ঢাকা , সোমবার, ০৫ মে ২০২৫, ২২ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম :
৩ এপ্রিল ছুটি ঘোষণা করে প্রজ্ঞাপন জারি বাংলাদেশ সাবমেরিন কেব্‌ল কোম্পানির সব ধরনের ইন্টারনেটের দাম কমছে ১০ শতাংশ। রমজানে মাধ্যমিক স্কুল খোলা থাকবে ১৫ দিন, প্রাথমিক স্কুল ১০ দিন খালেদা জিয়াকে হাসপাতালে নেওয়া হচ্ছে টেকনাফ সীমান্তের হোয়াইক্যং এলাকা দিয়ে আজ অস্ত্র নিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে মিয়ানমারের সেনা সাদ সাহেব রুজু করার পর দেওবন্দের মাসআলা খতম হয়ে গেছে : মাওলানা আরশাদ মাদানী চলছে বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্বের দ্বিতীয় দিনের বয়ান পুলিশ সদস্যসহ বিশ্ব ইজতেমায় ৭ জনের মৃত্যু বর্তমান সরকারের সঙ্গে সব দেশ কাজ করতে চায়: পররাষ্ট্রমন্ত্রী জয়পুরহাটে স্কুলছাত্র হত্যায় ১১ জনের মৃত্যুদণ্ড

করোনা হাসপাতাল থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে মানুষ

  • নিউজ ডেস্ক
  • প্রকাশিত : ০১:৩৫ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২১ জুলাই ২০২০
  • ৭৮৭ পঠিত

রাজধানীর কুড়িল এলাকায় ২ হাজার ১৩ শয্যার কোভিড হাসপাতাল চালু হয়েছে মে মাসে। হাসপাতালটি বসুন্ধরা গ্রুপের আন্তর্জাতিক সম্মেলনকেন্দ্রে। মৃদু ও মাঝারি উপসর্গে থাকা করোনা রোগীদের জন্য এই হাসপাতাল তৈরি করেছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। দেশের সবচেয়ে বড় এই করোনা হাসপাতালে রোগী নেই বললেই চলে। 

গত রোববার দুপুরে ওই হাসপাতালে গিয়ে জানা যায়, রোগী ভর্তি মাত্র ১৭ জন। ১ হাজার ৯৯৬টি শয্যা খালি। অর্থাৎ, ৯৯ শতাংশ শয্যা খালি। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর এখানে ১৮১ জন চিকিৎসক, ৯৩ জন নার্স এবং ‘পর্যাপ্তসংখ্যক’ ওয়ার্ডবয়, আয়া ও পরিচ্ছন্নতাকর্মী নিয়োগ দিয়েছে। 

গতকাল সোমবারও ওই হাসপাতালে ১৭ জন রোগী ভর্তি ছিল। তবে শহীদ তাজউদ্দীন মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল বিচ্ছিন্ন কোনো এলাকায় নয়। এটি গাজীপুর শহরের মধ্যেই। এই হাসপাতালে ১০০ শয্যা নির্ধারিত শুধু করোনা রোগী চিকিৎসার জন্য। হাসপাতালের পরিচালক মো. খলিলুর রহমান প্রথম আলোকে জানান, গতকাল এই হাসপাতালে করোনা রোগী ছিল মাত্র ১ জন।

শয্যা খালি থাকার এই চিত্র প্রায় সব নির্ধারিত করোনা হাসপাতালের। গতকাল চট্টগ্রাম রেলওয়ে হাসপাতলে রোগী ভর্তি ছিল ২ জন। হাসপাতালটি ১০০ শয্যার।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল ঢাকা, চট্টগ্রাম মহানগরসহ আট বিভাগের নির্ধারত হাসপাতালের শয্যাসংখ্যা এবং গতকাল ভর্তি থাকা রোগীর বিষয়ে পরিসংখ্যান দিয়েছে। তাতে বলা হচ্ছে, সারা দেশে সাধারণ শয্যা ও আইসিইউ শয্যা যথাক্রমে ১৫ হাজার ৪৬৮টি ও ৫৩৫টি। এতে গতকাল রোগী ভর্তি ছিল যথাক্রমে ৪ হাজার ৩৯৯ ও ২৮৩ জন। সাধারণ শয্যা খালি ছিল ৭২ শতাংশ। আইসিইউ শয্যা খালি ছিল ৫১ শতাংশ।

সবচেয়ে বেশি শয্যা খালি রাজশাহী বিভাগে এবং কম শয্যা খালি বরিশাল বিভাগে। এই দুই বিভাগে শয্যা খালির হার যথাক্রমে ৮৯ ও ৩৮ শতাংশ।

