লঞ্চ ছাড়ার ঘোষণা দেয়ার পরপরই ঝালকাঠির যাত্রীরা ঢাকা যেতে অগ্রিম টিকিট কিনেছেন। আগামীকাল রোববার (৩১ মে) সন্ধ্যায় ঝালকাঠি ঘাট থেকে ছেড়ে যাবে সুন্দরবন-১২ লঞ্চ।
প্রথম দিনের কেবিনের টিকিট ইতোমধ্যে শেষ হয়ে গেছে বলে জানিয়েছে লঞ্চ কর্তৃপক্ষ। অনেক যাত্রী ডেকেও আসন ঠিক রাখার জন্য চাদর বিছিয়ে রাখার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
তবে লঞ্চের স্টাফরা অতিরিক্ত ভাড়া নিয়ে কেবিন বুকিং দেয়ার জন্য টিকিটের কৃত্রিম সঙ্কট সৃষ্টি করেছেন বলে অভিযোগ করেছেন যাত্রীরা।
জানা যায়, করোনাভাইরাসের সংক্রমণ মোকাবিলায় ২৬ মার্চ থেকে লঞ্চ চলাচল বন্ধ ঘোষণা করে সরকার। সেই থেকে ঝালকাঠি-চাঁদপুর-ঢাকা রুটে বন্ধ হয়ে যায় লঞ্চ চলাচল। দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পরে স্বাস্থ্যবিধি মেনে আবার স্বল্প পরিসরে লঞ্চ চলাচলের ঘোষণা দেয়া হয়।
কিন্তু স্বাস্থ্যবিধির দিকে নজর না দিয়ে অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু করেছেন লঞ্চ কর্তৃপক্ষ। ইতোমধ্যে প্রথম দিনে ছেড়ে যাওয়ার প্রস্তুতি নেয়া সুন্দরবন-১২ লঞ্চের কেবিনের টিকিট শেষ হয়ে গেছে। একটি কেবিনও নেই বলে জানিয়েছেন লঞ্চের সুপারভাইজার।
লঞ্চ কর্তৃপক্ষ জানায়, ঝালকাঠি থেকে প্রতিদিন একটি করে লঞ্চ ছেড়ে যায় চাঁদপুর হয়ে ঢাকার উদ্দেশ্যে। আবার ঢাকা থেকেও একটি লঞ্চ আসে ঝালকাঠিতে। এর মধ্যে একটি সুন্দরবন-১২ এবং অপরটি ফারহান-৭ লঞ্চ।
সুন্দরবন লঞ্চের ধারণক্ষমতা ৬৪০ জনের। কেবিন রয়েছে ৯৮টি। ফারহানের ধারণক্ষমতা ৬৩৯ জনের। কেবিন রয়েছে ৯৬টি। দুটি লঞ্চ ঝালকাঠি থেকে ঢাকা যাওয়ার জন্য রোববার ও সোমবারের কেবিন বুকিং হয়ে গেছে।
যাত্রীদের অভিযোগ, স্বাস্থ্যবিধি না মেনে ধারণক্ষমতার বাইরে যাত্রী নিয়ে লঞ্চ ছাড়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে মালিকপক্ষ। কেবিনের বাইরেও টিকিট বিক্রি করেছে তারা।
তবে লঞ্চ ঘাটের সুপারভাইজার দাবি করেছেন, স্বাস্থ্যবিধি মেনে এবং সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে লঞ্চ ছাড়া হবে। এখানে জীবাণুনাশক স্প্রে থাকবে। রাখা হবে বিশেষ নজরদারি।
আসাদুর রহমান নামে এক যাত্রী ঢাকা যাওয়ার জন্য টিকিট নিতে এসে জানতে পারেন কেবিন অগ্রিম বুকিং হয়ে গেছে। তিনি বলেন, লঞ্চ ছাড়ার খবর শুনেই টিকিট শেষ হয়ে গেছে। এখন যাত্রীরা সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে এবং স্বাস্থ্যবিধি মেনে কীভাবে যাবে? আমার মনে হয় লঞ্চের কোথাও জায়গা পাওয়া যাবে না। গোপনে অতিরিক্ত টাকা দিলে বিশেষ কেবিন দেন স্টাফরা।
সুন্দরবন-১২ লঞ্চের ঝালকাঠি ঘাটের সুপারভাইজার আবু হানিফ বলেন, লঞ্চের কেবিনের টিকিট শেষ হয়ে গেছে। ডেকে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে যাত্রীরা যেতে পারবেন।
ফারহান লঞ্চের সুপারভাইজার মঞ্জুরুল ইসলাম মঞ্জু বলেন, আমাদের লঞ্চে জীবাণুনাশক স্প্রে করার ব্যবস্থা রয়েছে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে এবং তিন ফুট নিরাপদ দূরত্বে যাত্রীদের রাখা হবে। লঞ্চে ইতোমধ্যে গোল বৃত্ত এঁকে দেয়া হয়েছে।