গাছ লাগানোর জন্য যন্ত্রপাতি দিয়ে মাটিকে গাছ লাগানোর উপযোগী করা, মাটিতে জৈব সার মেশানো, বীজ বপন, পানি দেওয়া সব কাজই করবে শিশু। আর সব শেষে ওই শিশু যখন মাটিতে প্রথম গাছের অস্তিত্ব দেখতে পাবে, তখনকার সেই খুশির মুহূর্তটিকে ধরার জন্যই উদ্যোগ নিয়েছেন মাহবুব সুমন। তিনি পেশায় তড়িৎ প্রকৌশলী।
আর শহুরে শিশুদের মুখে এই বিশ্বজয়ের হাসি দেখার জন্য ‘বপন কিট’ শিশুর অভিভাবকের হাতে পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে। নারায়ণগঞ্জ থেকে ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় কিটগুলো বেশির ভাগ সময় মাহবুব সুমন নিজেই পৌঁছে দেন।
তবে শিশুদের জন্য একটা উপহার না থাকলে কেমন দেখায়? তাই মাহবুব সুমন নিজের উদ্ভাবিত বনকাগজ উপহার দিচ্ছেন শিশুদের। পুরোনো পত্রিকা ও কাগজ দিয়ে তৈরি এ বিশেষ কাগজ ছিঁড়ে ছিঁড়ে মাটিতে ফেললে ১০ থেকে ১২ দিনের মধ্যে কাগজের মধ্যে থাকা বীজ থেকে চারা হয়। অন্যদিকে মাটিতে ফেলার আগে শিশুরা এ কাগজে লিখতে পারে বা ছবি আঁকতে পারে।
‘বপন কীট’ হাতে মাহবুব সুমনমাহবুব সুমন বললেন, লাউ, কুমড়া, ঢ্যাঁড়স, পালংশাক, কলমি, পুঁই শাক, শিমের বীজ সরাসরি সিডলিং ট্রের মাটিতে বপন করলে কয়েক দিনের মধ্যে অঙ্কুরিত চারা গাছ দেখতে পায় শিশুরা। তখন শিশুরা খুব খুশি হয়। শহুরে শিশুদের প্রকৃতি ও কৃষির সঙ্গে যোগাযোগটা অনেক কম। অনেকে মাটি ধরতে কেমন তাও জানে না। আর করোনাভাইরাসের বিস্তারের এই সময়ে শিশুরা ঘরে থাকতে থাকতে বিরক্ত হয়ে যাচ্ছে। সময় কাটানোর জন্যও তারা গাছ লাগাতে পারে। এ কাজে শিশু নিজেই পুরো প্রক্রিয়াটা সম্পন্ন করে বলে তাদের মধ্যে অন্যরকম উত্তেজনা থাকে।
বপন কিট বানানোর জন্য বাক্সের জিনিসগুলো বিভিন্ন জায়গা থেকে আনতে হয়। তাই অভিভাবকেরা বিকাশের মাধ্যমে টাকা পরিশোধ করার পর তা পৌঁছে দেওয়া হয়। এই বাক্স পৌঁছে দেওয়ার জন্য আলাদা করে আর কোনো টাকা দিতে হচ্ছে না অভিভাবকদের। এই বাক্স কুরিয়ারে পাঠালে সর্বোচ্চ ৫ দিন লাগবে জিনিসগুলো হাতে পেতে।