ঢাকা , মঙ্গলবার, ০৩ জুন ২০২৫, ২০ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম :
৩ এপ্রিল ছুটি ঘোষণা করে প্রজ্ঞাপন জারি বাংলাদেশ সাবমেরিন কেব্‌ল কোম্পানির সব ধরনের ইন্টারনেটের দাম কমছে ১০ শতাংশ। রমজানে মাধ্যমিক স্কুল খোলা থাকবে ১৫ দিন, প্রাথমিক স্কুল ১০ দিন খালেদা জিয়াকে হাসপাতালে নেওয়া হচ্ছে টেকনাফ সীমান্তের হোয়াইক্যং এলাকা দিয়ে আজ অস্ত্র নিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে মিয়ানমারের সেনা সাদ সাহেব রুজু করার পর দেওবন্দের মাসআলা খতম হয়ে গেছে : মাওলানা আরশাদ মাদানী চলছে বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্বের দ্বিতীয় দিনের বয়ান পুলিশ সদস্যসহ বিশ্ব ইজতেমায় ৭ জনের মৃত্যু বর্তমান সরকারের সঙ্গে সব দেশ কাজ করতে চায়: পররাষ্ট্রমন্ত্রী জয়পুরহাটে স্কুলছাত্র হত্যায় ১১ জনের মৃত্যুদণ্ড

তীব্র স্রোতে ফেরি চলাচল ব্যাহত, ঘাটে যানজট

  • নিউজ ডেস্ক
  • প্রকাশিত : ০৫:৪০ অপরাহ্ন, সোমবার, ২০ জুলাই ২০২০
  • ৬৯১ পঠিত

অস্বাভাবিকভাবে পানি বাড়ায় পদ্মায় প্রবল স্রোতের সৃষ্টি হয়েছে। এতে মাদারীপুরের কাঁঠালবাড়ি ও মুন্সিগঞ্জের শিমুলিয়া নৌপথে ফেরি পারাপারে তিন গুণ সময় লাগায় উভয় পাড়ে যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে। আজ সোমবার উভয় ঘাটে সহস্রাধিক গাড়ি আটকেছিল। এতে যাত্রী ও পরিবহনশ্রমিকেরা পড়েছেন চরম দুর্ভোগে।

বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন সংস্থা (বিআইডব্লিউটিসি) কাঁঠালবাড়ি ফেরিঘাট কর্তৃপক্ষ বলছে, পদ্মা নদীতে এক সপ্তাহের বেশি সময় ধরে পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। পানি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে স্রোতের তীব্রতা ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। স্রোত স্বাভাবিক থাকলে কাঁঠালবাড়ি-শিমুলিয়া নৌপথে ফেরি পারাপারে যেখানে সর্বোচ্চ এক ঘণ্টা সময় লাগে সেখানে এখন সময় লাগছে তিন ঘণ্টারও বেশি।

সোমবার দুপুর ১২টা থেকে বেলা ২টা পর্যন্ত কাঁঠালবাড়ি ফেরিঘাট ঘুরে দেখা যায়, ঘাটের প্রায় দেড় কিলোমিটার এলাকায় যানবাহনের দীর্ঘ সরি। ঘাটের চারটি টার্মিনাল পণ্যবাহী ট্রাকে পরিপূর্ণ। সংযোগ সড়কে ব্যক্তিগত যানবাহন ও পণ্যবাহী ট্রাকের বিশাল লাইন। ঘাটে নতুন আসা পণ্যবাহী ট্রাক, ব্যক্তিগত গাড়ি ও যাত্রীবাহী পরিবহনগুলোকে মাইকিং করে বিকল্প পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌপথ ব্যবহার করার জন্য অনুরোধ জানাচ্ছে ট্রাফিক পুলিশ ও ঘাট কর্তৃপক্ষ। স্রোতের তীব্রতায় ফেরি চলাচল ব্যাহত হওয়ায় লঞ্চ ও স্পিডবোটে যাত্রীদের চাপ বেড়েছে। এসব নৌযান পদ্মার স্রোতের তীব্রতা উপেক্ষা করে ঝুঁকি নিয়েই নদী পাড়ি দিচ্ছে। ফলে এ নৌপথে বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কা করছে স্থানীয়রা।

