চাঁদপুর সদর উপজেলার রাজরাজেশ্বর ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডে পদ্মার মাঝনদীতে ভাসছে নবনির্মিত রাজরাজেশ্বর ওমর আলী উচ্চবিদ্যালয় মাল্টিপারপাস সাইক্লোন শেল্টার। যেকোনো মুহূর্তে এটি নদীতে তলিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন স্থানীয় ব্যক্তিরা।
স্থানীয় লোকজন জানান, উত্তরাঞ্চল থেকে নেমে আসা বন্যার পানির প্রবল স্রোতে কয়েক দিন ধরে এই বিদ্যালয় ও ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্রটির আশপাশে ব্যাপক নদীভাঙন শুরু হয়। দিন দিন এই ভাঙনের ব্যাপকতা দেখা দিলেও কোনোভাবেই তা ঠেকানো যাচ্ছে না।
প্রধান শিক্ষক আরও বলেন, রাজরাজেশ্বর ইউনিয়নের লক্ষ্মীর চরে যেখানে নবনির্মিত ভবনটি দাঁড়িয়ে আছে, ১৯৮৮ সালে সেখানেই প্রথম স্কুলটি প্রতিষ্ঠিত করা হয়। কিন্তু ২০০০ সাল থেকে এটি ১১ বার ভাঙনের শিকার হওয়ায় স্কুলের কার্যক্রম এখান থেকে অন্য জায়গায় স্থানান্তর করা হয়। বর্তমানে এই স্কুলের কার্যক্রম পাশের বলিয়ার চরে একটি টিনের ঘরে চলছে।
ওই ইউনিয়নের বাসিন্দা ৩ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য পারভেজ গাজী রনি বলেন, ইউনিয়নবাসীর দাবির মুখে চাঁদপুর-৩ আসনের সাংসদ ও শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি ২০১৯ সালে প্রায় ৫০০ শিক্ষার্থীর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটি বাস্তবায়ন করার উদ্যোগ নেন। কাজ শুরুর এক বছরের মাথায় প্রায় ২ কোটি ২৮ লাখ টাকা ব্যয়ে লক্ষ্মীর চরেই তিনতলা এই বিদ্যালয় কাম ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্রটি তৈরি করা হয়। তখন নদী এই ভবন থেকে প্রায় তিন কিলোমিটার দূরে ছিল। এখন ওই ভবনের আশপাশ যেভাবে নদীতে তলিয়ে গেছে, এই ভবন শেষ পর্যন্ত টিকবে কি না, তার কোনো নিশ্চয়তা নেই। এতে আবার বিদ্যালয়ের কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে।
রাজরাজেশ্বর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হযরত আলী ব্যাপারী বলেন, ‘আমার ইউনিয়নটি পদ্ম ও মেঘনার নদীর মাঝখানে। এ কারণে প্রতিবছর বর্ষার সময় তীব্র ভাঙন দেখা দেয়। তবে ওমর আলী উচ্চবিদ্যালয় কাম সাইক্লোন শেল্টারটি জন্য যেই জায়গাটি নির্ধারণ করা হয়েছে, আমি সেখানে এটি না করার জন্য বলেছিলাম। স্থানীয় জেলা প্রশাসনও সেখানে এটি করার ব্যাপারে রাজি ছিল না। কিন্তু এরপরও এটি সেখানে করায় আমি আপত্তি জানিয়েছি। শেষ পর্যন্ত আমার আশঙ্কা সত্যি প্রমাণিত হয়েছে।’
চাঁদপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কানিজ ফাতেমা বলেন, ২০১৪ সালে এটি করার প্রস্তাব হয়। তখন ভবনটির সাইট সিলেকশনের সময় নদী ছিল তিন কিলোমিটার দূরে। পরবর্তী সময়ে ত্রাণ ও দুর্যোগ মন্ত্রণালয় এটির জায়গা নির্ধারণ ও বাস্তবায়ন করে, কিন্তু বর্তমানে এটি রক্ষা করার জন্য কোনো ধরনের ব্যবস্থা নেওয়ার অবস্থা নেই।