কেন শয্যা খালি

করোনা হাসপাতালের ওপর একেবারেই কোনো আস্থা নেই বলে মানুষ হাসপাতালে যাচ্ছে না বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক সভাপতি অধ্যাপক রশীদ-ই-মাহবুব। তিনি বলেন, হাসপাতালের শয্যা খালি থাকছে। এটা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও হাসপাতাল ব্যবস্থাপনার ওপর মানুষের ব্যাপক অনাস্থার বহিঃপ্রকাশ।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সঠিক পদক্ষেপ না নেওয়াতে কিছু ভুল বার্তা সাধারণ মানুষের কাছে গেছে বলে মনে করেন জনস্বাস্থ্যবিদেরা। প্রথম দিকে এই অভিযোগ ওঠে যে হাসপাতালের সেবাদানকারীরা রোগীর কাছে যান না, মুমূর্ষু অবস্থাতেও শয্যার পাশে কেউ থাকেন না, আসেন না। হাসপাতাল ভর্তি হওয়া মানেই প্রিয়জন থেকে দূরে চলে যাওয়া এবং আপনজনের সান্নিধ্য ছাড়াই মারা যাওয়া। এসব বিষয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে কখনো কিছু বলা হয়নি।

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের করোনাবিষয়ক জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক মোহাম্মদ সহিদুল্লা বলেন, হাসপাতালের ব্যবস্থাপনার ত্রুটির কারণে অনেকে ভেবেছেন হাসপাতালে ভর্তি হতে পারবেন না। অনেকে ভাবছেন ভর্তি হতে গেলে বিড়ম্বনায় পড়তে হবে।

এ ছাড়া স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে বারবার বলা হয়েছে, সবার হাসপাতালে যাওয়ার দরকার নেই। হাসপাতালের অব্যবস্থাপনা, হাসপাতালভীতি, হাসপাতালের ভিড় কমানোর সরকারি প্রচেষ্টা—এসবের কারণে মানুষ হাসপাতালে যেতে চাচ্ছে না। এসবের পাশাপাশি আছে জেকেজি ও রিজেন্টের করোনা পরীক্ষার দুর্নীতি। সঙ্গে যুক্ত হয়েছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের দ্বন্দ্ব–রেষারেষি।

একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের পদস্থ কর্মকর্তা বাড়িতে থেকেই চিকিৎসা নিচ্ছেন। তিনি ডায়াবেটিসসহ একাধিক দীর্ঘস্থায়ী রোগে ভুগছেন। তিনি মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, ‘শ্বাসকষ্ট দেখা দিলে হাসপাতালে যাব, তার আগে না।’

তবে রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) পরামর্শক মুশতাক হোসেন বলেন, শুরুর দিকে মৃদু উপসর্গের রোগীও ভর্তি করা হতো। এখন রোগীরা সচেতন, তারা আসছে না।

ঝুঁকি বাড়ছে

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাকে উদ্ধৃত করে বলেছে, সবার হাসপাতালে গিয়ে চিকিৎসা করার দরকার নেই। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, মৃদু ও মাঝারি উপসর্গ থাকে ৮০ শতাংশ রোগীর। এদের হাসপাতালে না গেলেও চলবে। ১৫ শতাংশের উপসর্গ থাকে তীব্র, এদের হাসপাতালে থেকে চিকিৎসার প্রয়োজন। বাকি ৫ শতাংশের জটিল পরিস্থিতি থাকে, তাদেরও হাসপাতালে থেকে চিকিৎসা নেওয়া প্রয়োজন।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের গতকালের হিসাব অনুযায়ী, দেশে এখন করোনা রোগী ৯১ হাজার ২২৭ জন। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার হিসাব অনুযায়ী, এদের ২০ শতাংশ, অর্থাৎ ১৮ হাজার ২৪৫ জনের হাসপাতালে ভর্তি থেকে চিকিৎসা নেওয়ার কথা। নিচ্ছে মাত্র ৪ হাজার ৩৯৯ জন। ১৩ হাজার ৭৮৬ জন ঝুঁকি নিয়ে হাসপাতালের বাইরে আছে।

এ বিষয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের করোনাবিষয়ক জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক মোহাম্মদ সহিদুল্লা বলেন, এসব রোগী ঝুঁকিতে আছে। এদের একটি অংশ খুব খারাপ অবস্থায় হাসপাতালে আসছে, যাদের মধ্যে মৃত্যুহার বেশি।

