ঢাকা , সোমবার, ০৫ মে ২০২৫, ২১ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম :
৩ এপ্রিল ছুটি ঘোষণা করে প্রজ্ঞাপন জারি বাংলাদেশ সাবমেরিন কেব্‌ল কোম্পানির সব ধরনের ইন্টারনেটের দাম কমছে ১০ শতাংশ। রমজানে মাধ্যমিক স্কুল খোলা থাকবে ১৫ দিন, প্রাথমিক স্কুল ১০ দিন খালেদা জিয়াকে হাসপাতালে নেওয়া হচ্ছে টেকনাফ সীমান্তের হোয়াইক্যং এলাকা দিয়ে আজ অস্ত্র নিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে মিয়ানমারের সেনা সাদ সাহেব রুজু করার পর দেওবন্দের মাসআলা খতম হয়ে গেছে : মাওলানা আরশাদ মাদানী চলছে বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্বের দ্বিতীয় দিনের বয়ান পুলিশ সদস্যসহ বিশ্ব ইজতেমায় ৭ জনের মৃত্যু বর্তমান সরকারের সঙ্গে সব দেশ কাজ করতে চায়: পররাষ্ট্রমন্ত্রী জয়পুরহাটে স্কুলছাত্র হত্যায় ১১ জনের মৃত্যুদণ্ড

করোনায় মাছের সাফল্যে উল্টো যাত্রা

  • নিউজ ডেস্ক
  • প্রকাশিত : ১১:২৪ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ৫ জুলাই ২০২০
  • ৮১৫ পঠিত

মাছপ্রিয় বাঙালির কাছে বর্ষা প্রিয় একটি ঋতু। এই সময়ে নতুন পানির ছোট মাছের স্বাদ ভালো হয় বলে প্রচলিত আছে। জেলে আর খামারিরাও এই সময়ের অপেক্ষায় থাকেন। কারণ, বেশি মাছ পাওয়া যায়। কিন্তু এ বছরটা ঠিক তার উল্টো। পুকুরে পোনা ছাড়ার উপযুক্ত সময় মার্চ থেকে মে। এ সময়টায় করোনার কারণে দেশে যোগাযোগব্যবস্থা স্বাভাবিক না থাকায় খামারিরা হ্যাচারিগুলো থেকে পোনা আনতে যেতে পারেননি। নদী–খাল–বিলে মাছ ধরাও কমে গেছে। তার ওপরে মাছের দাম ও বিক্রি দুই–ই তিন মাস ধরে কমছে তো কমছেই।

অথচ গত বছরই মাছের উৎপাদনে বাংলাদেশ রেকর্ড গড়েছে। স্বাদুপানির মাছে বাংলাদেশ তার তৃতীয় স্থানটি ধরে রেখে উৎপাদন বাড়ানোর হারে দ্বিতীয় স্থানে উঠে এসেছে। চাষের মাছে দেশ গত ছয় বছরের মতোই পঞ্চম স্থান রয়েছে।

বাংলাদেশ মৎস্য অধিদপ্তরের সাবেক মহাপরিচালক আরিফ আজাদ প্রথম আলোকে বলেন, মৎস্য চাষিরা চারদিক থেকে বিপদে আছেন। গত মার্চ থেকে মে পর্যন্ত তাঁরা পোনা সংগ্রহ ঠিকমতো করতে না পারায় এ বছর মাছের উৎপাদন এমনিতেই কমে আসবে।

ছোট মাছের বিক্রি ও দাম ৩০–৫২ শতাংশ কমেছে। মার্চ থেকে মে পর্যন্ত হ্যাচারি থেকে পোনা সংগ্রহ করতে পারেননি ৪০% খামারি।

বাংলাদেশ মৎস্যজীবী ফেডারেশনের হিসাবে, গত তিন মাসে দেশে মাছের উৎপাদন ৬০ শতাংশ কমে গেছে। গত ২০ মে থেকে সামুদ্রিক মৎস্য সম্পদ বাড়ানোর জন্য সরকার সামুদ্রিক মাছ ধরা বন্ধ রেখেছে। ২৩ জুলাইয়ের আগে মৎস্যজীবীরা সমুদ্রে যেতে পারছেন না। অন্যদিকে গত মার্চ থেকে দেশের বেশির ভাগ রেস্তোরাঁ ও হোটেল বন্ধ রয়েছে। সেখানে প্রচুর মাছ বিক্রি হতো। বাজারে মাছের বিক্রিও অর্ধেকে নেমে এসেছে। বর্ষার এই সময় নদী–খাল–বিল থেকে পাওয়া ছোট ও মাঝারি মাছ বিক্রি বেশি হয়। সেগুলো বিক্রিও অনেক কমে গেছে। ফলে জেলেদের আয় অর্ধেকের বেশি কমে গেছে।

জানতে চাইলে বাংলাদেশ মৎস্যজীবী ফেডারেশনের সভাপতি রবীন্দ্রনাথ বর্মণ প্রথম আলোকে বলেন, ‘মাছের বিক্রি কমে যাওয়ায় কয়েক কোটি মৎস্যজীবীর পথে বসার মতো অবস্থা হয়েছে। মাছ বিক্রি ও ধরা কমে গেলেও করোনার কারণে জেলেরা অন্য পেশায় যেতে পারছেন না। সরকার বিভিন্ন খাতের মানুষকে প্রণোদনা দিচ্ছে। কিন্তু জেলেদের নামে তো কোনো তালিকা দেখছি না। এভাবে চললে আমরা বাঁচব কী করে?’

