ঢাকা , সোমবার, ০৫ মে ২০২৫, ২১ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম :
৩ এপ্রিল ছুটি ঘোষণা করে প্রজ্ঞাপন জারি বাংলাদেশ সাবমেরিন কেব্‌ল কোম্পানির সব ধরনের ইন্টারনেটের দাম কমছে ১০ শতাংশ। রমজানে মাধ্যমিক স্কুল খোলা থাকবে ১৫ দিন, প্রাথমিক স্কুল ১০ দিন খালেদা জিয়াকে হাসপাতালে নেওয়া হচ্ছে টেকনাফ সীমান্তের হোয়াইক্যং এলাকা দিয়ে আজ অস্ত্র নিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে মিয়ানমারের সেনা সাদ সাহেব রুজু করার পর দেওবন্দের মাসআলা খতম হয়ে গেছে : মাওলানা আরশাদ মাদানী চলছে বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্বের দ্বিতীয় দিনের বয়ান পুলিশ সদস্যসহ বিশ্ব ইজতেমায় ৭ জনের মৃত্যু বর্তমান সরকারের সঙ্গে সব দেশ কাজ করতে চায়: পররাষ্ট্রমন্ত্রী জয়পুরহাটে স্কুলছাত্র হত্যায় ১১ জনের মৃত্যুদণ্ড

এন-৯৫ নামে নিম্ন মানের মাস্ক শাস্তিযোগ্য: তদন্ত কমিটি

  • নিউজ ডেস্ক
  • প্রকাশিত : ০৩:১৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৬ জুলাই ২০২০
  • ৮৯৭ পঠিত

এন-৯৫ মাস্কের নামে নিম্নমানের সাধারণ মাস্ক সরবরাহের ঘটনাকে ‘পরিকল্পিত প্রতারণা ও শাস্তিযোগ্য অপরাধ’ হিসেবে চিহ্নিত করেছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের গঠন করা তদন্ত কমিটি। কেন্দ্রীয় ঔষধাগারের কমিটির এই প্রতিবেদনের আলোকে মাস্ক সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান জেএমআই এবং মালামাল গ্রহণ, বিতরণ বা অন্য যেকোনোভাবে এ বিষয়ের সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিতে বলেছে মন্ত্রণালয়।

গত মঙ্গলবার কেন্দ্রীয় ঔষধাগারের (ভান্ডার ও সরবরাহ) পরিচালক বরাবর চিঠি দিয়ে এ নির্দেশ দেয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ। দুর্নীতি দমন কমিশনও (দুদক) এ বিষয়ে তদন্ত করছে।

করোনাভাইরাসে আক্রান্ত বা সন্দেহভাজন রোগীদের চিকিৎসার জন্য হাসপাতালগুলোতে চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের জন্য মাস্কসহ বিশেষ সুরক্ষাসামগ্রী দিয়ে আসছে সরকার। গত এপ্রিলে মুগদা জেনারেল হাসপাতালসহ বেশ কিছু হাসপাতালে ‘এন-৯৫’ মাস্কের নামে যেসব মাস্ক দেওয়া হয়েছে, সেগুলোর মান নিয়ে প্রশ্ন দেখা দেয়। এ নিয়ে গত ২ এপ্রিল ‘এন-৯৫ মাস্কের নামে কী দেওয়া হচ্ছে’ শিরোনামে প্রথম আলোতে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। জেএমআই হসপিটাল রিকুইজিট ম্যানুফ্যাকচারিং লিমিটেড নামের দেশীয় একটি প্রতিষ্ঠান ওই সব মাস্ক সরবরাহ করেছিল।

