ঢাকা , রবিবার, ০৪ মে ২০২৫, ২১ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম :
৩ এপ্রিল ছুটি ঘোষণা করে প্রজ্ঞাপন জারি বাংলাদেশ সাবমেরিন কেব্‌ল কোম্পানির সব ধরনের ইন্টারনেটের দাম কমছে ১০ শতাংশ। রমজানে মাধ্যমিক স্কুল খোলা থাকবে ১৫ দিন, প্রাথমিক স্কুল ১০ দিন খালেদা জিয়াকে হাসপাতালে নেওয়া হচ্ছে টেকনাফ সীমান্তের হোয়াইক্যং এলাকা দিয়ে আজ অস্ত্র নিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে মিয়ানমারের সেনা সাদ সাহেব রুজু করার পর দেওবন্দের মাসআলা খতম হয়ে গেছে : মাওলানা আরশাদ মাদানী চলছে বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্বের দ্বিতীয় দিনের বয়ান পুলিশ সদস্যসহ বিশ্ব ইজতেমায় ৭ জনের মৃত্যু বর্তমান সরকারের সঙ্গে সব দেশ কাজ করতে চায়: পররাষ্ট্রমন্ত্রী জয়পুরহাটে স্কুলছাত্র হত্যায় ১১ জনের মৃত্যুদণ্ড

দ্বিতীয় দফায় ২ দিনের রিমান্ডে সাবরিনা

  • নিউজ ডেস্ক
  • প্রকাশিত : ০৪:১১ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৭ জুলাই ২০২০
  • ৭৩৬ পঠিত

করোনার নমুনা পরীক্ষার নামে জালিয়াতির মামলায় জেকেজি হেলথ কেয়ারের চেয়ারম্যান চিকিৎসক সাবরিনা আরিফ চৌধুরীকে দ্বিতীয় দফা জিজ্ঞাসাবাদে দুই দিনের রিমান্ডে নেওয়ার অনুমতি দিয়েছেন আদালত।

আজ শুক্রবার দুপুরে ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটান ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালত এই আদেশ দেন।

সাবরিনাকে প্রথম দফায় ৩ দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়। গতকাল বৃহস্পতিবার তাঁর রিমান্ডের তৃতীয় দিন শেষ হয়।

একই মামলায় সাবরিনার স্বামী জেকেজি হেলথকেয়ারের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আরিফুল হক চৌধুরীকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করছে ডিবি। আরিফুলকে গত বুধবার ৪ দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়।

গোয়েন্দা কর্মকর্তারা জানান, রিমান্ডে আরিফুল ও সাবরিনার পৃথক বক্তব্য নেওয়া হয়েছে। গতকাল তাঁদের মুখোমুখি করে জিজ্ঞাসাবাদের কথা ছিল। কিন্তু সময় স্বল্পতার কারণে গতকাল তা পুরোপুরি করা সম্ভব হয়নি।

পরীক্ষা না করেই করোনা শনাক্তের ফল দেওয়ার সঙ্গে নিজেদের সম্পৃক্ততা স্বীকার করেননি আরিফুল ও সাবরিনা। তাঁরা একে অন্যকে দোষারোপ করেছেন। তবে গোয়েন্দা কর্মকর্তারা বলছেন, পারিপার্শ্বিক তথ্যপ্রমাণ ও জেকেজির কর্মচারীদের দেওয়া তথ্যে তাঁদের সম্পৃক্ততার বিষয়টি নিশ্চিত। তবে অভিযোগের দালিলিক প্রমাণ ও পুঙ্খানুপুঙ্খ বিশ্লেষণের জন্য দুজনকেই তাঁরা আরও জিজ্ঞাসাবাদ করবেন।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তারা বলেন, গ্রেপ্তারের পর আরিফুল প্রতারণার জন্য তাঁর স্ত্রী সাবরিনাসহ প্রতিষ্ঠানের চারজনকে দায়ী করেন। সাবরিনা সব জালিয়াতির জন্য তাঁর স্বামীকে দুষছেন। সাবরিনা দাবি করেছেন, জেকেজির জালিয়াতির বিষয়টি তিনি অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক নাসিমা সুলতানাকে আগেই জানিয়েছিলেন। আরিফুলের সঙ্গ ত্যাগ করে তিনি বাবার বাসায় চলে যান। জালিয়াতির সঙ্গে তাঁর কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই।

