ঢাকা , সোমবার, ০৫ মে ২০২৫, ২১ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম :
৩ এপ্রিল ছুটি ঘোষণা করে প্রজ্ঞাপন জারি বাংলাদেশ সাবমেরিন কেব্‌ল কোম্পানির সব ধরনের ইন্টারনেটের দাম কমছে ১০ শতাংশ। রমজানে মাধ্যমিক স্কুল খোলা থাকবে ১৫ দিন, প্রাথমিক স্কুল ১০ দিন খালেদা জিয়াকে হাসপাতালে নেওয়া হচ্ছে টেকনাফ সীমান্তের হোয়াইক্যং এলাকা দিয়ে আজ অস্ত্র নিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে মিয়ানমারের সেনা সাদ সাহেব রুজু করার পর দেওবন্দের মাসআলা খতম হয়ে গেছে : মাওলানা আরশাদ মাদানী চলছে বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্বের দ্বিতীয় দিনের বয়ান পুলিশ সদস্যসহ বিশ্ব ইজতেমায় ৭ জনের মৃত্যু বর্তমান সরকারের সঙ্গে সব দেশ কাজ করতে চায়: পররাষ্ট্রমন্ত্রী জয়পুরহাটে স্কুলছাত্র হত্যায় ১১ জনের মৃত্যুদণ্ড

হালদায় আবারও ডিম ছেড়েছে মা-মাছ

  • নিউজ ডেস্ক
  • প্রকাশিত : ০৬:১২ অপরাহ্ন, শনিবার, ২০ জুন ২০২০
  • ৭৯৯ পঠিত

এক মাসের ব্যবধানে চট্টগ্রামের হালদা নদীর বিস্তীর্ণ এলাকায় আবারও ডিম ছেড়েছে রুই জাতীয় (রুই, কাতাল, মৃগেল ও কালিবাউশ) মা-মাছ।

শুক্রবার রাতে হালদা নদীর অংকুরিঘোনা থেকে রামদাস মুন্সিরহাট পর্যন্ত কয়েক কিলোমিটার এলাকাজুড়ে ডিম ছাড়ে মা-মাছ। তবে ডিম পাওয়ার পরিমাণ স্বাভাবিকের চেয়ে কম বলে ডিম সংগ্রহকারী মৎস্যজীবীরা জানিয়েছেন।

হালদা নদীর অভিজ্ঞ ডিম সংগ্রহকারী মৎস্যজীবী মো. ইলিয়াস সাংবাদিকদের জানান, এক সময় হালদা নদীতে মা-মাছ দফায় দফায় তিনবার পর্যন্ত ডিম ছাড়ত। তবে জলবায়ু পরিবর্তনসহ নানা কারণে এখন আর এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি হয় না। এ ছাড়া ওই সময় দ্বিতীয়বার মা-মাছ ডিম ছাড়লে তার পরিমাণ সন্তোষজনক ছিল, যা এবারের তুলানায় তুলনামূলক বেশি ছিল। যদিও এক মাস আগে চলতি বছরের গত ২২ মে হালদা নদী থেকে রেকর্ডসংখ্যক ২৫ হাজার ৫৩৬ কেজি ডিম সংগ্রহ করা হয়। যা গত ১৪ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ ছিল।

সরেজমিন ডিম ছাড়ার স্থানসমূহ ঘুরে দেখা গেছে, শুক্রবার ৬টার দিকে মা-মাছ নমুনা দিলেও গভীর রাতে ডিম ছাড়ে। তখন একশ’টির মতো নৌকায় করে কয়েক শতাধিক মৎস্যজীবী মা-মাছের নিষিক্ত ডিম সংগ্রহ করেন। ডিম সংগ্রহকারীরা হালদা নদীর নাফিতের ঘাট, আমতুয়া, রামদাশ মুন্সির হাট ও আজিমের ঘাট এলাকায় ডিম সংগ্রহ করেছেন। এ সময় মদুনাঘাট এলাকার হারেস নামে এক মৎস্যজীবী প্রায় সাড়ে ৩ বালতি (প্রতি বালতি ওজন ১০ লিটার) ডিম সংগ্রহ করেছেন। এরমধ্যে অনেক ডিম সংগ্রহকারী শূন্য হাতেও ফিরতে দেখা গেছে। যদিও নদীতে ডিম সংগ্রহকারীর সংখ্যা অনেকাংশে কম ছিল।

