ঢাকা , সোমবার, ০৫ মে ২০২৫, ২১ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম :
৩ এপ্রিল ছুটি ঘোষণা করে প্রজ্ঞাপন জারি বাংলাদেশ সাবমেরিন কেব্‌ল কোম্পানির সব ধরনের ইন্টারনেটের দাম কমছে ১০ শতাংশ। রমজানে মাধ্যমিক স্কুল খোলা থাকবে ১৫ দিন, প্রাথমিক স্কুল ১০ দিন খালেদা জিয়াকে হাসপাতালে নেওয়া হচ্ছে টেকনাফ সীমান্তের হোয়াইক্যং এলাকা দিয়ে আজ অস্ত্র নিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে মিয়ানমারের সেনা সাদ সাহেব রুজু করার পর দেওবন্দের মাসআলা খতম হয়ে গেছে : মাওলানা আরশাদ মাদানী চলছে বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্বের দ্বিতীয় দিনের বয়ান পুলিশ সদস্যসহ বিশ্ব ইজতেমায় ৭ জনের মৃত্যু বর্তমান সরকারের সঙ্গে সব দেশ কাজ করতে চায়: পররাষ্ট্রমন্ত্রী জয়পুরহাটে স্কুলছাত্র হত্যায় ১১ জনের মৃত্যুদণ্ড

যেখানে বর্ষায় একমাত্র ভরসা নৌকা

  • নিউজ ডেস্ক
  • প্রকাশিত : ১২:২৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ৫ জুলাই ২০২০
  • ৮৪৬ পঠিত

রাজশাহীর বাঘা উপজেলায় বর্ষা মৌসুমে পদ্মার চরের ২০ হাজার মানুষের ভরসা একমাত্র নৌকা। বর্ষায় উপজেলার চকরাজাপুর পদ্মার চরের মানুষের চরম দুর্ভোগের মধ্যে দিন কাটে। এ ছাড়া নদীভাঙনের শিকার হন।

জানা যায়, পদ্মার ভাঙনের ফলে এলাকার মানুষের বেদনা ছাড়া আর কিছুই নেই। তারা যাতায়াত, বিদ্যুৎ, চিকিৎসা, আইনশৃঙ্খলা, হাটবাজারসহ মৌলিক সব সুবিধা থেকে বঞ্চিত। এক নাজুক অবস্থার মাঝে চলে চরবাসীর দৈনন্দিন জীবন। তবে পদ্মার ১৫টি চরের মধ্যে ছয়টি চরের দুই হাজার ৪৮৬ গ্রাহকের জন্য ৫৪ কিলোমিটার এলাকায় বিদ্যুতের ব্যবস্থা করা হয়েছে। বর্তমানে খুঁটি নির্মাণের কাজ চলছে।

এ ছাড়া বাঁধ নির্মাণের বিষয়টি একনেকে পাস হলেও কার্যক্রম শুরু হয়নি।

চরের মানুষ বন্যা, সন্ত্রাসী, দখল, চাঁদাবাজি, ডাকাতির অত্যাচার মোকাবেলা করে তাদের টিকে থাকতে হয়। গড়গড়ি ও পাকুড়িয়া এবং মনিগ্রাম ইউনিয়ন ভেঙে নতুন চকরাজাপুর ইউনিয়ন গঠিত হয়েছে।

এই ইউনিয়নে গত ২০১৬ সালের ৪ জুন প্রথম নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। গড়গড়ি, পাকুড়িয়া ও মনিগ্রাম– এ তিনটি ইউনিয়নের দক্ষিণ দিক দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে বাঘা পদ্মা নদী।

পদ্মার চরের মধ্যে চকরাজাপুর ইউনিয়ন বর্ষাকালে পদ্মার পানিতে বসবাসকারী ও আবাদি জমি একাকার হয়ে যায়।

