পদ্মায় পানিবৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে ভাঙন বাড়ছে। ফলে ঢাকার নবাবগঞ্জ উপজেলার বান্দুরা ইউনিয়নে অবস্থিত সাদাপুর ও হজরতপুর খালের দুপাড়ে অবস্থিত প্রায় ২০০ পরিবার ভাঙন আতঙ্কে দিন পার করছে।
প্রতি বছর বর্ষা মৌসুমে দোহারের পদ্মা নদীর স্রোত এসে খালটির দুপাশে অবস্থিত অসংখ্য বসতবাড়ি ভেঙে বিলীন হচ্ছে বলে জানা গেছে।
এলাকাবাসীর দাবি, বেশ কয়েক বছর ধরে বর্ষা মৌসুমে পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা শুধু পরিদর্শন করেই তাদের কাজ শেষ করছেন। ভাঙন প্রতিরোধে কোনো দৃশ্যমান ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে না বলে জানান তারা।
এ বিষয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপসহকারী প্রকৌশলী মো. মাসুদ রানা বলেন, নবাবগঞ্জে ভাঙনকবলিত সাদাপুর ও হজরতপুর খালটি আমরা পরিদর্শন করেছি। ভাঙন প্রতিরোধে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
স্থানীয় ইউপি সদস্য মো. সিদ্দিক ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সভাপতি শামসুল হক বলেন, গত ৫ বছরে প্রায় দুই শতাধিক বসতবাড়ি খালে বিলীন হয়ে গেছে। তাদের অনেকেই এখন পরিবার-পরিজন নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন ও অন্য এলাকায় চলে গেছেন।
ভুক্তভোগী নাজিম সিকদার ও সজিবর সিকদার জানান, গত রোববার তাদের বসতবাড়ি পদ্মা থেকে আসা পানির তুমুল স্রোতে ভেঙে খালে চলে গেছে। পরিবারের লোকজন নিয়ে এখন কোনোমতে অন্যের জমিতে ঘর তৈরি করে বসবাস করছেন।
আমেনা বেগম বলেন, আমার স্বামী নেই। বাড়িটি খালের পানির স্রোতে ভেঙে গেছে। এখন ছেলেমেয়ে নিয়ে অন্যের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছি।
বান্দুরা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান হিল্লাল মিয়া বলেন, বিগত কয়েক বছর ধরে এই অঞ্চলের খালগুলো বিলুপ্ত হয়ে যাওয়ায় পদ্মা থেকে পানি সরাসরি সাদাপুর ও হজরতপুর খালে প্রবেশ করে ইছামতি নদীতে পড়ছে।
ইছামতি নদীতে পানির প্রবাহ বন্ধ থাকায় খালে পানির স্রোত বৃদ্ধি পাচ্ছে ও খালের ভাঙন ব্যাপক আকার ধারণ করছে। বিষয়টি দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া জরুরি। তা না হলে সাদাপুর, হজরতপুরসহ আশপাশের এলাকার অসংখ্য মানুষ, তাদের বসতবাড়ি হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে পড়বে।
নবাবগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সালাউদ্দীন মনজু বলেন, উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ইতিমধ্যে ভাঙন এলাকা পরিদর্শন করা হয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড ভাঙন প্রতিরোধে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করবে বলে জানান তিনি।