এ ব্যাপারে জেলা মৎস্য কর্মকর্তা লাভলি আক্তার বলেন, হালদায় শেষ রাতে মা-মাছ ডিম ছেড়েছে। এটা অনেকটা নমুনা ডিমের মতো। জোয়ারের সময় মৎস্যজীবীরা ডিম সংগ্রহ করতে পারেননি। ভাটার সময় বেশ কয়েকজন ডিম সংগ্রহ মৎস্যজীবী মা-মাছের নিষিক্ত ডিম সংগ্রহ করতে পেরেছেন। তবে ডিম সংগ্রহের পরিমাণ অনেকটা কম। হয়তো ১৫০-১৮০ কেজির মতো ডিম সংগ্রহ করতে পেরেছেন তারা।

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ও হালদা গবেষক ড. মঞ্জুরুল কিবরিয়া বলেন, নদীতে মা-মাছ সর্বশেষ ২০১৫ সালে দ্বিতীয় দফায় ডিম ছেড়েছিল। এভাবে দ্বিতীয়বার ডিম দেয়াটা আশাব্যঞ্জক ঘটনা। এটা হয়েছে কারণ আমরা ধারণা করছি হালদাতে মা-মাছের স্টক বেড়েছে। অনেক মা-মাছ বাকিদের চেয়ে দেরিতে ম্যাচিউরড হয়েছে। ফলে তারা পরে ডিম ছেড়েছে।

নদীতে দূষণের পরিমাণ কমে আসায় মা-মাছ দ্বিতীয় দফায় ডিম ছেড়েছে বলে ধারণা করছেন তিনি।

প্রসঙ্গত, প্রতিবছর বিভিন্ন জেলা থেকে হাজার হাজার মৎস্যজীবী হালদার মাছের রেণু পেতে উন্মুখ হয়ে থাকেন। মৎস্যজীবীরা এসে এ রেণু সংগ্রহ করেন রাউজান-হাটহাজারী উপজেলার সংগ্রহাকারীদের কাছ থেকে। এ ডিম সংগ্রহের উপরই হালদা পাড়ের অনেক পরিবারের সারা বছরের আয়-রোজগার।

Tag :
জনপ্রিয়

৩ এপ্রিল ছুটি ঘোষণা করে প্রজ্ঞাপন জারি

হালদায় আবারও ডিম ছেড়েছে মা-মাছ

প্রকাশিত : ০৬:১২ অপরাহ্ন, শনিবার, ২০ জুন ২০২০

এক মাসের ব্যবধানে চট্টগ্রামের হালদা নদীর বিস্তীর্ণ এলাকায় আবারও ডিম ছেড়েছে রুই জাতীয় (রুই, কাতাল, মৃগেল ও কালিবাউশ) মা-মাছ।

শুক্রবার রাতে হালদা নদীর অংকুরিঘোনা থেকে রামদাস মুন্সিরহাট পর্যন্ত কয়েক কিলোমিটার এলাকাজুড়ে ডিম ছাড়ে মা-মাছ। তবে ডিম পাওয়ার পরিমাণ স্বাভাবিকের চেয়ে কম বলে ডিম সংগ্রহকারী মৎস্যজীবীরা জানিয়েছেন।