এই অঞ্চলের রাস্তাগুলো বর্ষায় চেনা যায় না।
এ ছাড়া উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ের কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নেই। কয়েক বছর আগে বন্যায় চৌমাদিয়া, চকরাজাপুর প্রাথমিক ও হাইস্কুল, চরকালীদাসখালী, পূর্ব চকরাজাপুর প্রাথমিক বিদ্যালয় বন্যায় ভেঙে গেলে অন্যত্র স্থানান্তর করা হয়।

প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শ্রেণির শিক্ষার্থীরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে প্রতিদিন নৌকায় যায়। নৌকায় ফিরে আসে। তাদের দুর্গম পথ ডিঙিয়ে আসতে হয় সদরে। চিকিৎসা ক্ষেত্রে একই অবস্থা।

চরের রমজান, মতি, আজাহার, কালু, সিদ্দিক, জমসেদ, আফতাফ, রবিউল, রিপন, তুফান, তারিখ, মোজাম, আতিক বলেন, আমাদের প্রতিদিন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বর্ষা মৌসুমে নৌকায়, খরা মৌসুমে পায়ে হেঁটে চলাচল করতে হয়। এ ছাড়া আমাদের আর কোনো পথ নেই।

চকরাজাপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আজিজুল আযম বলেন, চরে কোনো রাস্তাঘাট ছিল না। ২০১৪ সালের ৫ জুলাই পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম এমপি পলাশী ফতেপুর-চকরাজাপুর সড়কের আড়াই কিলোমিটার পাকা রাস্তা করে দিয়েছেন।

পর্যায়ক্রমে পাকা রাস্তা করার পরিকল্পনা আছে তার। পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর সহায়তায় আমি চেয়ারম্যান হিসেবে চরকে পর্যায়ক্রমে উন্নয়ন করার চেষ্টা করছি।

এ বিষয়ে বাঘা উপজেলা প্রকৌশলী রতন কুমার ফৌজদার বলেন, পদ্মার মধ্যে বাঁধ নির্মাণের কোনো পরিকল্পনা নেই। তবে পদ্মার পাড় বাঁধার বিষয়টি একনেকে পাস হয়ে আছে। চলতি অর্থবছরে কাজ শুরু হওয়ার কথা রয়েছে।

ইতিমধ্যে খায়েরহাটে ৬০০ মিটার ব্রিজ নির্মাণের জন্য মাটি পরীক্ষা করা হয়েছে। এটাও চলতি অর্থবছরে কাজ শুরু হওয়ার কথা রয়েছে। ব্রিজ নির্মাণ হলে পাকা রাস্তার কাজও পর্যায়ক্রমে শুরু করা হবে। তার পর চরবাসীর আর কোনো সমস্যা থাকবে না।

Tag :
জনপ্রিয়

৩ এপ্রিল ছুটি ঘোষণা করে প্রজ্ঞাপন জারি

যেখানে বর্ষায় একমাত্র ভরসা নৌকা

প্রকাশিত : ১২:২৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ৫ জুলাই ২০২০

রাজশাহীর বাঘা উপজেলায় বর্ষা মৌসুমে পদ্মার চরের ২০ হাজার মানুষের ভরসা একমাত্র নৌকা। বর্ষায় উপজেলার চকরাজাপুর পদ্মার চরের মানুষের চরম দুর্ভোগের মধ্যে দিন কাটে। এ ছাড়া নদীভাঙনের শিকার হন।

জানা যায়, পদ্মার ভাঙনের ফলে এলাকার মানুষের বেদনা ছাড়া আর কিছুই নেই। তারা যাতায়াত, বিদ্যুৎ, চিকিৎসা, আইনশৃঙ্খলা, হাটবাজারসহ মৌলিক সব সুবিধা থেকে বঞ্চিত। এক নাজুক অবস্থার মাঝে চলে চরবাসীর দৈনন্দিন জীবন। তবে পদ্মার ১৫টি চরের মধ্যে ছয়টি চরের দুই হাজার ৪৮৬ গ্রাহকের জন্য ৫৪ কিলোমিটার এলাকায় বিদ্যুতের ব্যবস্থা করা হয়েছে। বর্তমানে খুঁটি নির্মাণের কাজ চলছে।

