ঢাকা , মঙ্গলবার, ০৬ মে ২০২৫, ২৩ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম :
৩ এপ্রিল ছুটি ঘোষণা করে প্রজ্ঞাপন জারি বাংলাদেশ সাবমেরিন কেব্‌ল কোম্পানির সব ধরনের ইন্টারনেটের দাম কমছে ১০ শতাংশ। রমজানে মাধ্যমিক স্কুল খোলা থাকবে ১৫ দিন, প্রাথমিক স্কুল ১০ দিন খালেদা জিয়াকে হাসপাতালে নেওয়া হচ্ছে টেকনাফ সীমান্তের হোয়াইক্যং এলাকা দিয়ে আজ অস্ত্র নিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে মিয়ানমারের সেনা সাদ সাহেব রুজু করার পর দেওবন্দের মাসআলা খতম হয়ে গেছে : মাওলানা আরশাদ মাদানী চলছে বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্বের দ্বিতীয় দিনের বয়ান পুলিশ সদস্যসহ বিশ্ব ইজতেমায় ৭ জনের মৃত্যু বর্তমান সরকারের সঙ্গে সব দেশ কাজ করতে চায়: পররাষ্ট্রমন্ত্রী জয়পুরহাটে স্কুলছাত্র হত্যায় ১১ জনের মৃত্যুদণ্ড

করোনা ঢাকার বাইরে ২০ জেলায় ৭৫%

  • নিউজ ডেস্ক
  • প্রকাশিত : ০২:৩১ অপরাহ্ন, শনিবার, ১১ জুলাই ২০২০
  • ৭২০ পঠিত

ঢাকা ও চট্টগ্রামের পাশাপাশি দেশের সব জায়গায় বাড়ছে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ। ঢাকা মহানগরীর বাইরে ইতিমধ্যে ২০টি জেলায় আক্রান্তের সংখ্যা হাজার ছাড়িয়ে গেছে। রাজধানীর বাইরে মোট আক্রান্তের প্রায় ৭৫ শতাংশ শনাক্ত হয়েছে এসব জেলায়।

৮ মার্চ দেশে প্রথম তিনজনের শরীরে করোনা শনাক্ত হয়। তাঁদের দুজন ছিলেন নারায়ণগঞ্জের, একজন মাদারীপুরের। শুরুতে বিদেশফেরত ও তাঁদের সংস্পর্শে আসা ব্যক্তিদের মধ্যে সংক্রমণ সীমিত থাকলেও এখন সেটা ব্যাপক আকারে ছড়িয়ে পড়েছে। শুরু থেকেই ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জ এবং এর আশপাশের জেলাগুলোতে সংক্রমণ বেশি দেখা গেছে। এখনো এসব জেলায় আক্রান্ত বেশি। সবচেয়ে বেশি মানুষ আক্রান্ত রাজধানী ঢাকায়। এরপর চট্টগ্রাম জেলায়।

এই ২০ জেলার প্রতিটিতে আক্রান্তের সংখ্যা ন্যূনতম ১ হাজার। এসব জেলার মধ্যে ১৩টিতেই আক্রান্তের সংখ্যা ২ হাজারের বেশি। এখন থেকে দুই সপ্তাহ আগে ২ হাজারের বেশি আক্রান্ত ছিল ছয়টি জেলায়। এখন রাজধানীর বাইরে সবচেয়ে বেশি প্রায় ১০ হাজার আক্রান্ত চট্টগ্রাম জেলায়। এরপর নারায়ণগঞ্জে আক্রান্ত প্রায় সাড়ে পাঁচ হাজার।

যেসব জেলায় আক্রান্তের সংখ্যা হাজারের বেশি, সেগুলোর সাতটি ঢাকা বিভাগের এবং ছয়টি চট্টগ্রাম বিভাগের। হাজারের বেশি মানুষ আক্রান্ত জেলাগুলোর মধ্যে আছে ঢাকা (মহানগরী বাদে), কিশোরগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ, গাজীপুর, মুন্সিগঞ্জ, নরসিংদী, ফরিদপুর, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, কুমিল্লা, নোয়াখালী, ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও চাঁদপুর; সিলেট, সুনামগঞ্জ, খুলনা, বরিশাল, ময়মনসিংহ, বগুড়া ও রাজশাহী।

