। কিন্তু সে দিন নতুন আক্রান্তের প্রকৃত সংখ্যা ছিল ১৪৮। তার আগের দু’দিন ছিল ১১৫ এবং ১০১। পরের দুদিনের সংখ্যা ছিল ১৩৬ এবং ১৪২। ১৬ থেকে ২০ মে, এই পাঁচ দিনের গড় হল ১২৮, যা ১৮ মে-র চলন্ত গড়। ঠিক একই ভাবে ১৯ মে-র চলন্ত গড় হল ১৭ থেকে ২১ মে-র দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যার গড় পরিসংখ্যানবিদ্যায় দীর্ঘমেয়াদি গতিপথ সহজ ভাবে বোঝার জন্য এবং স্বল্পমেয়াদি বড় বিচ্যুতি এড়াতে এই পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়)