ঢাকা , মঙ্গলবার, ০৬ মে ২০২৫, ২৩ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম :
৩ এপ্রিল ছুটি ঘোষণা করে প্রজ্ঞাপন জারি বাংলাদেশ সাবমেরিন কেব্‌ল কোম্পানির সব ধরনের ইন্টারনেটের দাম কমছে ১০ শতাংশ। রমজানে মাধ্যমিক স্কুল খোলা থাকবে ১৫ দিন, প্রাথমিক স্কুল ১০ দিন খালেদা জিয়াকে হাসপাতালে নেওয়া হচ্ছে টেকনাফ সীমান্তের হোয়াইক্যং এলাকা দিয়ে আজ অস্ত্র নিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে মিয়ানমারের সেনা সাদ সাহেব রুজু করার পর দেওবন্দের মাসআলা খতম হয়ে গেছে : মাওলানা আরশাদ মাদানী চলছে বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্বের দ্বিতীয় দিনের বয়ান পুলিশ সদস্যসহ বিশ্ব ইজতেমায় ৭ জনের মৃত্যু বর্তমান সরকারের সঙ্গে সব দেশ কাজ করতে চায়: পররাষ্ট্রমন্ত্রী জয়পুরহাটে স্কুলছাত্র হত্যায় ১১ জনের মৃত্যুদণ্ড

সেচ প্রকল্পে জলাবদ্ধতা, আমনের আবাদ নিয়ে শঙ্কা

  • নিউজ ডেস্ক
  • প্রকাশিত : ০৬:১৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ১২ জুলাই ২০২০
  • ৭০৯ পঠিত

কয়েক দিনের টানা বৃষ্টিপাতে চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলায় মেঘনা-ধনাগোদা সেচ প্রকল্পের বেড়িবাঁধের ভেতরে অনেক কৃষিজমিতে জলাবদ্ধতার পরিমাণ বেড়ে গেছে। জলাবদ্ধতা দূর না হওয়ায় সেখানকার এক হাজার হেক্টর কৃষিজমিতে আমনের আবাদ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। এতে চাষিরা দুশ্চিন্তায় পড়েছেন। এর আগে জলাবদ্ধতার কারণে দুই হাজার হেক্টর জমিতে আউশের আবাদ করা যায়নি।

উপজেলা কৃষি কার্যালয় ও চাঁদপুর পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সূত্র জানায়, মেঘনা-ধনাগোদা সেচ প্রকল্পের বেড়িবাঁধের ভেতর চলতি মৌসুমে আট হাজার হেক্টর কৃষিজমিতে আমন ধান আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। এতে আমন উৎপাদনের সম্ভাব্য পরিমাণ ধার্য করা হয় ৩৫ হাজার মেট্রিক টন। গত বছর সেখানে আমন ধান উৎপাদিত হয়েছিল ৩৩ হাজার মেট্রিক টন।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. সালাউদ্দিন বলেন, গত মে-জুন মাসজুড়েই ওই সেচ প্রকল্পের বেড়িবাঁধের ভেতরে টানা বৃষ্টি হয়। এতে সেখানকার অনেক নিচু কৃষিজমি ও বেশ কয়েকটি বিলে দুই থেকে তিন ফুট উচ্চতার জলাবদ্ধতা তৈরি হয়। সেটি দূর করতে পদক্ষেপ নেয়নি পাউবো কর্তৃপক্ষ। এতে গত আউশ মৌসুমে দুই হাজার হেক্টর কৃষিজমিতে আবাদ করতে পারেননি চাষিরা।

উপজেলার আমুয়াকান্দা এলাকার চাষি মো. ইব্রাহিম বলেন, ‘দুই মাস ধইরা আমার পাঁচ-ছয়টি বড় জমিতে বৃষ্টির পানি আটকাইয়া রইছে। পানি না সরনে মে মাসে হেনো আউশ লাগাইতে পারি নাই। এহন আমন লাগানোর সময়ও চইলা যাইতাছে। তবু পানি সরাইতাছে না। মনে অয়, আমনও লাগাইতে পারুম না। এ নিয়া খুব দুশ্চিন্তায় আছি। খেতে ফসল করতে না পারলে পরিবারকে খাওয়ামু কী? চলুম ক্যামনে? ধারদেনার টেয়াও শোধ দিমু ক্যামনে?’

সেচ প্রকল্পটির ফতেপুর, ঠেটালিয়া ও সেপাইকান্দি এলাকার পানি ব্যবহারকারী দলের সাধারণ সম্পাদক গোলাম নবী অভিযোগ করেন, বেড়িবাঁধের ভেতরে অনেক খাল বেদখল হয়ে আছে। প্রভাবশালী ব্যক্তিরা এগুলো দখল করে স্থাপনা পেতে ব্যবহার করছেন। পাউবো কর্তৃপক্ষ এ ব্যাপারে পদক্ষেপ নিচ্ছে না। জলাবদ্ধতা দূর করারও উদ্যোগ নেই তাদের। এতে ক্ষতির শিকার হচ্ছেন চাষিরা। জলাবদ্ধতা দূর করতে এবং অবৈধ স্থাপনা সরাতে পাউবোকে একাধিকবার জানানো হয়েছে।