কমিটির প্রতিবেদনে বলা হয়, কেন্দ্রীয় ঔষধাগারের অনুরোধে জেএমআই দুই চালানে ২০ হাজার ৬০০টি এন-৯৫ নামের ফেস মাস্ক সরবরাহ করে। তদন্তে দেখা গেছে, সরবরাহ করা পণ্যের মান ঠিক হয়নি, তাদের পণ্য তৈরির অনুমোদন প্রক্রিয়াও শুরু হয়নি, পণ্য তৈরির জন্য বৈধভাবে কাঁচামাল সংগ্রহ করা হয়নি। উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের ভাষ্য অনুযায়ী পণ্যটি (কথিত এন-৯৫ মাস্ক) গবেষণা ও উন্নয়ন পর্যায়ে রয়েছে। এন-৯৫ মাস্কের বৈধ উৎপাদনকারী বা আমদানিকারক না হয়েও সুদৃশ্য মোড়কে ৯৯ দশমিক ৯ শতাংশ সুরক্ষার নিশ্চয়তা দিয়ে এসব মাস্ক সরবরাহ করা হয়েছে। এটিকে কোনোভাবেই ভুল হিসেবে বিবেচনার সুযোগ নেই। মাস্কগুলো ব্যবহৃত হলে কোভিড-১৯ সংক্রমণকালে স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারীদের বড় ধরনের বিপর্যয় ঘটার আশঙ্কা ছিল। ঘটনাটি একটি পরিকল্পিত প্রতারণা এবং শাস্তিযোগ্য অপরাধ বলে প্রতীয়মান হয়।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, চাহিদার সঙ্গে সরবরাহের মিল না থাকার বিষয়টি জেনেও তা গ্রহণ এবং বিতরণ করে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা চরম দায়িত্বজ্ঞানহীনতার পরিচয় দিয়েছেন। তাই তাঁদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।

কেন্দ্রীয় ঔষধাগারের পরিচালককে তদন্তের এসব সুপারিশের আলোকে ব্যবস্থা নিয়ে তা জানাতে বলেছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।

কেন্দ্রীয় ঔষধাগারের তৎকালীন পরিচালক এখন দায়িত্বে নেই। মন্ত্রণালয়ের চিঠির বিষয়ে বর্তমান পরিচালকের সঙ্গে চেষ্টা করেও যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।

বাংলাদেশে এন-৯৫ মাস্ক তৈরি হয় না। জেএমআই যে মাস্ক সরবরাহ করেছিল, সেগুলোর মোড়কে এন-৯৫ লেখা ছিল এবং তাদের কারখানার ঠিকানা দেওয়া ছিল মুন্সিগঞ্জের গজারিয়ায়। এই মাস্ক পেয়ে মুগদা জেনারেল হাসপাতালের সে সময়ের পরিচালক শহিদ মো. সাদিকুল ইসলাম স্বাস্থ্য অধিদপ্তরকে চিঠি দিয়ে জানতে চেয়েছিলেন এগুলো আসল এন-৯৫ মাস্ক কি না। এর কিছুদিন পর তাঁকে বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওএসডি) করা হয়।

Tag :
জনপ্রিয়

৩ এপ্রিল ছুটি ঘোষণা করে প্রজ্ঞাপন জারি

এন-৯৫ নামে নিম্ন মানের মাস্ক শাস্তিযোগ্য: তদন্ত কমিটি

প্রকাশিত : ০৩:১৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৬ জুলাই ২০২০

এন-৯৫ মাস্কের নামে নিম্নমানের সাধারণ মাস্ক সরবরাহের ঘটনাকে ‘পরিকল্পিত প্রতারণা ও শাস্তিযোগ্য অপরাধ’ হিসেবে চিহ্নিত করেছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের গঠন করা তদন্ত কমিটি। কেন্দ্রীয় ঔষধাগারের কমিটির এই প্রতিবেদনের আলোকে মাস্ক সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান জেএমআই এবং মালামাল গ্রহণ, বিতরণ বা অন্য যেকোনোভাবে এ বিষয়ের সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিতে বলেছে মন্ত্রণালয়।

গত মঙ্গলবার কেন্দ্রীয় ঔষধাগারের (ভান্ডার ও সরবরাহ) পরিচালক বরাবর চিঠি দিয়ে এ নির্দেশ দেয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ। দুর্নীতি দমন কমিশনও (দুদক) এ বিষয়ে তদন্ত করছে।

