মাগুরার মহম্মদপুরের নহাটা ইউনিয়নে স্কুল ছাত্রীকে ধর্ষণের ঘটনা ঘটে। উল্টো ওই ছাত্রীর পরিবারকে ১ লাখ ২৫ হাজার টাকা জরিমানা ও ছয় মাসের জন্য সমাজচ্যুত করা হয় গ্রাম্য সালিশে। এই ঘটনায় আতঙ্কিত ওই পরিবারের নিরাপত্তায় পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
সালিসের টাকা না দেওয়ায় আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা কামাল সিদ্দিকী লিটনের নির্দেশে গত সোমবার সকালে নহাটা ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক সদস্য ওবায়দুর রহমানের নেতৃত্বে কয়েকজন ভুক্তভুগীদের বাড়ি থেকে একটি গরু, চারটি ছাগল, একটি ভ্যান, শ্যালো মেশিনসহ বেশ কিছু মালামাল ছিনিয়ে নেয়। এ ঘটনায় ওই পরিবার আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা কামাল সিদ্দিকী লিটনসহ ১৬ জনের নামে মামলা করায় ছাত্রীর পরিবার এখন চরম আতঙ্কে রয়েছে বলে জানা গেছে। চরম আতঙ্কে থাকায় তাদের বাড়িতে নিয়মিত পুলিশ মোতায়েনও রয়েছে।
সরেজমিনে ওই ছাত্রীর পরিবার জানায়, এখন পুলিশ মোতায়েন রয়েছে তাই ভালো আছি। প্রতিনিয়ত মোস্তফা কামাল সিদ্দিকী লিটনের লোকজন ভয়ভীতি দেখাচ্ছে। তারা হুমকি দিয়ে বলে পুলিশ কত সময় তোদের নিয়াপত্তা দেবে। পুলিশ না থাকলে আমাদের মেরে ফেলা হবে এবং বাড়ির ভাংচুর করে সব কিছু নিয়ে নেবে। তারা আরো বলেন এখন পুলিশ বাঁচালে বাঁচব তাছাড়া আর কোন উপায় দেখছি না।
মাগুরার পুলিশ সুপার খাঁন মুহম্মদ রেজোয়ান যুগান্তরকে জানান, বুধবার দুপুরে ওই ছাত্রীর বাড়িতে গিয়ে নিরাপত্তা নিশ্চিত করেছি। আতঙ্কের কোন কারণ নেই। আমার সেল ফোন নাম্বার দিয়েছি। কোন প্রকার নিরাপত্তাহীনতায় ভুগলে আমাকে জানাতে বলেছি।
মহম্মদপুর থানার ওসি তারক বিশ্বাস যুগান্তরকে বলেন, ওই মামলায় ইতিমধ্যে তিনজন আসামীকে আটক করে আদালতে প্রেরণ করেছি। এছাড়া প্রধান আসামী আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা কামাল সিদ্দিকী লিটনসহ অন্য আসামীদের আটক করতে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
উল্লেখ্য, ধর্ষণ হওয়া ছাত্রী মাগুরা সদর থানার ভাংগুরা গ্রামের শহিদুল ইসলামের ছেলে শাহাবুল ইসলাম (১৯) সক্ষে প্রেমের সর্ম্পক গড়ে ওঠে। ছেলেটির ধর্ষণের ফলে ছাত্রটি অন্তসত্ত্বা হয়। বিষয়টি জানাজানি হলে স্থানীয় আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা কামাল সিদ্দিকী লিটনের কাছে জানায়। তিনি গ্রাম্য সালিশের মাধ্যমে ধর্ষণের শিকার ছাত্রীর পরিবারকে ১ লাখ ২৫ হাজার টাকা জরিমানা ও ছয় মাসের জন্য সমাজচ্যুত করা হয়।
ওই টাকা না দেওয়ায় কয়েকজন ভুক্তভুগীদের বাড়ি থেকে একটি গরু, চারটি ছাগল, একটি ভ্যান, শ্যালো মেশিনসহ বেশ কিছু জিনিসপত্র লুটপাট করে ছিনিয়ে নেয়। খবর পেয়ে পুলিশ ছিনিয়ে নেয়া অধিকাংশ মালামাল উদ্ধার করে। এ ঘটনায় আওয়ামীলীগ নেতা মোস্তফা কামাল সিদ্দিকী লিটন, ওবায়দুর রহমানসহ ১৬জনকে আসামী করে চাঁদাবাজির মামলা হয়।