দিনাজপুরের নবাবগঞ্জ উপজেলার ভাদুরিয়া হাটে দিনাজপুর-৬ আসনের এমপি শিবলী সাদিকের নাম ভাঙিয়ে ব্যাপক চাঁদাবাজি ও দোকানঘর জবরদখল করে ইজারা দেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
তবে স্থানীয় এমপি ও উপজেলা প্রশাসন এ খবর পেয়ে জবর দখলকৃত শতাধিক দোকানঘর ভেঙে গুঁড়িয়ে দিয়েছেন।
অভিযোগে জানা যায়, ভাদুরিয়াহাট বাজারটি ১৪২৭ বাংলা সনের জন্য ভাদুরিয়া জামে মসজিদ কমিটি ইজারা নেয়। কিন্তু স্থানীয় ছাত্রলীগ-যুবলীগ নামধারী নেতারা প্রভাব খাটিয়ে হাটবাজারের কর্তৃত্ব নিয়ে নেন। তারা স্থানীয় এমপি শিবলী সাদিকের নাম ভাঙিয়ে বাজারের শতাধিক দোকান থেকে ৫০ লক্ষাধিক টাকা আদায় করেছেন।
এই টাকা যৎসামান্য মসজিদ কমিটিকে দিয়ে সব টাকা নিজেদের মধ্যে ভাগ বাটোয়ারা করে আত্মসাৎ করেছেন।
এ কথা প্রকাশ হলে এমপি শিবলী সাদিক বিষয়টি খতিয়ে দেখার জন্য স্থানীয় প্রশাসনকে নির্দেশ দেন। উপজেলা প্রশাসন ঘটনার সত্যতা পেয়ে সোমবার শতাধিক দোকানঘর গুঁড়িয়ে দিয়েছে।
এ ব্যাপারে ঘর হারানো দোকানিদের মধ্যে আয়নুল, লিটন, আবদুর রাজ্জাক, সমেজ উদ্দিন, আক্কাস আলীসহ শতাধিক দোকানি যুগান্তরকে বলেন, তারা খোলা জায়গায় দোকান করে আসছিলেন। কিন্তু স্থানীয় ছাত্রলীগ-যুবলীগ নামধারী নেতারা টাকার বিনিময়ে দোকানিদের পাকা-আধাপাকা দোকান তৈরি করে স্থায়ীভাবে দোকান করার প্রস্তাব দেন।
স্থায়ী দোকান পাওয়ার লোভে পড়ে দোকানিরা ৫০ হাজার থেকে ৯ লাখ পর্যন্ত টাকা দিয়ে স্থানীয় ছাত্রলীগ-যুবলীগ নামধারী নেতা ও স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের ছত্রছায়ায় দোকানঘর তৈরি করে নেন।
ভাদুরিয়া ইউপি চেয়ারম্যান আসমান জামিন যুগান্তরকে বলেন, গত দুই বছর ধরে মসজিদের নামে হাট ইজারা দেয়া হয়। সেখান থেকে সামান্য টাকা পাওয়ায় হাটের কোনো উন্নয়ন করা যায়নি। সম্প্রতি স্থানীয় ছাত্রলীগ-যুবলীগ নামধারী নেতারা টাকার বিনিময়ে হাটের জায়গায় দোকান তৈরি করে দেয়ায় হাটে চলাচল আরও কঠিন হয়ে পড়েছে।
বিষয়টি আমি এমপি শিবলী সাদিককে জানিয়েছি। এ বিষয়ে আমার কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই।
নবাবগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার নাজমুন্নাহার যুগান্তরকে বলেন, হঠাৎ করে ভাদুরিয়া বাজারের জায়গা দখল করে শতাধিক দোকানঘর তৈরি করা হয়েছিল। উপজেলা প্রশাসন দোকানঘর ভেঙে দিয়ে জবরদখলকৃত জায়গা উদ্ধার করেছে। এখন থেকে দোকানিরা খোলা স্থানে দোকান করতে পারবেন।
দিনাজপুর-৬ আসনের এমপি শিবলী সাদিক যুগান্তরকে বলেন, নেতার নাম ভাঙিয়ে স্বার্থান্বেষী মহল দলের সুনাম ক্ষুণ্ণ করতে এ কাজটি করেছে। এতে আমার কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই। অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।