সোমবার বেলা দেড়টায় ঢাকাগামী পণ্যবাহী ট্রাকের চালক ইলিয়াস হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, ‘বরিশাল থেকে রোববার বিকেলে দুপুরে কাঁঠালবাড়ি ঘাটে আসছি। এখনো রাস্তায় সিরিয়ালে দাঁড়িয়ে আছি। একটুও সামনে আগাইতে পারি নাই।’

ফেরিতে নদী পারাপারে বেশি সময় লাগায় মো. সাইদুল নামে এক যাত্রী স্পিডবোটে কাঁঠালবাড়ি থেকে শিমুলিয়া যাচ্ছেন। তিনি বলেন, ‘ঘাটে ঠিকমতো ফেরি নাই। যা চলে তা–ও অনেক সময় নেয়। লঞ্চেও অনেক ভিড়, তাই স্পিডবোটে উঠেছি।’ এভাবে ঝুঁকি নিয়ে আসার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘দ্রুত যেতে হবে তাই ঝুঁকি মেনেই উঠেছি। আর লাইফ জ্যাকেটও পরেছি। আল্লাহর রহমতে কিছু হবে না।’

ঢাকা থেকে মাদারীপুরগামী যাত্রী তরিকুল ইসলাম বলেন, ‘সকাল ৯টায় শিমুলিয়া ঘাটে এসে দেখি বিশাল লাইন। পন্টুনের চারপাশ পানিতে ভর্তি। মোটরসাইকেল নিয়ে পন্টুন বেয়ে ফেরিতে ওঠা খুবই ঝুঁকি। তাই দুর্ভোগ মাথায় নিয়ে উল্টো ঘুরে পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌপথ ধরে মাদারীপুরে আসি।’

জানতে চাইলে বিআইডব্লিউটিসি কাঁঠালবাড়ি ফেরিঘাটের ব্যবস্থাপক আবদুল আলীম প্রথম আলোকে বলেন, ‘স্রোতের তীব্রতার কারণে রাতে ফেরি বন্ধ রাখি। দিনে খুবই সীমিত আকারে ফেরি চলে। যা চলে তা পারাপারে দ্বিগুণের বেশি সময় লাগে। তাই ঘাটে পণ্যবাহী ট্রাকসহ কয়েক শ যানবাহন আটকা পড়েছে। এ পরিস্থিতি কবে নাগাদ ঠিক হবে, তা এখনো ঠিকমতো বলতে পারছি না।’

কাঁঠালবাড়ি ঘাটের ট্রাফিক পুলিশের পরিদর্শক আশিকুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ‘ফেরি না চলায় আমাদের ঘাটে সাত শর মতো গাড়ি আছে। এখানে টার্মিনালে ৮ থেকে ১০ দিন আগেরও ট্রাক আটকা পড়ে আছে। ফেরি ঠিকমতো না চলায় ট্রাকগুলো পারাপার হতে পারছে না। আমরা আমাদের সাধ্যমতো যানবাহনগুলো নিয়ন্ত্রণে কাজ করছি।’

Tag :
জনপ্রিয়

৩ এপ্রিল ছুটি ঘোষণা করে প্রজ্ঞাপন জারি

তীব্র স্রোতে ফেরি চলাচল ব্যাহত, ঘাটে যানজট

প্রকাশিত : ০৫:৪০ অপরাহ্ন, সোমবার, ২০ জুলাই ২০২০

অস্বাভাবিকভাবে পানি বাড়ায় পদ্মায় প্রবল স্রোতের সৃষ্টি হয়েছে। এতে মাদারীপুরের কাঁঠালবাড়ি ও মুন্সিগঞ্জের শিমুলিয়া নৌপথে ফেরি পারাপারে তিন গুণ সময় লাগায় উভয় পাড়ে যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে। আজ সোমবার উভয় ঘাটে সহস্রাধিক গাড়ি আটকেছিল। এতে যাত্রী ও পরিবহনশ্রমিকেরা পড়েছেন চরম দুর্ভোগে।

বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন সংস্থা (বিআইডব্লিউটিসি) কাঁঠালবাড়ি ফেরিঘাট কর্তৃপক্ষ বলছে, পদ্মা নদীতে এক সপ্তাহের বেশি সময় ধরে পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। পানি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে স্রোতের তীব্রতা ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। স্রোত স্বাভাবিক থাকলে কাঁঠালবাড়ি-শিমুলিয়া নৌপথে ফেরি পারাপারে যেখানে সর্বোচ্চ এক ঘণ্টা সময় লাগে সেখানে এখন সময় লাগছে তিন ঘণ্টারও বেশি।