গত দুই সপ্তাহের তথ্য পর্যালোচনা করে দেখা যায়, দেশের প্রায় সব জেলাতেই কমবেশি সংক্রমণ বাড়ছে। এর মধ্যে রাজশাহী, ফরিদপুর, চট্টগ্রাম, কুমিল্লা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, চাঁদপুর, খুলনা ও বরিশালে সংক্রমণ দ্রুত বাড়ছে।

সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) পরামর্শক মুশতাক হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, এলাকাভিত্তিক লকডাউনের (অবরুদ্ধ) যে সিদ্ধান্ত হয়েছিল, সেটা বাস্তবায়িত হচ্ছে না। পূর্ব রাজাবাজারে ভালো ফল পাওয়া গেছে। ওয়ারীতেও মানুষ এর উপকারিতা বুঝতে পারছে। এখন সংক্রমণ যেভাবে ছড়িয়েছে, সেভাবে কন্ট্যাক্ট ট্রেসিং (রোগীর সংস্পর্শে কারা এসেছিলেন), রোগীর ফলোআপ ও ব্যবস্থাপনার পুরো সক্ষমতা স্বাস্থ্য বিভাগের নেই। এ ক্ষেত্রে স্থানীয়দের অংশগ্রহণ বাড়াতে হবে। পূর্ব রাজাবাজারে সেটা হয়েছে। এই এলাকাভিত্তিক লকডাউন কার্যকর হলে হয়তো সংক্রমণ নিচের দিকে যেত।

সময় যত যাচ্ছে দেশে কোভিড-১৯–এর সংক্রমণ তত তীব্র হচ্ছে। প্রতিদিনই বাড়ছে আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা। গতকাল শুক্রবার নিয়মিত সংবাদ বুলেটিনে গত ২৪ ঘণ্টার (বৃহস্পতিবার সকাল ৮টা থেকে গতকাল সকাল ৮টা) হালনাগাদ তথ্য তুলে ধরেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক নাসিমা সুলতানা। তিনি জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে ১৩ হাজার ৪৮৮ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। এগুলোর মধ্যে ২ হাজার ৯৪৯ জনের দেহে সংক্রমণ পাওয়া গেছে। সংক্রমণ শনাক্তের হার ছিল ২১ দশমিক ৮৬ শতাংশ। এ নিয়ে মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়াল ১ লাখ ৭৮ হাজার ৪৪৩। এ সময়ে আরও ৩৭ জনের মৃত্যু হয়েছে।

সংক্রমণের ঝুঁকি এড়াতে সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার পরামর্শ দিয়ে অধ্যাপক নাসিমা সুলতানা বলেন, সঠিকভাবে মাস্ক পরতে হবে, নিয়মিত সাবান–পানি দিয়ে হাত ধুতে হবে, জনসমাগম এড়িয়ে চলতে হবে এবং সামাজিক দূরত্ব মেনে চলতে হবে। এই সব কটি কাজ একই সঙ্গে করতে হবে।

Tag :
জনপ্রিয়

৩ এপ্রিল ছুটি ঘোষণা করে প্রজ্ঞাপন জারি

করোনা ঢাকার বাইরে ২০ জেলায় ৭৫%

প্রকাশিত : ০২:৩১ অপরাহ্ন, শনিবার, ১১ জুলাই ২০২০

ঢাকা ও চট্টগ্রামের পাশাপাশি দেশের সব জায়গায় বাড়ছে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ। ঢাকা মহানগরীর বাইরে ইতিমধ্যে ২০টি জেলায় আক্রান্তের সংখ্যা হাজার ছাড়িয়ে গেছে। রাজধানীর বাইরে মোট আক্রান্তের প্রায় ৭৫ শতাংশ শনাক্ত হয়েছে এসব জেলায়।

৮ মার্চ দেশে প্রথম তিনজনের শরীরে করোনা শনাক্ত হয়। তাঁদের দুজন ছিলেন নারায়ণগঞ্জের, একজন মাদারীপুরের। শুরুতে বিদেশফেরত ও তাঁদের সংস্পর্শে আসা ব্যক্তিদের মধ্যে সংক্রমণ সীমিত থাকলেও এখন সেটা ব্যাপক আকারে ছড়িয়ে পড়েছে। শুরু থেকেই ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জ এবং এর আশপাশের জেলাগুলোতে সংক্রমণ বেশি দেখা গেছে। এখনো এসব জেলায় আক্রান্ত বেশি। সবচেয়ে বেশি মানুষ আক্রান্ত রাজধানী ঢাকায়। এরপর চট্টগ্রাম জেলায়।

