ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বাংলাদেশ গ্যাস ফিল্ডস কোম্পানি লিমিটেডের (বিজিএফসিএল) প্রধান ফটক তালাবদ্ধ রেখে শ্রমিক-কর্মচারী ইউনিয়নের (সিবিএ) সদস্যরা ঈদ উৎসবের ভাতা বাতিলের প্রতিবাদে বিক্ষোভ ও সমাবেশ করে দুই ঘণ্টা কর্মবিরতি পালন করেন। আজ বৃহস্পতিবার সকাল আটটা থেকে ১০টা পর্যন্ত জেলা সদরের বিরাসারে বাংলাদেশ গ্যাস ফিল্ডস কোম্পানি লিমিটেডের প্রধান কার্যালয়ের সামনে তাঁরা এই বিক্ষোভ ও সমাবেশ করেন।
আজ সকাল আটটার দিকে কুমিল্লা-সিলেট মহাসড়কের বিরাসার এলাকায় বাংলাদেশ গ্যাস ফিল্ডস কোম্পানি লিমিটেডের প্রধান কার্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে সিবিএর দুই শতাধিক শ্রমিক জড়ো হন। বাংলাদেশ গ্যাস ফিল্ডস কোম্পানি লিমিটেডের সিবিএর সভাপতি শাহ আলম ও সাধারণ সম্পাদক মোর্শেদুল আলমের নেতৃত্বে শ্রমিকেরা বিক্ষোভ শুরু করেন। এ সময় সংগঠনের জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি আবদুল গফুর, সহসাধারণ সম্পাদক আবু আফজাল, সাংগঠনিক সম্পাদক রুহুল আমীন, অর্থ সম্পাদক কাজী ফেরদৌস, সাবেক সহসাধারণ সম্পাদক কাজী হামিদসহ বিক্ষোভ ও সমাবেশে দুই শতাধিক শ্রমিক উপস্থিত ছিলেন। পরে তাঁরা প্রধান ফটক খুলে কার্যালয়ের ভেতরে ঢুকে বোনাসের দাবিতে বিক্ষোভ করেন। সকাল সাড়ে ৮টার দিকে পুলিশ ও সোয়া ৯টার দিকে সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ সেলিম উদ্দিন শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলেন। এ সময় ওসি সেলিম উদ্দিন বাংলাদেশ গ্যাস ফিল্ডস কোম্পানি লিমিটেডের মহাব্যবস্থাপক (প্রশাসন) এ টি এম শাহ আলমের সঙ্গে মুঠোফোনে বিষয়টি নিয়ে কথা বলেন।
বাংলাদেশ গ্যাস ফিল্ডস সিবিএর সভাপতি শাহ আলম ও সাধারণ সম্পাদক মোর্শেদুল আলম প্রথম আলোকে বলেন, ‘কোম্পানি কর্তৃপক্ষ আমাদের সঙ্গে আলোচনা না করেই দীর্ঘ ৩৫ বছর ধরে পেয়ে আসা ঈদের ভাতার আংশিক বাতিল করেছে। এটা কর্তৃপক্ষ কোনোভাবেই পারে না। করোনার কারণে আদালতের ভার্চ্যুয়াল কার্যক্রম ছাড়া অন্য সব কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। তা না হলে আমরা আদালতে মামলা দায়ের করতাম।’ তাঁরা বলেন, ২০০৬ সালের শ্রম আইনের ২৯২ ধারা মোতাবেক কোনো ব্যক্তি এই চুক্তি নিষ্পত্তি বা ভঙ্গ করলে এক বছরের কারাদণ্ড অথবা ১০ হাজার টাকা জরিমানা বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবেন। একই আইনের ২৯৩ ধারায় চুক্তি ভঙ্গ করলে দুই বছরের কারাদণ্ড অথবা ১০ হাজার টাকা জরিমানা বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবেন। আর ৩০৭ ধারা মোতাবেক পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা করার বিধান রয়েছে। তাঁরা বলেন, ‘ঈদ উৎসবের একটি ভাতা বাতিলের সিদ্ধান্ত আগামী চার দিনের মধ্যে পরিবর্তন না করলে আমরা পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করব।’
এ ব্যাপারে বিজিএফসিএলের মহাব্যবস্থাপক (প্রশাসন) এ টি এম শাহ আলম প্রথম আলোকে বলেন, ২০১৫ সালের সংসদীয় একটি স্থায়ী কমিটির সভায় পেট্রোবাংলার অধীনে থাকা সব কোম্পানির কর্মচারীদের ভাতা প্রদানের বিষয়টি এক ছাতার নিচে আনার সিদ্ধান্ত হয়েছে। শ্রমিকদের আজকের বিক্ষোভ ও তাঁদের দাবির বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানানো হয়েছে।
সদর থানার ওসি সেলিম উদ্দিন বলেন, ‘বাংলাদেশ গ্যাস ফিল্ডস কোম্পানির শ্রমিকেরা প্রধান কার্যালয়ের ভেতরেই ঈদ উৎসবের ভাতা বাতিলের প্রতিবাদে বিক্ষোভ করেছেন। আমরা তাঁদের দাবি শুনেছি। বিষয়টি তাঁদের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। তাঁরা বিষয়টি ইতিমধ্যে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সচিব ও অতিরিক্ত সচিবকে জানিয়েছেন। বিষয়টি তাঁরা কোম্পানির অন্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার সঙ্গে আলোচনা করবেন বলে জানিয়েছেন।’