তবে নাসিমা সুলতানা প্রথম আলোকে বলেন, সাবরিনা তাঁর কাছে একবারই এসেছিলেন। তখন তিনি বলেছিলেন, স্বামী কর্মস্থলে গিয়ে তাঁকে মারধর করেছেন। তিনি জেকেজির সঙ্গে আর নেই। এ সময় তিনি জেকেজির জালিয়াতির বিষয়ে কিছু বলেননি। নাসিমা জানান, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর যখন জালিয়াতির বিষয়টি জানতে পারে, তখন একটি গোয়েন্দা সংস্থাকে জানানো হয়।

তদন্ত কর্মকর্তারা বলেছেন, সাবরিনা নিজেকে জেকেজির চেয়ারম্যান না বলে দাবি করেছেন। অথচ জেকেজি থেকে তিনি চেয়ারম্যান হিসেবে মাসিক যে বেতন নিতেন, তার স্লিপ তাঁরা সংগ্রহ করেছেন।

বাসা থেকে টাকার বিনিময়ে নমুনা সংগ্রহ করা এবং পরীক্ষা ছাড়াই নমুনার ফল দেওয়ার অভিযোগে তেজগাঁও থানা–পুলিশ গত ২৩ জুন জেকেজির সিইও আরিফুল হক চৌধুরীসহ ছয়জনকে গ্রেপ্তার করে। এরই ধারাবাহিকতায় ১২ জুলাই সাবরিনাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

এই মামলায় গ্রেপ্তার জেকেজির সাবেক কর্মকর্তা হুমায়ূন কবীর ও তাঁর স্ত্রী তানজিনা পাটোয়ারী আদালতে দেওয়া স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে বলেছিলেন, তাঁরা বাসায় গিয়ে নমুনা সংগ্রহ করতেন। বাংলাদেশিদের কাছ থেকে ৫ হাজার টাকা ও বিদেশিদের কাছ থেকে ১০০ ডলার নিতেন। নমুনা সংগ্রহের পর তা ড্রেনে বা ওয়াশরুমে ফেলে তাঁরা নষ্ট করে ফেলতেন। নমুনা সংগ্রহের সময় তাঁরা শারীরিক লক্ষণের বিষয়ে একটি ফরম পূরণ করতে বলতেন। সেই লক্ষণের আলোকেই নিজেদের মনমতো পরীক্ষার প্রতিবেদন দিতেন।

Tag :
জনপ্রিয়

৩ এপ্রিল ছুটি ঘোষণা করে প্রজ্ঞাপন জারি

দ্বিতীয় দফায় ২ দিনের রিমান্ডে সাবরিনা

প্রকাশিত : ০৪:১১ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৭ জুলাই ২০২০

করোনার নমুনা পরীক্ষার নামে জালিয়াতির মামলায় জেকেজি হেলথ কেয়ারের চেয়ারম্যান চিকিৎসক সাবরিনা আরিফ চৌধুরীকে দ্বিতীয় দফা জিজ্ঞাসাবাদে দুই দিনের রিমান্ডে নেওয়ার অনুমতি দিয়েছেন আদালত।

আজ শুক্রবার দুপুরে ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটান ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালত এই আদেশ দেন।

সাবরিনাকে প্রথম দফায় ৩ দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়। গতকাল বৃহস্পতিবার তাঁর রিমান্ডের তৃতীয় দিন শেষ হয়।

একই মামলায় সাবরিনার স্বামী জেকেজি হেলথকেয়ারের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আরিফুল হক চৌধুরীকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করছে ডিবি। আরিফুলকে গত বুধবার ৪ দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়।