এ ছাড়া বাঁধ নির্মাণের বিষয়টি একনেকে পাস হলেও কার্যক্রম শুরু হয়নি।

চরের মানুষ বন্যা, সন্ত্রাসী, দখল, চাঁদাবাজি, ডাকাতির অত্যাচার মোকাবেলা করে তাদের টিকে থাকতে হয়। গড়গড়ি ও পাকুড়িয়া এবং মনিগ্রাম ইউনিয়ন ভেঙে নতুন চকরাজাপুর ইউনিয়ন গঠিত হয়েছে।

এই ইউনিয়নে গত ২০১৬ সালের ৪ জুন প্রথম নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। গড়গড়ি, পাকুড়িয়া ও মনিগ্রাম– এ তিনটি ইউনিয়নের দক্ষিণ দিক দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে বাঘা পদ্মা নদী।

পদ্মার চরের মধ্যে চকরাজাপুর ইউনিয়ন বর্ষাকালে পদ্মার পানিতে বসবাসকারী ও আবাদি জমি একাকার হয়ে যায়।

এই অঞ্চলের রাস্তাগুলো বর্ষায় চেনা যায় না।
এ ছাড়া উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ের কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নেই। কয়েক বছর আগে বন্যায় চৌমাদিয়া, চকরাজাপুর প্রাথমিক ও হাইস্কুল, চরকালীদাসখালী, পূর্ব চকরাজাপুর প্রাথমিক বিদ্যালয় বন্যায় ভেঙে গেলে অন্যত্র স্থানান্তর করা হয়।

প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শ্রেণির শিক্ষার্থীরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে প্রতিদিন নৌকায় যায়। নৌকায় ফিরে আসে। তাদের দুর্গম পথ ডিঙিয়ে আসতে হয় সদরে। চিকিৎসা ক্ষেত্রে একই অবস্থা।

চরের রমজান, মতি, আজাহার, কালু, সিদ্দিক, জমসেদ, আফতাফ, রবিউল, রিপন, তুফান, তারিখ, মোজাম, আতিক বলেন, আমাদের প্রতিদিন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বর্ষা মৌসুমে নৌকায়, খরা মৌসুমে পায়ে হেঁটে চলাচল করতে হয়। এ ছাড়া আমাদের আর কোনো পথ নেই।

চকরাজাপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আজিজুল আযম বলেন, চরে কোনো রাস্তাঘাট ছিল না। ২০১৪ সালের ৫ জুলাই পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম এমপি পলাশী ফতেপুর-চকরাজাপুর সড়কের আড়াই কিলোমিটার পাকা রাস্তা করে দিয়েছেন।

পর্যায়ক্রমে পাকা রাস্তা করার পরিকল্পনা আছে তার। পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর সহায়তায় আমি চেয়ারম্যান হিসেবে চরকে পর্যায়ক্রমে উন্নয়ন করার চেষ্টা করছি।

এ বিষয়ে বাঘা উপজেলা প্রকৌশলী রতন কুমার ফৌজদার বলেন, পদ্মার মধ্যে বাঁধ নির্মাণের কোনো পরিকল্পনা নেই। তবে পদ্মার পাড় বাঁধার বিষয়টি একনেকে পাস হয়ে আছে। চলতি অর্থবছরে কাজ শুরু হওয়ার কথা রয়েছে।

ইতিমধ্যে খায়েরহাটে ৬০০ মিটার ব্রিজ নির্মাণের জন্য মাটি পরীক্ষা করা হয়েছে। এটাও চলতি অর্থবছরে কাজ শুরু হওয়ার কথা রয়েছে। ব্রিজ নির্মাণ হলে পাকা রাস্তার কাজও পর্যায়ক্রমে শুরু করা হবে। তার পর চরবাসীর আর কোনো সমস্যা থাকবে না।