তবে বাড়িতেও অনেকে হাসপাতালের মতো করে চিকিৎসা নিচ্ছে। অনেকে বাড়িতে অক্সিজেন সরবরাহের ব্যবস্থা করেছে। বড় বড় হাসপাতাল ও বড় চিকিৎসকদের ব্যবস্থাপত্র এখন সামাজিক যোগাযোগ–মাধ্যমে পাওয়া যাচ্ছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পাবলিক হেলথ অ্যাডভাইজারি কমিটির সদস্য আবু জামিল ফয়সাল বলেন, হাতুড়ে ডাক্তাররাও এখন বড় চিকিৎসকদের ব্যবস্থাপত্রের অনুকরণে ব্যবস্থাপত্র দিচ্ছেন। তাতে ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াজনিত ঝুঁকি বাড়লেও হয়তো করোনা থেকে রোগী ভালো হয়ে উঠছে।

Tag :
জনপ্রিয়

৩ এপ্রিল ছুটি ঘোষণা করে প্রজ্ঞাপন জারি

করোনা হাসপাতাল থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে মানুষ

প্রকাশিত : ০১:৩৫ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২১ জুলাই ২০২০

রাজধানীর কুড়িল এলাকায় ২ হাজার ১৩ শয্যার কোভিড হাসপাতাল চালু হয়েছে মে মাসে। হাসপাতালটি বসুন্ধরা গ্রুপের আন্তর্জাতিক সম্মেলনকেন্দ্রে। মৃদু ও মাঝারি উপসর্গে থাকা করোনা রোগীদের জন্য এই হাসপাতাল তৈরি করেছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। দেশের সবচেয়ে বড় এই করোনা হাসপাতালে রোগী নেই বললেই চলে। 

গত রোববার দুপুরে ওই হাসপাতালে গিয়ে জানা যায়, রোগী ভর্তি মাত্র ১৭ জন। ১ হাজার ৯৯৬টি শয্যা খালি। অর্থাৎ, ৯৯ শতাংশ শয্যা খালি। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর এখানে ১৮১ জন চিকিৎসক, ৯৩ জন নার্স এবং ‘পর্যাপ্তসংখ্যক’ ওয়ার্ডবয়, আয়া ও পরিচ্ছন্নতাকর্মী নিয়োগ দিয়েছে। 

গতকাল সোমবারও ওই হাসপাতালে ১৭ জন রোগী ভর্তি ছিল। তবে শহীদ তাজউদ্দীন মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল বিচ্ছিন্ন কোনো এলাকায় নয়। এটি গাজীপুর শহরের মধ্যেই। এই হাসপাতালে ১০০ শয্যা নির্ধারিত শুধু করোনা রোগী চিকিৎসার জন্য। হাসপাতালের পরিচালক মো. খলিলুর রহমান প্রথম আলোকে জানান, গতকাল এই হাসপাতালে করোনা রোগী ছিল মাত্র ১ জন।

শয্যা খালি থাকার এই চিত্র প্রায় সব নির্ধারিত করোনা হাসপাতালের। গতকাল চট্টগ্রাম রেলওয়ে হাসপাতলে রোগী ভর্তি ছিল ২ জন। হাসপাতালটি ১০০ শয্যার।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল ঢাকা, চট্টগ্রাম মহানগরসহ আট বিভাগের নির্ধারত হাসপাতালের শয্যাসংখ্যা এবং গতকাল ভর্তি থাকা রোগীর বিষয়ে পরিসংখ্যান দিয়েছে। তাতে বলা হচ্ছে, সারা দেশে সাধারণ শয্যা ও আইসিইউ শয্যা যথাক্রমে ১৫ হাজার ৪৬৮টি ও ৫৩৫টি। এতে গতকাল রোগী ভর্তি ছিল যথাক্রমে ৪ হাজার ৩৯৯ ও ২৮৩ জন। সাধারণ শয্যা খালি ছিল ৭২ শতাংশ। আইসিইউ শয্যা খালি ছিল ৫১ শতাংশ।

সবচেয়ে বেশি শয্যা খালি রাজশাহী বিভাগে এবং কম শয্যা খালি বরিশাল বিভাগে। এই দুই বিভাগে শয্যা খালির হার যথাক্রমে ৮৯ ও ৩৮ শতাংশ।

কেন শয্যা খালি

করোনা হাসপাতালের ওপর একেবারেই কোনো আস্থা নেই বলে মানুষ হাসপাতালে যাচ্ছে না বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক সভাপতি অধ্যাপক রশীদ-ই-মাহবুব। তিনি বলেন, হাসপাতালের শয্যা খালি থাকছে। এটা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও হাসপাতাল ব্যবস্থাপনার ওপর মানুষের ব্যাপক অনাস্থার বহিঃপ্রকাশ।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সঠিক পদক্ষেপ না নেওয়াতে কিছু ভুল বার্তা সাধারণ মানুষের কাছে গেছে বলে মনে করেন জনস্বাস্থ্যবিদেরা। প্রথম দিকে এই অভিযোগ ওঠে যে হাসপাতালের সেবাদানকারীরা রোগীর কাছে যান না, মুমূর্ষু অবস্থাতেও শয্যার পাশে কেউ থাকেন না, আসেন না। হাসপাতাল ভর্তি হওয়া মানেই প্রিয়জন থেকে দূরে চলে যাওয়া এবং আপনজনের সান্নিধ্য ছাড়াই মারা যাওয়া। এসব বিষয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে কখনো কিছু বলা হয়নি।

