পদ্মা নদীতে পানি বাড়া অব্যাহত থাকায় মানিকগঞ্জের হরিরামপুর উপজেলার অধিকাংশ এলাকা প্লাবিত হয়েছে। পানির স্রোতে উপজেলা সদরের প্রধান সড়কের তিনটি স্থান ধসে গেছে। সড়কের ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। এতে উপজেলা সদরে চলাচল বিঘ্নিত হচ্ছে। পানিবন্দী হয়ে পড়েছে ২০ হাজারের বেশি পরিবার। চরম দুর্ভোগে পড়েছে তারা।
লেছড়াগঞ্জ ইউপির চেয়ারম্যান সৈয়দ হাসান ইমাম বলেন, তাঁর ইউনিয়নসহ আরও তিনটি ইউনিয়ন পদ্মা নদীর মাঝে অবস্থিত। শুক্রবার লেছড়াগঞ্জের নটাখোলা, সিলিমপুর, গঙ্গারামপুরসহ ১০টি গ্রামের অধিকাংশ মানুষের বাড়িতে পানি ওঠায় চরম দুর্দশার মধ্যে পড়েছে তারা।
কাঞ্চনপুর ইউপির চেয়ারম্যান ইউনুস উদ্দিন গাজী জানান, তাঁর ইউনিয়নের অধিকাংশ এলাকা বন্যাকবলিত হয়েছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) মানিকগঞ্জ কার্যালয়ের পানি পরিমাপক (গেজ রিডার) ফারুক আহমেদ বলেন, দেশের উত্তরাঞ্চলে নদ-নদীতে পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। এ কারণে মানিকগঞ্জেও নদ-নদীতে পানি বাড়ছে। জেলায় মারাত্মক বন্যা হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
ফারুক আহমেদ জানান, আজ শনিবার সকাল নয়টায় শিবালয় উপজেলার আরিচা পয়েন্টে যমুনা নদীর পানি বিপৎসীমার ৭০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। হরিরামপুরের পদ্মার পানিও বিপৎসীমার প্রায় ৭০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল।
উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান দেওয়ান সাইদুর রহমান বলেন, জেলার সবচেয়ে নিচু এলাকা পদ্মা নদীতীরবর্তী এই উপজেলা। পানি বৃদ্ধির কারণে উপজেলার অধিকাংশ এলাকা প্লাবিত হয়েছে। বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাপন। তিনি বলেন, উপজেলা সদরের প্রধান সড়কের পাটগ্রাম মোড়, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সামনে ও উপজেলা বাসস্ট্যান্ড এলাকায় সড়ক ধসে গেছে। এতে উপজেলা সদরে যাতায়াত মারাত্মক বিঘ্নিত হচ্ছে। অনেক এলাকায় পানির স্রোতে কাঁচা রাস্তা ধসে গেছে।
হরিরামপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সাবিনা ইয়াসমিন বলেন, বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় সব প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। পানি বিশুদ্ধকরণ বড়ি মজুত রাখা হয়েছে। উপজেলায় বন্যাকবলিত মানুষের থাকার জন্য দুটি আশ্রয়কেন্দ্রসহ ২০টি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রস্তুত রাখা হয়েছে। ইতিমধ্যে চারটি ইউনিয়নের ৪০০ পরিবারের মাঝে শুকনা খাবার বিতরণ করা হয়েছে। পর্যায়ক্রমে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের মধ্যে খাদ্য ও আর্থিক সহায়তা দেওয়া হবে।