এই ২০ জেলার প্রতিটিতে আক্রান্তের সংখ্যা ন্যূনতম ১ হাজার। এসব জেলার মধ্যে ১৩টিতেই আক্রান্তের সংখ্যা ২ হাজারের বেশি। এখন থেকে দুই সপ্তাহ আগে ২ হাজারের বেশি আক্রান্ত ছিল ছয়টি জেলায়। এখন রাজধানীর বাইরে সবচেয়ে বেশি প্রায় ১০ হাজার আক্রান্ত চট্টগ্রাম জেলায়। এরপর নারায়ণগঞ্জে আক্রান্ত প্রায় সাড়ে পাঁচ হাজার।

যেসব জেলায় আক্রান্তের সংখ্যা হাজারের বেশি, সেগুলোর সাতটি ঢাকা বিভাগের এবং ছয়টি চট্টগ্রাম বিভাগের। হাজারের বেশি মানুষ আক্রান্ত জেলাগুলোর মধ্যে আছে ঢাকা (মহানগরী বাদে), কিশোরগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ, গাজীপুর, মুন্সিগঞ্জ, নরসিংদী, ফরিদপুর, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, কুমিল্লা, নোয়াখালী, ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও চাঁদপুর; সিলেট, সুনামগঞ্জ, খুলনা, বরিশাল, ময়মনসিংহ, বগুড়া ও রাজশাহী।

গত দুই সপ্তাহের তথ্য পর্যালোচনা করে দেখা যায়, দেশের প্রায় সব জেলাতেই কমবেশি সংক্রমণ বাড়ছে। এর মধ্যে রাজশাহী, ফরিদপুর, চট্টগ্রাম, কুমিল্লা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, চাঁদপুর, খুলনা ও বরিশালে সংক্রমণ দ্রুত বাড়ছে।

সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) পরামর্শক মুশতাক হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, এলাকাভিত্তিক লকডাউনের (অবরুদ্ধ) যে সিদ্ধান্ত হয়েছিল, সেটা বাস্তবায়িত হচ্ছে না। পূর্ব রাজাবাজারে ভালো ফল পাওয়া গেছে। ওয়ারীতেও মানুষ এর উপকারিতা বুঝতে পারছে। এখন সংক্রমণ যেভাবে ছড়িয়েছে, সেভাবে কন্ট্যাক্ট ট্রেসিং (রোগীর সংস্পর্শে কারা এসেছিলেন), রোগীর ফলোআপ ও ব্যবস্থাপনার পুরো সক্ষমতা স্বাস্থ্য বিভাগের নেই। এ ক্ষেত্রে স্থানীয়দের অংশগ্রহণ বাড়াতে হবে। পূর্ব রাজাবাজারে সেটা হয়েছে। এই এলাকাভিত্তিক লকডাউন কার্যকর হলে হয়তো সংক্রমণ নিচের দিকে যেত।

সময় যত যাচ্ছে দেশে কোভিড-১৯–এর সংক্রমণ তত তীব্র হচ্ছে। প্রতিদিনই বাড়ছে আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা। গতকাল শুক্রবার নিয়মিত সংবাদ বুলেটিনে গত ২৪ ঘণ্টার (বৃহস্পতিবার সকাল ৮টা থেকে গতকাল সকাল ৮টা) হালনাগাদ তথ্য তুলে ধরেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক নাসিমা সুলতানা। তিনি জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে ১৩ হাজার ৪৮৮ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। এগুলোর মধ্যে ২ হাজার ৯৪৯ জনের দেহে সংক্রমণ পাওয়া গেছে। সংক্রমণ শনাক্তের হার ছিল ২১ দশমিক ৮৬ শতাংশ। এ নিয়ে মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়াল ১ লাখ ৭৮ হাজার ৪৪৩। এ সময়ে আরও ৩৭ জনের মৃত্যু হয়েছে।

সংক্রমণের ঝুঁকি এড়াতে সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার পরামর্শ দিয়ে অধ্যাপক নাসিমা সুলতানা বলেন, সঠিকভাবে মাস্ক পরতে হবে, নিয়মিত সাবান–পানি দিয়ে হাত ধুতে হবে, জনসমাগম এড়িয়ে চলতে হবে এবং সামাজিক দূরত্ব মেনে চলতে হবে। এই সব কটি কাজ একই সঙ্গে করতে হবে।