সোমবার দুপুর ১২টা থেকে বেলা ২টা পর্যন্ত কাঁঠালবাড়ি ফেরিঘাট ঘুরে দেখা যায়, ঘাটের প্রায় দেড় কিলোমিটার এলাকায় যানবাহনের দীর্ঘ সরি। ঘাটের চারটি টার্মিনাল পণ্যবাহী ট্রাকে পরিপূর্ণ। সংযোগ সড়কে ব্যক্তিগত যানবাহন ও পণ্যবাহী ট্রাকের বিশাল লাইন। ঘাটে নতুন আসা পণ্যবাহী ট্রাক, ব্যক্তিগত গাড়ি ও যাত্রীবাহী পরিবহনগুলোকে মাইকিং করে বিকল্প পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌপথ ব্যবহার করার জন্য অনুরোধ জানাচ্ছে ট্রাফিক পুলিশ ও ঘাট কর্তৃপক্ষ। স্রোতের তীব্রতায় ফেরি চলাচল ব্যাহত হওয়ায় লঞ্চ ও স্পিডবোটে যাত্রীদের চাপ বেড়েছে। এসব নৌযান পদ্মার স্রোতের তীব্রতা উপেক্ষা করে ঝুঁকি নিয়েই নদী পাড়ি দিচ্ছে। ফলে এ নৌপথে বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কা করছে স্থানীয়রা।

সোমবার বেলা দেড়টায় ঢাকাগামী পণ্যবাহী ট্রাকের চালক ইলিয়াস হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, ‘বরিশাল থেকে রোববার বিকেলে দুপুরে কাঁঠালবাড়ি ঘাটে আসছি। এখনো রাস্তায় সিরিয়ালে দাঁড়িয়ে আছি। একটুও সামনে আগাইতে পারি নাই।’

ফেরিতে নদী পারাপারে বেশি সময় লাগায় মো. সাইদুল নামে এক যাত্রী স্পিডবোটে কাঁঠালবাড়ি থেকে শিমুলিয়া যাচ্ছেন। তিনি বলেন, ‘ঘাটে ঠিকমতো ফেরি নাই। যা চলে তা–ও অনেক সময় নেয়। লঞ্চেও অনেক ভিড়, তাই স্পিডবোটে উঠেছি।’ এভাবে ঝুঁকি নিয়ে আসার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘দ্রুত যেতে হবে তাই ঝুঁকি মেনেই উঠেছি। আর লাইফ জ্যাকেটও পরেছি। আল্লাহর রহমতে কিছু হবে না।’

ঢাকা থেকে মাদারীপুরগামী যাত্রী তরিকুল ইসলাম বলেন, ‘সকাল ৯টায় শিমুলিয়া ঘাটে এসে দেখি বিশাল লাইন। পন্টুনের চারপাশ পানিতে ভর্তি। মোটরসাইকেল নিয়ে পন্টুন বেয়ে ফেরিতে ওঠা খুবই ঝুঁকি। তাই দুর্ভোগ মাথায় নিয়ে উল্টো ঘুরে পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌপথ ধরে মাদারীপুরে আসি।’

জানতে চাইলে বিআইডব্লিউটিসি কাঁঠালবাড়ি ফেরিঘাটের ব্যবস্থাপক আবদুল আলীম প্রথম আলোকে বলেন, ‘স্রোতের তীব্রতার কারণে রাতে ফেরি বন্ধ রাখি। দিনে খুবই সীমিত আকারে ফেরি চলে। যা চলে তা পারাপারে দ্বিগুণের বেশি সময় লাগে। তাই ঘাটে পণ্যবাহী ট্রাকসহ কয়েক শ যানবাহন আটকা পড়েছে। এ পরিস্থিতি কবে নাগাদ ঠিক হবে, তা এখনো ঠিকমতো বলতে পারছি না।’

কাঁঠালবাড়ি ঘাটের ট্রাফিক পুলিশের পরিদর্শক আশিকুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ‘ফেরি না চলায় আমাদের ঘাটে সাত শর মতো গাড়ি আছে। এখানে টার্মিনালে ৮ থেকে ১০ দিন আগেরও ট্রাক আটকা পড়ে আছে। ফেরি ঠিকমতো না চলায় ট্রাকগুলো পারাপার হতে পারছে না। আমরা আমাদের সাধ্যমতো যানবাহনগুলো নিয়ন্ত্রণে কাজ করছি।’