ঢাকা , রবিবার, ০৪ মে ২০২৫, ২১ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম :
৩ এপ্রিল ছুটি ঘোষণা করে প্রজ্ঞাপন জারি বাংলাদেশ সাবমেরিন কেব্‌ল কোম্পানির সব ধরনের ইন্টারনেটের দাম কমছে ১০ শতাংশ। রমজানে মাধ্যমিক স্কুল খোলা থাকবে ১৫ দিন, প্রাথমিক স্কুল ১০ দিন খালেদা জিয়াকে হাসপাতালে নেওয়া হচ্ছে টেকনাফ সীমান্তের হোয়াইক্যং এলাকা দিয়ে আজ অস্ত্র নিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে মিয়ানমারের সেনা সাদ সাহেব রুজু করার পর দেওবন্দের মাসআলা খতম হয়ে গেছে : মাওলানা আরশাদ মাদানী চলছে বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্বের দ্বিতীয় দিনের বয়ান পুলিশ সদস্যসহ বিশ্ব ইজতেমায় ৭ জনের মৃত্যু বর্তমান সরকারের সঙ্গে সব দেশ কাজ করতে চায়: পররাষ্ট্রমন্ত্রী জয়পুরহাটে স্কুলছাত্র হত্যায় ১১ জনের মৃত্যুদণ্ড

অদম্য জান্নাতুল কনুই দিয়ে লিখে পেল সাফল্য

  • নিউজ ডেস্ক
  • প্রকাশিত : ০৭:০৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ১ জুন ২০২০
  • ৮৩১ পঠিত

ছোটবেলায় মা–বাবার বিচ্ছেদ হয়। মায়ের সঙ্গে আশ্রয় মেলে খালার বাসায়। তবে প্রতিকূলতা তার পিছু ছাড়েনি তখনো। মাত্র দুবছরের মধ্যে বিদ্যুতের তারে জড়িয়ে দুই হাতের কনুই পর্যন্ত হারাতে হয় তাকে। তবে যে অদম্য, তাকে কি কেউ দমিয়ে রাখতে পারে!

মায়ের স্বপ্ন পূরণের আকাঙ্ক্ষায় হাত হারিয়েও ঘুরে দাঁড়ায় জান্নাতুল ফেরদৌস নামের ছোট্ট মেয়েটি। প্রতিকূলতার বিরুদ্ধে কতটা লড়াই সে করতে পারে, তা দেখিয়ে দিয়েছে এবারের এসএসসি পরীক্ষায়। কনুই দিয়ে লিখেই সে জিপিএ ৪.৭২ পেয়ে পাস করেছে।

গতকাল রোববার প্রকাশিত হয়েছে এসএসসি পরীক্ষার ফল। জান্নাতুল ফেরদৌস এবার আশুলিয়ার ডেন্ডাবর মতিউর রহমান উচ্চবিদ্যালয় থেকে জিপিএ ৪.৭২ পেয়ে পাস করেছে।
®মা নিলুফা বেগমের সঙ্গে জান্নাতুল ডেন্ডাবরে তার খালার বাড়ি থেকে পড়ালেখা করে। ২০১২ সালে বাবা জাহঙ্গীর আলমের সঙ্গে মায়ের বিবাহবিচ্ছেদ হলে মা তাকে নিয়ে খালার বাড়ি আশ্রয় নেন। তখন সে তৃতীয় শ্রেণিতে পড়ত।
®মেয়ের সাফল্যে আবেগাপ্লুত মা নিলুফা বেগম বলেন, ২০১৪ সালে তাঁর মেয়ে জান্নাতুল দুর্ঘটনার শিকার হয়। তখন সে পঞ্চম শেণিতে পা রেখেছিল। ওই বছর ১৫ জানুয়ারি গৃহশিক্ষকের বাসায় পড়তে গিয়ে এক ফাঁকে বান্ধবীদের সঙ্গে ছাদে যায়। হঠাৎ ছাদের ওপর দিয়ে যাওয়া বিদ্যুতের তারে জড়িয়ে গুরুতর আহত হয় সে। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে‌ ভর্তি করা হয়। সেখানে ২ মাস ১৮ দিন চিকিৎসার পর জান্নাতুল সুস্থ হয়। তবে পচন ধরায় এর আগেই তার দুই হাতের কনুই পর্যন্ত কেটে ফেলতে হয়।
®মা বলেন, মেয়ের দুই হাত কাটা পড়লেও সে পড়ালেখা চালিয়ে যেতে চায়। পড়ালেখার প্রতি আগ্রহ থেকে সে দুই হাতের কনুই দিয়ে লেখার অভ্যাস করে। এভাবে লিখেই সে এবার এসএসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছে। তাঁর আশা, মেয়ে পড়ালেখা করে চিকিৎসক হবে।