করোনাভাইরাসে আক্রান্ত বা সন্দেহভাজন রোগীদের চিকিৎসার জন্য হাসপাতালগুলোতে চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের জন্য মাস্কসহ বিশেষ সুরক্ষাসামগ্রী দিয়ে আসছে সরকার। গত এপ্রিলে মুগদা জেনারেল হাসপাতালসহ বেশ কিছু হাসপাতালে ‘এন-৯৫’ মাস্কের নামে যেসব মাস্ক দেওয়া হয়েছে, সেগুলোর মান নিয়ে প্রশ্ন দেখা দেয়। এ নিয়ে গত ২ এপ্রিল ‘এন-৯৫ মাস্কের নামে কী দেওয়া হচ্ছে’ শিরোনামে প্রথম আলোতে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। জেএমআই হসপিটাল রিকুইজিট ম্যানুফ্যাকচারিং লিমিটেড নামের দেশীয় একটি প্রতিষ্ঠান ওই সব মাস্ক সরবরাহ করেছিল।

কমিটির প্রতিবেদনে বলা হয়, কেন্দ্রীয় ঔষধাগারের অনুরোধে জেএমআই দুই চালানে ২০ হাজার ৬০০টি এন-৯৫ নামের ফেস মাস্ক সরবরাহ করে। তদন্তে দেখা গেছে, সরবরাহ করা পণ্যের মান ঠিক হয়নি, তাদের পণ্য তৈরির অনুমোদন প্রক্রিয়াও শুরু হয়নি, পণ্য তৈরির জন্য বৈধভাবে কাঁচামাল সংগ্রহ করা হয়নি। উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের ভাষ্য অনুযায়ী পণ্যটি (কথিত এন-৯৫ মাস্ক) গবেষণা ও উন্নয়ন পর্যায়ে রয়েছে। এন-৯৫ মাস্কের বৈধ উৎপাদনকারী বা আমদানিকারক না হয়েও সুদৃশ্য মোড়কে ৯৯ দশমিক ৯ শতাংশ সুরক্ষার নিশ্চয়তা দিয়ে এসব মাস্ক সরবরাহ করা হয়েছে। এটিকে কোনোভাবেই ভুল হিসেবে বিবেচনার সুযোগ নেই। মাস্কগুলো ব্যবহৃত হলে কোভিড-১৯ সংক্রমণকালে স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারীদের বড় ধরনের বিপর্যয় ঘটার আশঙ্কা ছিল। ঘটনাটি একটি পরিকল্পিত প্রতারণা এবং শাস্তিযোগ্য অপরাধ বলে প্রতীয়মান হয়।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, চাহিদার সঙ্গে সরবরাহের মিল না থাকার বিষয়টি জেনেও তা গ্রহণ এবং বিতরণ করে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা চরম দায়িত্বজ্ঞানহীনতার পরিচয় দিয়েছেন। তাই তাঁদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।

কেন্দ্রীয় ঔষধাগারের পরিচালককে তদন্তের এসব সুপারিশের আলোকে ব্যবস্থা নিয়ে তা জানাতে বলেছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।

কেন্দ্রীয় ঔষধাগারের তৎকালীন পরিচালক এখন দায়িত্বে নেই। মন্ত্রণালয়ের চিঠির বিষয়ে বর্তমান পরিচালকের সঙ্গে চেষ্টা করেও যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।

বাংলাদেশে এন-৯৫ মাস্ক তৈরি হয় না। জেএমআই যে মাস্ক সরবরাহ করেছিল, সেগুলোর মোড়কে এন-৯৫ লেখা ছিল এবং তাদের কারখানার ঠিকানা দেওয়া ছিল মুন্সিগঞ্জের গজারিয়ায়। এই মাস্ক পেয়ে মুগদা জেনারেল হাসপাতালের সে সময়ের পরিচালক শহিদ মো. সাদিকুল ইসলাম স্বাস্থ্য অধিদপ্তরকে চিঠি দিয়ে জানতে চেয়েছিলেন এগুলো আসল এন-৯৫ মাস্ক কি না। এর কিছুদিন পর তাঁকে বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওএসডি) করা হয়।