গোয়েন্দা কর্মকর্তারা জানান, রিমান্ডে আরিফুল ও সাবরিনার পৃথক বক্তব্য নেওয়া হয়েছে। গতকাল তাঁদের মুখোমুখি করে জিজ্ঞাসাবাদের কথা ছিল। কিন্তু সময় স্বল্পতার কারণে গতকাল তা পুরোপুরি করা সম্ভব হয়নি।

পরীক্ষা না করেই করোনা শনাক্তের ফল দেওয়ার সঙ্গে নিজেদের সম্পৃক্ততা স্বীকার করেননি আরিফুল ও সাবরিনা। তাঁরা একে অন্যকে দোষারোপ করেছেন। তবে গোয়েন্দা কর্মকর্তারা বলছেন, পারিপার্শ্বিক তথ্যপ্রমাণ ও জেকেজির কর্মচারীদের দেওয়া তথ্যে তাঁদের সম্পৃক্ততার বিষয়টি নিশ্চিত। তবে অভিযোগের দালিলিক প্রমাণ ও পুঙ্খানুপুঙ্খ বিশ্লেষণের জন্য দুজনকেই তাঁরা আরও জিজ্ঞাসাবাদ করবেন।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তারা বলেন, গ্রেপ্তারের পর আরিফুল প্রতারণার জন্য তাঁর স্ত্রী সাবরিনাসহ প্রতিষ্ঠানের চারজনকে দায়ী করেন। সাবরিনা সব জালিয়াতির জন্য তাঁর স্বামীকে দুষছেন। সাবরিনা দাবি করেছেন, জেকেজির জালিয়াতির বিষয়টি তিনি অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক নাসিমা সুলতানাকে আগেই জানিয়েছিলেন। আরিফুলের সঙ্গ ত্যাগ করে তিনি বাবার বাসায় চলে যান। জালিয়াতির সঙ্গে তাঁর কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই।

তবে নাসিমা সুলতানা প্রথম আলোকে বলেন, সাবরিনা তাঁর কাছে একবারই এসেছিলেন। তখন তিনি বলেছিলেন, স্বামী কর্মস্থলে গিয়ে তাঁকে মারধর করেছেন। তিনি জেকেজির সঙ্গে আর নেই। এ সময় তিনি জেকেজির জালিয়াতির বিষয়ে কিছু বলেননি। নাসিমা জানান, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর যখন জালিয়াতির বিষয়টি জানতে পারে, তখন একটি গোয়েন্দা সংস্থাকে জানানো হয়।

তদন্ত কর্মকর্তারা বলেছেন, সাবরিনা নিজেকে জেকেজির চেয়ারম্যান না বলে দাবি করেছেন। অথচ জেকেজি থেকে তিনি চেয়ারম্যান হিসেবে মাসিক যে বেতন নিতেন, তার স্লিপ তাঁরা সংগ্রহ করেছেন।

বাসা থেকে টাকার বিনিময়ে নমুনা সংগ্রহ করা এবং পরীক্ষা ছাড়াই নমুনার ফল দেওয়ার অভিযোগে তেজগাঁও থানা–পুলিশ গত ২৩ জুন জেকেজির সিইও আরিফুল হক চৌধুরীসহ ছয়জনকে গ্রেপ্তার করে। এরই ধারাবাহিকতায় ১২ জুলাই সাবরিনাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

এই মামলায় গ্রেপ্তার জেকেজির সাবেক কর্মকর্তা হুমায়ূন কবীর ও তাঁর স্ত্রী তানজিনা পাটোয়ারী আদালতে দেওয়া স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে বলেছিলেন, তাঁরা বাসায় গিয়ে নমুনা সংগ্রহ করতেন। বাংলাদেশিদের কাছ থেকে ৫ হাজার টাকা ও বিদেশিদের কাছ থেকে ১০০ ডলার নিতেন। নমুনা সংগ্রহের পর তা ড্রেনে বা ওয়াশরুমে ফেলে তাঁরা নষ্ট করে ফেলতেন। নমুনা সংগ্রহের সময় তাঁরা শারীরিক লক্ষণের বিষয়ে একটি ফরম পূরণ করতে বলতেন। সেই লক্ষণের আলোকেই নিজেদের মনমতো পরীক্ষার প্রতিবেদন দিতেন।