হালদা নদীর অভিজ্ঞ ডিম সংগ্রহকারী মৎস্যজীবী মো. ইলিয়াস সাংবাদিকদের জানান, এক সময় হালদা নদীতে মা-মাছ দফায় দফায় তিনবার পর্যন্ত ডিম ছাড়ত। তবে জলবায়ু পরিবর্তনসহ নানা কারণে এখন আর এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি হয় না। এ ছাড়া ওই সময় দ্বিতীয়বার মা-মাছ ডিম ছাড়লে তার পরিমাণ সন্তোষজনক ছিল, যা এবারের তুলানায় তুলনামূলক বেশি ছিল। যদিও এক মাস আগে চলতি বছরের গত ২২ মে হালদা নদী থেকে রেকর্ডসংখ্যক ২৫ হাজার ৫৩৬ কেজি ডিম সংগ্রহ করা হয়। যা গত ১৪ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ ছিল।

সরেজমিন ডিম ছাড়ার স্থানসমূহ ঘুরে দেখা গেছে, শুক্রবার ৬টার দিকে মা-মাছ নমুনা দিলেও গভীর রাতে ডিম ছাড়ে। তখন একশ’টির মতো নৌকায় করে কয়েক শতাধিক মৎস্যজীবী মা-মাছের নিষিক্ত ডিম সংগ্রহ করেন। ডিম সংগ্রহকারীরা হালদা নদীর নাফিতের ঘাট, আমতুয়া, রামদাশ মুন্সির হাট ও আজিমের ঘাট এলাকায় ডিম সংগ্রহ করেছেন। এ সময় মদুনাঘাট এলাকার হারেস নামে এক মৎস্যজীবী প্রায় সাড়ে ৩ বালতি (প্রতি বালতি ওজন ১০ লিটার) ডিম সংগ্রহ করেছেন। এরমধ্যে অনেক ডিম সংগ্রহকারী শূন্য হাতেও ফিরতে দেখা গেছে। যদিও নদীতে ডিম সংগ্রহকারীর সংখ্যা অনেকাংশে কম ছিল।

এ ব্যাপারে জেলা মৎস্য কর্মকর্তা লাভলি আক্তার বলেন, হালদায় শেষ রাতে মা-মাছ ডিম ছেড়েছে। এটা অনেকটা নমুনা ডিমের মতো। জোয়ারের সময় মৎস্যজীবীরা ডিম সংগ্রহ করতে পারেননি। ভাটার সময় বেশ কয়েকজন ডিম সংগ্রহ মৎস্যজীবী মা-মাছের নিষিক্ত ডিম সংগ্রহ করতে পেরেছেন। তবে ডিম সংগ্রহের পরিমাণ অনেকটা কম। হয়তো ১৫০-১৮০ কেজির মতো ডিম সংগ্রহ করতে পেরেছেন তারা।

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ও হালদা গবেষক ড. মঞ্জুরুল কিবরিয়া বলেন, নদীতে মা-মাছ সর্বশেষ ২০১৫ সালে দ্বিতীয় দফায় ডিম ছেড়েছিল। এভাবে দ্বিতীয়বার ডিম দেয়াটা আশাব্যঞ্জক ঘটনা। এটা হয়েছে কারণ আমরা ধারণা করছি হালদাতে মা-মাছের স্টক বেড়েছে। অনেক মা-মাছ বাকিদের চেয়ে দেরিতে ম্যাচিউরড হয়েছে। ফলে তারা পরে ডিম ছেড়েছে।

নদীতে দূষণের পরিমাণ কমে আসায় মা-মাছ দ্বিতীয় দফায় ডিম ছেড়েছে বলে ধারণা করছেন তিনি।

প্রসঙ্গত, প্রতিবছর বিভিন্ন জেলা থেকে হাজার হাজার মৎস্যজীবী হালদার মাছের রেণু পেতে উন্মুখ হয়ে থাকেন। মৎস্যজীবীরা এসে এ রেণু সংগ্রহ করেন রাউজান-হাটহাজারী উপজেলার সংগ্রহাকারীদের কাছ থেকে। এ ডিম সংগ্রহের উপরই হালদা পাড়ের অনেক পরিবারের সারা বছরের আয়-রোজগার।