জান্নাতুল বলে, ‘আমার মায়ের ইচ্ছা আমি বড় হয়ে চিকিৎসক হব। বাবা আমাদের ছেড়ে চলে যাওয়ার পরও মা আশা ছাড়েননি। যদিও আমার হাত কাটা যাওয়ায় তিনি বড় একটা ধাক্কা খান। তাই কনুই দিয়ে লিখে আমি পড়ালেখা চালিয়ে যাই। কারণ মায়ের ইচ্ছা পূরণ করতে আমাকে চিকিৎসক হতে হবে। এ জন্য পড়ালেখার কোনো বিকল্প নেই।’

Tag :
জনপ্রিয়

৩ এপ্রিল ছুটি ঘোষণা করে প্রজ্ঞাপন জারি

অদম্য জান্নাতুল কনুই দিয়ে লিখে পেল সাফল্য

প্রকাশিত : ০৭:০৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ১ জুন ২০২০

ছোটবেলায় মা–বাবার বিচ্ছেদ হয়। মায়ের সঙ্গে আশ্রয় মেলে খালার বাসায়। তবে প্রতিকূলতা তার পিছু ছাড়েনি তখনো। মাত্র দুবছরের মধ্যে বিদ্যুতের তারে জড়িয়ে দুই হাতের কনুই পর্যন্ত হারাতে হয় তাকে। তবে যে অদম্য, তাকে কি কেউ দমিয়ে রাখতে পারে!

মায়ের স্বপ্ন পূরণের আকাঙ্ক্ষায় হাত হারিয়েও ঘুরে দাঁড়ায় জান্নাতুল ফেরদৌস নামের ছোট্ট মেয়েটি। প্রতিকূলতার বিরুদ্ধে কতটা লড়াই সে করতে পারে, তা দেখিয়ে দিয়েছে এবারের এসএসসি পরীক্ষায়। কনুই দিয়ে লিখেই সে জিপিএ ৪.৭২ পেয়ে পাস করেছে।

গতকাল রোববার প্রকাশিত হয়েছে এসএসসি পরীক্ষার ফল। জান্নাতুল ফেরদৌস এবার আশুলিয়ার ডেন্ডাবর মতিউর রহমান উচ্চবিদ্যালয় থেকে জিপিএ ৪.৭২ পেয়ে পাস করেছে।
®মা নিলুফা বেগমের সঙ্গে জান্নাতুল ডেন্ডাবরে তার খালার বাড়ি থেকে পড়ালেখা করে। ২০১২ সালে বাবা জাহঙ্গীর আলমের সঙ্গে মায়ের বিবাহবিচ্ছেদ হলে মা তাকে নিয়ে খালার বাড়ি আশ্রয় নেন। তখন সে তৃতীয় শ্রেণিতে পড়ত।
®মেয়ের সাফল্যে আবেগাপ্লুত মা নিলুফা বেগম বলেন, ২০১৪ সালে তাঁর মেয়ে জান্নাতুল দুর্ঘটনার শিকার হয়। তখন সে পঞ্চম শেণিতে পা রেখেছিল। ওই বছর ১৫ জানুয়ারি গৃহশিক্ষকের বাসায় পড়তে গিয়ে এক ফাঁকে বান্ধবীদের সঙ্গে ছাদে যায়। হঠাৎ ছাদের ওপর দিয়ে যাওয়া বিদ্যুতের তারে জড়িয়ে গুরুতর আহত হয় সে। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে‌ ভর্তি করা হয়। সেখানে ২ মাস ১৮ দিন চিকিৎসার পর জান্নাতুল সুস্থ হয়। তবে পচন ধরায় এর আগেই তার দুই হাতের কনুই পর্যন্ত কেটে ফেলতে হয়।
®মা বলেন, মেয়ের দুই হাত কাটা পড়লেও সে পড়ালেখা চালিয়ে যেতে চায়। পড়ালেখার প্রতি আগ্রহ থেকে সে দুই হাতের কনুই দিয়ে লেখার অভ্যাস করে। এভাবে লিখেই সে এবার এসএসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছে। তাঁর আশা, মেয়ে পড়ালেখা করে চিকিৎসক হবে।

জান্নাতুল বলে, ‘আমার মায়ের ইচ্ছা আমি বড় হয়ে চিকিৎসক হব। বাবা আমাদের ছেড়ে চলে যাওয়ার পরও মা আশা ছাড়েননি। যদিও আমার হাত কাটা যাওয়ায় তিনি বড় একটা ধাক্কা খান। তাই কনুই দিয়ে লিখে আমি পড়ালেখা চালিয়ে যাই। কারণ মায়ের ইচ্ছা পূরণ করতে আমাকে চিকিৎসক হতে হবে। এ জন্য পড়ালেখার কোনো বিকল্প নেই।’