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের করোনাবিষয়ক জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক মোহাম্মদ সহিদুল্লা বলেন, হাসপাতালের ব্যবস্থাপনার ত্রুটির কারণে অনেকে ভেবেছেন হাসপাতালে ভর্তি হতে পারবেন না। অনেকে ভাবছেন ভর্তি হতে গেলে বিড়ম্বনায় পড়তে হবে।

এ ছাড়া স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে বারবার বলা হয়েছে, সবার হাসপাতালে যাওয়ার দরকার নেই। হাসপাতালের অব্যবস্থাপনা, হাসপাতালভীতি, হাসপাতালের ভিড় কমানোর সরকারি প্রচেষ্টা—এসবের কারণে মানুষ হাসপাতালে যেতে চাচ্ছে না। এসবের পাশাপাশি আছে জেকেজি ও রিজেন্টের করোনা পরীক্ষার দুর্নীতি। সঙ্গে যুক্ত হয়েছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের দ্বন্দ্ব–রেষারেষি।

একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের পদস্থ কর্মকর্তা বাড়িতে থেকেই চিকিৎসা নিচ্ছেন। তিনি ডায়াবেটিসসহ একাধিক দীর্ঘস্থায়ী রোগে ভুগছেন। তিনি মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, ‘শ্বাসকষ্ট দেখা দিলে হাসপাতালে যাব, তার আগে না।’

তবে রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) পরামর্শক মুশতাক হোসেন বলেন, শুরুর দিকে মৃদু উপসর্গের রোগীও ভর্তি করা হতো। এখন রোগীরা সচেতন, তারা আসছে না।

ঝুঁকি বাড়ছে

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাকে উদ্ধৃত করে বলেছে, সবার হাসপাতালে গিয়ে চিকিৎসা করার দরকার নেই। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, মৃদু ও মাঝারি উপসর্গ থাকে ৮০ শতাংশ রোগীর। এদের হাসপাতালে না গেলেও চলবে। ১৫ শতাংশের উপসর্গ থাকে তীব্র, এদের হাসপাতালে থেকে চিকিৎসার প্রয়োজন। বাকি ৫ শতাংশের জটিল পরিস্থিতি থাকে, তাদেরও হাসপাতালে থেকে চিকিৎসা নেওয়া প্রয়োজন।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের গতকালের হিসাব অনুযায়ী, দেশে এখন করোনা রোগী ৯১ হাজার ২২৭ জন। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার হিসাব অনুযায়ী, এদের ২০ শতাংশ, অর্থাৎ ১৮ হাজার ২৪৫ জনের হাসপাতালে ভর্তি থেকে চিকিৎসা নেওয়ার কথা। নিচ্ছে মাত্র ৪ হাজার ৩৯৯ জন। ১৩ হাজার ৭৮৬ জন ঝুঁকি নিয়ে হাসপাতালের বাইরে আছে।

এ বিষয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের করোনাবিষয়ক জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক মোহাম্মদ সহিদুল্লা বলেন, এসব রোগী ঝুঁকিতে আছে। এদের একটি অংশ খুব খারাপ অবস্থায় হাসপাতালে আসছে, যাদের মধ্যে মৃত্যুহার বেশি।

তবে বাড়িতেও অনেকে হাসপাতালের মতো করে চিকিৎসা নিচ্ছে। অনেকে বাড়িতে অক্সিজেন সরবরাহের ব্যবস্থা করেছে। বড় বড় হাসপাতাল ও বড় চিকিৎসকদের ব্যবস্থাপত্র এখন সামাজিক যোগাযোগ–মাধ্যমে পাওয়া যাচ্ছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পাবলিক হেলথ অ্যাডভাইজারি কমিটির সদস্য আবু জামিল ফয়সাল বলেন, হাতুড়ে ডাক্তাররাও এখন বড় চিকিৎসকদের ব্যবস্থাপত্রের অনুকরণে ব্যবস্থাপত্র দিচ্ছেন। তাতে ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াজনিত ঝুঁকি বাড়লেও হয়তো করোনা থেকে রোগী ভালো হয়ে উঠছে।