জানতে চাইলে মেঘনা-ধনাগোদা সেচ প্রকল্পের দায়িত্বে থাকা চাঁদপুর পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী মামুন হাওলাদার বলেন, জলাবদ্ধতা দূর করতে দুটি পাম্প হাউস কাজ করছে। প্রায় প্রতিদিন বৃষ্টি হওয়ায় ওই পানি সম্পূর্ণভাবে সরানো যাচ্ছে না। বেশ কিছু নিষ্কাশন খাল বেদখলে থাকায় নিচু জমির পানি মূল খালে আনা যাচ্ছে না। এ জন্য জলাবদ্ধতা থেকেই যাচ্ছে। তবু জলাবদ্ধতা নিরসনের চেষ্টা চলছে।

Tag :
জনপ্রিয়

৩ এপ্রিল ছুটি ঘোষণা করে প্রজ্ঞাপন জারি

সেচ প্রকল্পে জলাবদ্ধতা, আমনের আবাদ নিয়ে শঙ্কা

প্রকাশিত : ০৬:১৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ১২ জুলাই ২০২০

কয়েক দিনের টানা বৃষ্টিপাতে চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলায় মেঘনা-ধনাগোদা সেচ প্রকল্পের বেড়িবাঁধের ভেতরে অনেক কৃষিজমিতে জলাবদ্ধতার পরিমাণ বেড়ে গেছে। জলাবদ্ধতা দূর না হওয়ায় সেখানকার এক হাজার হেক্টর কৃষিজমিতে আমনের আবাদ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। এতে চাষিরা দুশ্চিন্তায় পড়েছেন। এর আগে জলাবদ্ধতার কারণে দুই হাজার হেক্টর জমিতে আউশের আবাদ করা যায়নি।

উপজেলা কৃষি কার্যালয় ও চাঁদপুর পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সূত্র জানায়, মেঘনা-ধনাগোদা সেচ প্রকল্পের বেড়িবাঁধের ভেতর চলতি মৌসুমে আট হাজার হেক্টর কৃষিজমিতে আমন ধান আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। এতে আমন উৎপাদনের সম্ভাব্য পরিমাণ ধার্য করা হয় ৩৫ হাজার মেট্রিক টন। গত বছর সেখানে আমন ধান উৎপাদিত হয়েছিল ৩৩ হাজার মেট্রিক টন।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. সালাউদ্দিন বলেন, গত মে-জুন মাসজুড়েই ওই সেচ প্রকল্পের বেড়িবাঁধের ভেতরে টানা বৃষ্টি হয়। এতে সেখানকার অনেক নিচু কৃষিজমি ও বেশ কয়েকটি বিলে দুই থেকে তিন ফুট উচ্চতার জলাবদ্ধতা তৈরি হয়। সেটি দূর করতে পদক্ষেপ নেয়নি পাউবো কর্তৃপক্ষ। এতে গত আউশ মৌসুমে দুই হাজার হেক্টর কৃষিজমিতে আবাদ করতে পারেননি চাষিরা।

উপজেলার আমুয়াকান্দা এলাকার চাষি মো. ইব্রাহিম বলেন, ‘দুই মাস ধইরা আমার পাঁচ-ছয়টি বড় জমিতে বৃষ্টির পানি আটকাইয়া রইছে। পানি না সরনে মে মাসে হেনো আউশ লাগাইতে পারি নাই। এহন আমন লাগানোর সময়ও চইলা যাইতাছে। তবু পানি সরাইতাছে না। মনে অয়, আমনও লাগাইতে পারুম না। এ নিয়া খুব দুশ্চিন্তায় আছি। খেতে ফসল করতে না পারলে পরিবারকে খাওয়ামু কী? চলুম ক্যামনে? ধারদেনার টেয়াও শোধ দিমু ক্যামনে?’

সেচ প্রকল্পটির ফতেপুর, ঠেটালিয়া ও সেপাইকান্দি এলাকার পানি ব্যবহারকারী দলের সাধারণ সম্পাদক গোলাম নবী অভিযোগ করেন, বেড়িবাঁধের ভেতরে অনেক খাল বেদখল হয়ে আছে। প্রভাবশালী ব্যক্তিরা এগুলো দখল করে স্থাপনা পেতে ব্যবহার করছেন। পাউবো কর্তৃপক্ষ এ ব্যাপারে পদক্ষেপ নিচ্ছে না। জলাবদ্ধতা দূর করারও উদ্যোগ নেই তাদের। এতে ক্ষতির শিকার হচ্ছেন চাষিরা। জলাবদ্ধতা দূর করতে এবং অবৈধ স্থাপনা সরাতে পাউবোকে একাধিকবার জানানো হয়েছে।

জানতে চাইলে মেঘনা-ধনাগোদা সেচ প্রকল্পের দায়িত্বে থাকা চাঁদপুর পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী মামুন হাওলাদার বলেন, জলাবদ্ধতা দূর করতে দুটি পাম্প হাউস কাজ করছে। প্রায় প্রতিদিন বৃষ্টি হওয়ায় ওই পানি সম্পূর্ণভাবে সরানো যাচ্ছে না। বেশ কিছু নিষ্কাশন খাল বেদখলে থাকায় নিচু জমির পানি মূল খালে আনা যাচ্ছে না। এ জন্য জলাবদ্ধতা থেকেই যাচ্ছে। তবু জলাবদ্ধতা নিরসনের চেষ্টা চলছে।