রাজ্যে ফের লকডাউনের মেয়াদ বাড়ল। রাজ্য সরকারের আগের ঘোষণা মতো ৩১ জুলাই পর্যন্ত লকডাউনের সময়সীমা ছিল। কিন্তু কোভিড পরিস্থিতির পর্যালোচনা করে মঙ্গলবার নবান্নে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানালেন, আগামী ৩১ অগস্ট পর্যন্ত রাজ্যে লকডাউন চলবে। কবে কবে সম্পূর্ণ লকডাউন থাকবে, তার দিন ক্ষণও ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। জুলাই মাসের শেষ সম্পূর্ণ লকডাউন আগামিকাল বুধবার। তার পর অগস্ট জুড়ে সব মিলিয়ে মোট ৯ দিন সম্পূর্ণ লকডাউন হবে রাজ্যে।
আজ নবান্নে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন মুখ্যমন্ত্রী। সেখানে তিনি বলেন, “আগামিকাল বুধবার সকাল ৬টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত সম্পূর্ণ লকডাউন থাকছে। শনিবার ইদ, সোমবার রাখি। তাই রবিবার লকডাউন হবে। এ ছাড়া ২, ৫, ৮, ৯, ১৬, ১৭, ২৩, ২৪, ৩১ অগস্ট সম্পূর্ণ লকডাউন থাকবে। এই সময় যে ভাবে নিয়ম মানা হচ্ছিল, তেমনই মানতে হব
অগস্ট মাসে করোনা পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে। সেই সময়টা অবহেলা করা ঠিক হবে না বলে মন্তব্য করে মুখ্যমন্ত্রী আজ বলেন, ‘‘এখানে ৩১ জুলাই পর্যন্ত লকডাউন ছিল। এ বার আমরা তা বাড়িয়ে ৩১ অগস্ট করে দিচ্ছি। এই সময় কালে যে ভাবে ভোর ৫টা পর্যন্ত নিয়মবিধি মানা হচ্ছিল, তা হবে। আর সপ্তাহে নির্দিষ্ট দিনগুলোতে সম্পূর্ণ লকডাউন করা হবে। ওই দিনগুলোয় ট্রেন এবং প্লেন চলবে না।”

রাজ্যে স্কুল কলেজ আপাতত ৩১ অগস্ট বন্ধ থাকবেন বলেও জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। যদি অগস্ট মাসে পরিস্থিতির উন্নতি হয়, তবে শিক্ষক দিবস অর্থাৎ ৫ সেপ্টেম্বর থেকে স্কুল চালু করার ব্যাপারে সরকার সিদ্ধান্ত নিতে পারে বলে এ দিন জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর কথায়, ‘‘আমরা পরিকল্পনা করছি, পুজোর আগে পর্যন্ত এক দিন অন্তর এক দিন স্কুল চালানোর। তবে সবটাই নির্ভর করছে পরিস্থিতির উপর। অগস্ট মাসে পরিস্থিতি কোথায় গিয়ে দাঁড়ায়, তা খতিয়ে দেখেই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’’
যে আট জেলায় করোনার প্রকোপ সবচেয়ে বেশি, সেই জেলাগুলিতে কোভিড যুদ্ধ তদারকির জন্য আট জন আইএএস-কে নোডাল অফিসার নিয়োগ করা হয়েছে বলেও আজ জানান মুখ্যমন্ত্রী। এত দিন পাঁচটি জেলায় নোডাল অফিসার ছিলেন। এ ছাড়াও রাজ্যের কোভিড পরিস্থিতি সামলাতে আটটি আলাদা আলাদা দল গঠন করা হয়েছে বলেও জানান তিনি। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘এই দলগুলো কোভিড মোকাবিলার পরিকাঠামো থেকে শুরু করে সেফ হোম, মৃতদেহ সৎকার, টেলি মেডিসিন— সমস্ত কিছু দেখবে। এই আমলারা রাজ্যের অত্যন্ত অভিজ্ঞ এবং শীর্ষ স্তরের।’’
নবান্নের তরফে এ দিন জানানো হয়েছে, ১৫ অগস্টের মধ্যে প্রতি দিন নমুনা পরীক্ষার সংখ্যা বাড়িয়ে লক্ষ্যমাত্রা ২৫ হাজার করা হয়েছে। পাশাপাশি এই সময়ের মধ্যে ২ লাখ অ্যান্টিজেন পরীক্ষা কার পরিকল্পনাও রাজ্যের রয়েছে বলে জানানো হয়। করোনার পাশাপাশি এ দিন রাজ্যবাসীকে ডেঙ্গু নিয়েও সচেতন করেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর কথায়, “কোথাও জল জমতে দেবেন না। ঘরের আশপাশ পরিষ্কার রাখবেন। সাবধানে থাকবেন।”
(জরুরি ঘোষণা: কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীদের জন্য কয়েকটি বিশেষ হেল্পলাইন চালু করেছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। এই হেল্পলাইন নম্বরগুলিতে ফোন করলে অ্যাম্বুল্যান্স বা টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত পরিষেবা নিয়ে সহায়তা মিলবে। পাশাপাশি থাকছে একটি সার্বিক হেল্পলাইন নম্বরও।
• সার্বিক হেল্পলাইন নম্বর: ১৮০০ ৩১৩ ৪৪৪ ২২২
• টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-২৩৫৭৬০০১
• কোভিড-১৯ আক্রান্তদের অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবা সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-৪০৯০২৯২৯)