এ ব্যাপারে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম প্রথম আলোকে বলেন, ‘মৎস্যচাষিদের সমস্যার বিষয়টি আমরা জানি। ক্ষতিগ্রস্ত খামারিদের তালিকা করছি। আশা করি, তাঁদের ক্ষতি পুষিয়ে দিতে আমরা সহযোগিতা করতে পারব।’

Tag :
জনপ্রিয়

৩ এপ্রিল ছুটি ঘোষণা করে প্রজ্ঞাপন জারি

করোনায় মাছের সাফল্যে উল্টো যাত্রা

প্রকাশিত : ১১:২৪ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ৫ জুলাই ২০২০

মাছপ্রিয় বাঙালির কাছে বর্ষা প্রিয় একটি ঋতু। এই সময়ে নতুন পানির ছোট মাছের স্বাদ ভালো হয় বলে প্রচলিত আছে। জেলে আর খামারিরাও এই সময়ের অপেক্ষায় থাকেন। কারণ, বেশি মাছ পাওয়া যায়। কিন্তু এ বছরটা ঠিক তার উল্টো। পুকুরে পোনা ছাড়ার উপযুক্ত সময় মার্চ থেকে মে। এ সময়টায় করোনার কারণে দেশে যোগাযোগব্যবস্থা স্বাভাবিক না থাকায় খামারিরা হ্যাচারিগুলো থেকে পোনা আনতে যেতে পারেননি। নদী–খাল–বিলে মাছ ধরাও কমে গেছে। তার ওপরে মাছের দাম ও বিক্রি দুই–ই তিন মাস ধরে কমছে তো কমছেই।

অথচ গত বছরই মাছের উৎপাদনে বাংলাদেশ রেকর্ড গড়েছে। স্বাদুপানির মাছে বাংলাদেশ তার তৃতীয় স্থানটি ধরে রেখে উৎপাদন বাড়ানোর হারে দ্বিতীয় স্থানে উঠে এসেছে। চাষের মাছে দেশ গত ছয় বছরের মতোই পঞ্চম স্থান রয়েছে।

বাংলাদেশ মৎস্য অধিদপ্তরের সাবেক মহাপরিচালক আরিফ আজাদ প্রথম আলোকে বলেন, মৎস্য চাষিরা চারদিক থেকে বিপদে আছেন। গত মার্চ থেকে মে পর্যন্ত তাঁরা পোনা সংগ্রহ ঠিকমতো করতে না পারায় এ বছর মাছের উৎপাদন এমনিতেই কমে আসবে।

ছোট মাছের বিক্রি ও দাম ৩০–৫২ শতাংশ কমেছে। মার্চ থেকে মে পর্যন্ত হ্যাচারি থেকে পোনা সংগ্রহ করতে পারেননি ৪০% খামারি।

বাংলাদেশ মৎস্যজীবী ফেডারেশনের হিসাবে, গত তিন মাসে দেশে মাছের উৎপাদন ৬০ শতাংশ কমে গেছে। গত ২০ মে থেকে সামুদ্রিক মৎস্য সম্পদ বাড়ানোর জন্য সরকার সামুদ্রিক মাছ ধরা বন্ধ রেখেছে। ২৩ জুলাইয়ের আগে মৎস্যজীবীরা সমুদ্রে যেতে পারছেন না। অন্যদিকে গত মার্চ থেকে দেশের বেশির ভাগ রেস্তোরাঁ ও হোটেল বন্ধ রয়েছে। সেখানে প্রচুর মাছ বিক্রি হতো। বাজারে মাছের বিক্রিও অর্ধেকে নেমে এসেছে। বর্ষার এই সময় নদী–খাল–বিল থেকে পাওয়া ছোট ও মাঝারি মাছ বিক্রি বেশি হয়। সেগুলো বিক্রিও অনেক কমে গেছে। ফলে জেলেদের আয় অর্ধেকের বেশি কমে গেছে।

জানতে চাইলে বাংলাদেশ মৎস্যজীবী ফেডারেশনের সভাপতি রবীন্দ্রনাথ বর্মণ প্রথম আলোকে বলেন, ‘মাছের বিক্রি কমে যাওয়ায় কয়েক কোটি মৎস্যজীবীর পথে বসার মতো অবস্থা হয়েছে। মাছ বিক্রি ও ধরা কমে গেলেও করোনার কারণে জেলেরা অন্য পেশায় যেতে পারছেন না। সরকার বিভিন্ন খাতের মানুষকে প্রণোদনা দিচ্ছে। কিন্তু জেলেদের নামে তো কোনো তালিকা দেখছি না। এভাবে চললে আমরা বাঁচব কী করে?’

এ ব্যাপারে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম প্রথম আলোকে বলেন, ‘মৎস্যচাষিদের সমস্যার বিষয়টি আমরা জানি। ক্ষতিগ্রস্ত খামারিদের তালিকা করছি। আশা করি, তাঁদের ক্ষতি পুষিয়ে দিতে আমরা সহযোগিতা করতে পারব।’